'পাত্রের বয়স আশি ছুঁইছুঁই, আর পাত্রী সত্তোরের কাছাকাছি। দীর্ঘ পঞ্চান্ন বছর পর আবারও চার হাত এক হল এই বৃদ্ধ দম্পতির। অবাক হচ্ছেন, কিন্তু এমনই ঘটনার স্বাক্ষী থাকলাম আমরা' জানাল রায়গঞ্জবাসী। শনিবার রাতে বেশ ধুমধামে পুনর্বিবাহ সম্পন্ন হল রায়গঞ্জের 'রায়' দম্পতির।
বছর পঞ্চান্ন আগে বাংলা সনের নিরিখে ১৬ই মাঘ আত্রেয়ী নদীর পাড়ে অধুনা বাংলাদেশের গ্রামে বিয়ে হয়েছিল রিলিপ কুমার রায়ের সাথে গৌরি রায়ের। এরপর কেটে গেছে বহু বছর। বর্তমানে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহরের মিলনপাড়ায় ছেলে মেয়ে নাতি নাতনিদের নিয়ে ভরা সংসার রিলিপা বাবু ও গৌরি দেবীর। এখন দুজনের জীবনের প্রায় অন্তিম লগ্নে এসে শনিবার দাদু-ঠাকুমার বিয়ের ৫৬ তম বর্ষে এই বিশেষ দিনটিতে দু'জন বৃদ্ধ দম্পতিদের বধুঁ ও বরবেশে সাজিয়ে তাদের আবারও ঘটা করে বিয়ে দিয়ে বিবাহ বার্ষিকী পালন করলেন তার নাতি নাতনি, ছেলে বৌমারা। সুসজ্জিত ছাদনাতলায় পুরোহিতের মন্ত্রচ্চারনে শুভদৃষ্টি, সাতপাক, মালাবদল এমনকি যজ্ঞাহুতি ও সিঁদুর দান সবটাই হল ধাপে ধাপে। শুধু ধুমধাম করে বিয়ে দেওয়াই নয় শনিবার রাতে খাওয়া দায়ওয়ায় সামান্য ব্যবস্থা করলেও, রীতিমত রবিবার আত্মীয় স্বজনদের ডেকে নৈশভোজেরও আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজক নাতি নাতনিরা।
পাশাপাশি পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এই বিশেষ দিনে এই বিশেষ উপহার পেয়ে আনন্দিত রায় দম্পতি। তাদের কথায়,'নাতি নাতনিরা সবাই আনন্দ করছে, ওদের আনন্দই আমাদের আনন্দ।' তবে আধুনিকতা আর যন্ত্রচালিত বর্তমান যুগে কিছু কিছু ক্ষেত্রে যখন আন্তরিকতার অভাব দেখা যায় বা ব্যস্ততার কারনে বৃদ্ধ বাবা মা যখন ব্রাত্য হয়ে পড়েন অনেকের কাছে, ঠিক সে সময় রায় পরিবারের এই উদ্দ্যোগকে সমাজে আলাদা বার্তা বহন করবে বলে জানিয়েছেন সমাজের অন্যান্য শ্রেনীর মানুষও। এদিন সেখানে উপস্থিত পুরোহিত শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, 'এটা আমার প্রথম অভিজ্ঞতা। আর বাবা মাকে যারা অবহেলা করে তাদের শিক্ষার জন্য এই বিয়ের অনুষ্ঠান বার্তাবহ হয়ে থাকবে।'