করোনা ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড নিয়ে গবেষণা, জাতীয় পুরস্কার পাচ্ছেন সুন্দরবনের ছেলে

করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে অভাবনীয় সাফল্যের গবেষণা। জাতীয় পুরস্কার পাচ্ছেন ঘরের ছেলে শুভাশিস নাটুয়া

Parna Sengupta | Published : Aug 20, 2021 6:16 AM IST

আগামী ১০ ও ১১ সেপ্টেম্বর কোয়েম্বাটুরে আয়োজিত 'ইন্টারন্যাশনাল সাইন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড অন ইঞ্জিনিয়ারিং, সাইন্স অ্যান্ড মেডিসিন'-র স্বীকৃতি প্রদান অনুষ্ঠান। সেখানেই করোনা ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড (Covishield) নিয়ে গবেষণার (research on corona vaccine) স্বীকৃতি হিসেবে ভারত সরকারের (Government of India) কাছ থেকে পুরস্কার পাচ্ছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের প্রত্যন্ত গ্রাম কৃষ্ণচন্দ্রপুরের যুবক শুভাশিস নাটুয়া(Scientist)। মথুরাপুরের দরিদ্র পরিবারে জন্ম শুভাশিস নাটুয়ার। বাবা ব্রজেন্দ্র নাথ নাটুয়া কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত। মা নিতান্তই গৃহিণী। ব্রজেন বাবুর দুই ছেলে দেবাশীষ ও শুভাশিস। 

ছোট থেকেই অভাবের সংসারে বড় হয়েছে শুভাশিস। এমনকি সংসার চালাতে, একসময় তাকে সব্জি বিক্রিও করতে হয়েছে। ছোট থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী ছিলেন মথুরাপুরের এই যুবক। স্বপ্ন দেখতেন বিজ্ঞানী হওয়ার। কিন্তু, সংসারের আর্থিক অনটন অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। তখনই কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি ও সহ শিক্ষকরা সবরকম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন স্কুলের এই দুস্থ মেধাবী ছাত্রের দিকে। স্কুলের তরফ থেকেই বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়। 

২০১২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ রিসার্চ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে ভর্তি হন শুভাশিস। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি দরিদ্র কৃষক পরিবারের ছেলে শুভাশিসকে। একের পর এক গবেষণা করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। ক্যানসারের কোষ নিয়েও গবেষণা করছেন এই যুবক। করোনা অতিমারিতে যখন গোটা বিশ্ব জেরবার, তখন ভ্যাকসিন তৈরিতে এগিয়ে আসেন বাংলার ছেলে শুভাশিস নাটুয়া। 

করোনা ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড যখন তৈরি হচ্ছিল, তখন গবেষণার জন্য ডাকা হয় শুভাশিসকেও। সেখানেই 'কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন ডায়াগনস্টিক ডেভলপমেন্টে'-র কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বাংলার এই গবেষক। করোনার প্রথম ঢেউয়ে যখন ভারত তথা গোটা বিশ্ব জেরবার, সেই সময় মধ্য ভারতের অন্যতম গবেষণা কেন্দ্র IISER ভোপাল থেকে একটি ১৫ জনের বিজ্ঞানী দল গঠন করা হয়। একজন RNA বিশেষজ্ঞ হিসেবে ওই দলে কাজের সুযোগ পান শুভাশিস। 

করোনা ভাইরাসের বিভিন্ন স্ট্রেনের জেনেরিক গঠন ও বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংক্রমণের হারের পার্থক্য নিয়ে গবেষণা করেন তিনি। সেই কাজের জন্য এ বার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে স্বীকৃতি পাচ্ছেন মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র শুভাশিস নাটুয়া।

 বর্তমানে আমেরিকায় রয়েছেন শুভাশিস। সেখানেই চলছে তাঁর গবেষণা। তবে এই স্বীকৃতি পাওয়ায় তার পরিবারের পাশাপাশি খুশি শুভাশিসের স্কুলও। শুভাশিস একাধিকবার বিদেশে গিয়েছেন গবেষণার জন্য। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও গবেষণার কাজ করেছেন। গবেষণার কাজেই বর্তমানে তিনি আমেরিকায় রয়েছেন। ঘরের ছেলে শুভাশিস নাটুয়া ভারত সরকারের এই সম্মান পাওয়ায় খুশি মথুরাপুরবাসিরাও।

Share this article
click me!