জেলার বিভিন্ন এলাকায় থাকা প্রাইমারি স্কুলের আশেপাশে ৫ থেকে ১০ বছর বয়সী প্রাইমারি স্কুলের পড়ুয়াদের খোঁজ করছেন শিক্ষকরা। কারণ এই পড়ুয়াদের নিয়েই আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে পাড়ায় শিক্ষালয় কর্মসূচি।
আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে গোটা রাজ্য জুড়ে শুরু হচ্ছে 'পাড়ায় শিক্ষালয়' কর্মসূচি। তার আগে ডিপিএসসির চেয়ারম্যানের নির্দেশে রবিবার থেকে বালুরঘাটে (Balurghat) বাড়ি বাড়ি সার্ভের (Survey) প্রক্রিয়া শুরু করলেন স্কুলের শিক্ষকরা (School Teachers)। জেলার বিভিন্ন এলাকায় থাকা প্রাইমারি স্কুলের (Primary School) আশেপাশে ৫ থেকে ১০ বছর বয়সী প্রাইমারি স্কুলের পড়ুয়াদের খোঁজ করছেন শিক্ষকরা। কারণ এই পড়ুয়াদের নিয়েই আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে পাড়ায় শিক্ষালয় কর্মসূচি।
পাশাপাশি পাড়ায় শিক্ষালয় সম্পর্কে পড়ুয়াদের অভিভাবকদের অবগতি করছেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সেই সার্ভের রিপোর্ট দেওয়া হবে। এরপরেও জেলায় কোন এলাকায় কতগুলি পাড়ায় শিক্ষালয় গড়ে তোলা হবে, তা নির্ধারিত করা হবে। প্রসঙ্গত, দীর্ঘ প্রায় ২ বছর ধরে স্কুল রাজ্যে প্রাথমিক স্কুল বন্ধ রয়েছে। হাইস্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর কিছুদিনের জন্য খুললেও তাও আবার বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে কোভিড পরিস্থিতি বাড়তে থাকায় প্রাথমিক স্কুল খোলার ব্যাপারে আর আগ্রহ দেখায়নি সরকার। যার ফলে শহরের বিভিন্ন স্কুল গুলিতে অনলাইনে ক্লাস চললেও গ্রামের প্রত্যন্ত স্কুলগুলিতে অনলাইনের পরিকাঠামো না থাকায় সেখানকার পড়ুয়াদের পড়াশোনা কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। এছাড়াও অনেক শিশু পড়ুয়া রয়েছে। যারা প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পরেও অনেকেই দু'বছর ধরে স্কুলমুখী হয়নি। স্কুলে না যাওয়ার ফলে অনেকের অভ্যেস কার্যত নষ্ট হয়ে পড়েছে। তাই রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তর থেকে এই পাড়ায় শিক্ষালয় চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
কোভিড পরিস্থিতিতে স্কুলের পাশেপাশে বিভিন্ন পাড়া এলাকায় ফাঁকা স্থানে কোভিড বিধি মেনে পঠনপাঠন হবে। আরও জানা গেছে, পাড়ায় শিক্ষালয় চালুর জন্য আগে স্কুলের শিক্ষকদের দ্বারা এই সার্ভে করা হচ্ছে। একটি এলাকায় বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়া রয়েছে। সেই স্কুলের শিশুদের একটি নির্দিষ্ট স্থানে এনে পাঠদান দেওয়া হবে। যার ফলে এই সার্ভে শুরু হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। এই সার্ভের মাধ্যমে পাড়ায় পাড়ায় স্কুলছুট পড়ুয়া রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে শিক্ষকরা।
এই সার্ভের নানা তথ্যের রিপোর্ট স্কুল শিক্ষা দপ্তরে জমা দেওয়া হবে। পাশাপাশি স্কুল শিক্ষা দপ্তরের তরফে যে এলাকায় পাড়ায় শিক্ষালয় বসবে, সেখানকার উপযুক্ত পরিবেশে কতজন পড়ুয়াকে রাখা হবে, তা দেখা হচ্ছে। এই সার্ভের মাধ্যমে শিশুদের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের মধ্যে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
এবিষয়ে বালুরঘাট প্রাইমারি হাইস্কুলের এক শিক্ষক ব্রজ গোপাল মহন্ত বলেন, প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের নতুন করে স্কুলমুখী হওয়ার অভ্যেস করতে এই পাড়ায় শিক্ষালয় চালু করা হচ্ছে। আমরা স্কুলের আশেপাশে বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি খোঁজ খবর করছি। পড়ুয়া ও স্কুলের অভিভাবকদের মধ্যে এই বিষয়ে খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি, এই উদ্যোগ সফল হবে।
এই বিষয়ে দেবযানী সরকার নামে এক অভিভাবক বলেন, আমার ছেলে প্রায় এক বছর স্কুলে ভর্তি হওয়ার পরে আর স্কুলে যায়নি। দীর্ঘদিন স্কুলে না যাওয়ার ফলে পড়াশোনার অভ্যেসও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনলাইনেও পড়াশোনা ও গৃহশিক্ষক দিয়ে সেভাবে পড়াশোনা হচ্ছে না।