আশিষ মণ্ডল, বীরভূম: নতুন করে বিতর্ক মাথাচাড়া দেবে না তো শান্তিনিকেতনে? হাইকোর্ট নিযুক্ত কমিটি নির্দেশ মেনে এবার পুলিশি নিরাপত্তা পৌষমেলা মাঠ পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ফেলার কাজ শুরু করল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। ফের আন্দোলনে নামার ডাক দিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এমনকী, পঠনপাঠন শুরু হলে পথে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারাও।
আরও পড়ুন: 'প্রভাবশালী নেতাদের খুনের ছক', শান্তিনিকেতনে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ গ্রেফতার চার বাংলাদেশি
ঘটনাটি ঠিক কী? অসামাজিক কাজ ও মোটরবাইকের দাপাদাপি রুখতে পৌষমেলা মাঠ পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ঘটনা হল, ১৫ অগাস্ট থেকে যখন পাঁচিল তৈরির কাজ শুরু হয়, তখন থেকে উত্তেজনা পারদ চড়ছিল এলাকায়। প্রাক্তন বা বর্তমান পড়ুয়ারাই শুধু নয়, বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাসে পাঁচিল তৈরির বিরোধিতা করেন প্রবীণ আশ্রমিক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও।
১৭ অগাস্ট একটি প্রতিবাদ মিছিল বেরিয়েছিল বোলপুরে শহরে। দলীয় কোনও পতাকা ছিল না, তবে মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক নরেশ বাউড়ি, শাসকদলেরই এক বিদায়ী কাউন্সিলর। সেই মিছিল থেকে বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসে ঢুকে পৌষমেলার মাঠে তাণ্ডব চালান বহিরাগতরা। ভেঙে ফেলা হয় বাঁশ ও কাপড়ে অস্থায়ী ছাউনি, মেলার মাঠের প্রধান গেট। এমনকী. বিক্ষোভকারীরা নির্মাণ সামগ্রী ও সিমেন্ট লুঠ করেন বলে অভিযোগ। ঘটনার শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যে। সিবিআই তদন্তের দাবিতে জনস্বার্থে মামলা দায়ের করা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। পরবর্তীকালে আবার হাইকোর্টই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করে এবং চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেয় প্রধান বিচারপতি টিবিএন রাধাকৃষ্ণণ ও বিচারপতি শম্পা সরকারের ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুন:গ্রামে মদের দোকান-বাড়ছে মাতালের দৌরাত্ম্য, প্রতিবাদে ভাঙচুর-উত্তেজনা
সেপ্টেম্বর মাসে তিন দফায় পাঁচিলকাণ্ডের তদন্তে বিশ্বভারতীতে যান হাইকোর্ট নিযুক্ত কমিটির সদস্যরা। বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, আশ্রমিক ও ব্য়বসায়ীদের সঙ্গে। শেষপর্যন্ত পৌষমেলা মাঠে নির্মীয়মাণ যে পাঁচিল ভেঙে ফেলা হয়েছে, সেটি ফের নির্মাণ করার নির্দেশ দেয় আদালত নিযুক্ত কমিটি। নিরাপত্তার ভার বর্তায় পুলিশে উপর। সেই মতো ফের মেলার মাঠের পাঁচিল তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেল। এদিকে নিজেদের আগের অবস্থানেই এখনও অনড় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তাঁদের বক্তব্য, 'আমরা প্রথম থেকে প্রাচীরের বিরোধিতা করে আসছিলাম। এমনকী, বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলাম। বুঝতে পেরেছিলাম আদালতের গঠন করা কমিটি বিশ্বভারতীর পক্ষে।'