ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা নিয়ে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে কিংবা শুক্রবার সম্ভবত সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারে রাজ্য সরকার।
রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে জোর ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। ভোট পরবর্তী খুন ও ধর্ষণের মতো গুরুতর ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের তুলে দিল কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। ৬ সপ্তাহের মধ্যেই সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভাঙচুর করা, আগুন লাগানো, মারধর করা, ঘরছাড়া করার মতো অপেক্ষাকৃত কম অশান্তির ঘটনায় সিট গঠন করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সিটকেও ৬ সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল, বিচারপতি হরিশ টন্ডন, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়, বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের বৃহত্তর বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেছে। সূত্রের খবর, হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্চ জানিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে তৃণমূল।
হাইকোর্টের রায়ে খুশি নয় তৃণমূল। আর সেই কারণে রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা নিয়ে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে কিংবা শুক্রবার সম্ভবত সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারে রাজ্য সরকার। হাইকোর্ট রায় দেওয়ার পরই রাজ্য সরকারের স্ট্যাডিং কাউন্সিল সদস্যদের একটি বৈঠক হয়। সেখানেই ঠিক হয় হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে জরুরি ভিত্তিতে আবেদন করবে তারা।
এদিকে এই রায় ঘোষণার পরই টুইটারে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ লেখেন, "হাইকোর্টের নির্দেশ নিয়ে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করা যায় না। ওঁরা নির্দেশ দিয়েছেন। সরকার এবং দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এই নির্দেশ খতিয়ে দেখে প্রতিক্রিয়া জানাবেন। সম্ভাব্য আইনি দিকগুলি বিবেচিত হবে। আমরা মনে করি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে হাইকোর্ট নিয়ে এখন কোনও মন্তব্য করছি না।"
আরও পড়ুন- 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যর্থ', কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলল বিজেপি
আরও পড়ুন- 'এটা খুশির বিষয় নয়, অধিকার', হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানালেন দিলীপ-শুভেন্দুরা
প্রসঙ্গত, হাইকোর্টে ভোট পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছিল। শুনানি চলাকালীন ওই মামলার তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠিত কমিটি। যদিও তার পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে বলে সরব হয় তৃণমূল। এদিকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা মামলার তদন্তভার গ্রহণে প্রস্তুত বলে হাইকোর্টে জানিয়েছিল কেন্দ্র। যদিও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তৈরি করা কমিটির রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি-র আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। তিনি বলেছিলেন, "আমরা এই কমিটির কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে প্রশ্ন তুলছি। বোঝাই যাচ্ছে এরা পক্ষপাতদুষ্ট। যদি একজন সদস্যের বিরুদ্ধেও অভিযোগ ওঠে, তাহলেই এই রিপোর্ট খারিজ করে দেওয়া উচিত।" তবে দীর্ঘ সওয়াল জবাবের পর অবশেষে সিবিআইয়ের হাতে গুরুতর ঘটনার তদন্তভার তুলে দিল হাইকোর্ট।