ছন্দপতন! ইন্দো-বাংলা সীমান্ত মুর্শিদাবাদের 'উন্নয়নের রূপকার' আব্দুর রউফ খানের মৃত্যু

  • একের পর এক উন্নয়নমূলক কাজ
  • জনমানসে জনপ্রিয় ছিলেন আব্দুর রোউফ খান
  • শুক্রবার সকালে প্রয়াত খান সাহেব
  • বয়সজনিত কারণে ভুগছিলেন তিনি

Parna Sengupta | Published : Jul 2, 2021 11:16 AM IST

ভারত বাংলা সীমান্তর মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষ ছিলেন তিনি। শুক্রের সকালে সেই মুর্শিদাবাদের 'উন্নয়নের রূপকার' বলে পরিচিত আব্দুর রোউফ খানের প্রয়াণ হল। জেলার মানুষ যাকে এ আর খান নামেই চিনতেন । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর । বয়স জনিত করনে তিনি বেশ কিছু দিন থেকে অসুস্থ হয়েছিলেন। দিন কয়েক আগে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । অবশেষে শুক্রবার সকালে বহরমপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। 

তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই জেলা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে । মুর্শিদাবাদের মতিঝিল রোডে তাঁর নিজের বাড়িতে মৃতদেহ জাতীয় পতাকায় ঢেকে শায়িত করে রাখা হলে জেলার বিভিন্ন সংগঠন, রাজনৈতিক মহল ও প্রশাসনিক কর্তারা উপস্থিত হয়ে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। দেশের সামরিক বাহিনীতে যোগ দিয়ে কর্ম জীবনের শুরু করেন খান সাহেব । পরবর্তীতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কে চাকরি করেন। এরই মাঝে জেলার সার্বিক উন্নয়নে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন তিনি। 

উন্নয়নের প্রশ্নে তিনি ছুটে বেড়িয়েছেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে । মূলত সড়ক পথ, রেল পথ এবং শিক্ষা নিয়ে তিনি লাগাতার আন্দোলন করেন। মুর্শিদাবাদ রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশা্নের সম্পাদক হয়ে পূর্ব রেলের কৃষ্ণনগর লালগোলার মাঝে ডাবল লাইন, বৈদ্যুতিকরন তাঁরই অবদান। এই আন্দোলন করতে গিয়ে বহু মামলায় তাঁকে জড়াতে হয়েছে, কারাবরণও করেছেন। তবুও তাঁর দক্ষতার প্রশংসা করে পূর্ব রেলের শিয়ালদা ডিভিশন তাঁকে ইউজার কন্স্যুলেটিভ কমিটির সদস্য নির্বাচিত করে।

তাঁর আন্দোলনের ফলেই জেলাবাসী লাভ করেন ভাগীরথীর উপর নশিপুর – আজিমগঞ্জ রেল ব্রিজ । জীবদ্দশায় তিনি আর দেখতে পেলেন না ওই ব্রিজ দিয়ে ট্রেন ছুটছে। মৃত্যুর কদিন আগেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই ব্যাপারে সক্রিয় হওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন তিনি। আবার মুর্শিদাবাদ শিক্ষা প্রসার কমিটি গঠন করে প্রামাণ্য দলিল দেখিয়ে বাম সরকারকে লালবাগ শহরে কলেজ স্থাপনে বাধ্য করেন তিনি। 

এদিকে নগর উন্নয়ন কমিটি গড়ে ঐতিহাসিক নবাব নগরীর পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটতে উদ্যোগী হন অরাজনৈতিক ওই ব্যক্তিটি। জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছেও আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন ভাগীরথীর বুকে আমানিগঞ্জ – খোশবাগ রোড ব্রিজ গড়ে তোলার জন্য। তিনি সরকারকে বোঝাতে চেষ্টা করছিলেন ওই ব্রিজ হলে মুর্শিদাবাদ শহরের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ দ্রুত করা যাবে, আবার নবগ্রাম সেনা ছাউনি থেকে ইন্দো - বাংলা সীমান্ত সুরক্ষায় বড় ভূমিকা পালন করবে ওই ব্রিজ ।

Share this article
click me!