মুর্শিদাবাদে গঙ্গায় ভয়াবহ ভাঙন, নদী গর্ভে তলিয়ে গেল বাড়ি-বাগান-চাষের জমি

চরম আতঙ্কে বহু মানুষ গ্রাম ছেড়ে আশ্রয় নিতে শুরু করেন দূর দূরান্তে আত্মীয়ের বাড়িতে। অনেকে নদীর পাশেই তাঁবু খাটিয়ে থাকতে শুরু করেছেন। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতির মধ্যে কোথায় যাবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না।

Asianet News Bangla | Published : Oct 3, 2021 3:03 PM IST

একদিকে যখন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা (TMC Worker) মুর্শিদাবাদে (Murshidabad) জোড়া আসন জয়ের পর সবুজ আবিরে মেতে উঠেছিলেন, ঠিক তখনই ভিন্ন ছবি দেখা গেল মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের (Samserganj) একাধিক এলাকায়। রবিবার সকাল থেকে জল বাড়তে থাকায় বেলা বাড়তেই মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় গঙ্গার পাড়ে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। তলিয়ে যায় একের পর এক কাঁচা বাড়ি, ফলের বাগান ও চাষের জমি। এমনই, ভয়াবহ ছবি ধরা পড়েছে জেলায়। 

চরম আতঙ্কে বহু মানুষ গ্রাম ছেড়ে আশ্রয় নিতে শুরু করেন দূর দূরান্তে আত্মীয়ের বাড়িতে। অনেকে নদীর পাশেই তাঁবু খাটিয়ে থাকতে শুরু করেছেন। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতির মধ্যে কোথায় যাবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না। ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ করার দাবি জানানো সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। এনিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 

আরও পড়ুন- ভবানীপুরে রেকর্ড ভোটে জিতেছেন মমতা, প্রিয়াঙ্কার হারের পরও এই ফলাফল নিয়ে কেন আপ্লুত সুকান্ত

স্থানীয় বাসিন্দা ডালিম মণ্ডল, মাসতুরা বিবি বলেন, "দিনের পর দিন আমরা আতঙ্কে রয়েছি। আজ ভোর থেকেই ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়ে গিয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের কারও দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। জানি না শেষ পর্যন্ত কপালে কি লেখা রয়েছে।" স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শায়রা বিবি বলেন, "ভাঙনের বিষয়টি আমি ইতিমধ্যে সেচ দফতর ও মহকুমা শাসককে জানিয়েছি। গঙ্গার জলস্তর কমতেই প্রায় কোনও না কোনও এলাকায় ভাঙন অব্যাহত। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নজরে রাখা হয়েছে।" 

আরও পড়ুন- 'আমি স্বার্থপর নই' ভবানীপুরে জয়ের পর কেন একথা বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

এ দিনের ভাঙনে গঙ্গার গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে বেশ কয়েক বিঘা চাষের জমি। প্রায় ৫০টি লিচু গাছ তলিয়ে গিয়েছে। এবার গঙ্গা জনবসতির দিকে থাবা বসাচ্ছে। আর মাত্র কয়েক হাত দূরেই বেশ কয়েকটি পাকা বাড়ি রয়েছে। কার্যত বেশ কয়েকটি বাড়ি খাদের কিনারায় ঝুলছে। কয়েকদিনের মধ্যেই বাড়িগুলি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। সেলিনা বিবি বলেন, "গঙ্গা তো আমার সব খেয়ে নিল। তিন বিঘা চাষের জমি, দু’বিঘা বাগান তলিয়ে গিয়েছে। এখন তো গঙ্গা আমার ঘরেই চলে এসেছে। কয়েক হাত পরই আমার পাকা বাড়ি। এই শেষ আশ্রয়টুকুও চলে গেলে কোথায় যাব জানি না।" 

আরও পড়ুন- ২০১১-সালের রেকর্ড ভাঙলেন মমতা, তৃতীয়বার ভবানীপুর জয় 'ঘরের মেয়ে'-র

প্রসঙ্গত, নিমতিতার ধানঘরা, শিবপুর, হিরানন্দপুর ও ধুসরিপাড়ায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিচ্ছে। রাজ্য সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের জমি ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে। কিন্তু, চলতি বছরে বর্ষার শুরু থেকে লালপুর, ধুলিয়ান সহ একাধিক নতুন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। কিন্তু, এখনও ক্ষতিপূরণের কোনও ব্যবস্থা করেনি বলেই অভিযোগ।

Share this article
click me!