শীতেই প্রকট জলকষ্ট, গ্রীষ্মের কথা ভেবেই আতঙ্কে পুরুলিয়া

  • শীতকালেও জলকষ্ট পুরুলিয়ার বিভিন্ন গ্রামে
  • পানীয় জল আনতে কয়েক কিলোমিটার হাঁটছেন মহিলারা
  • মুখ্য়মন্ত্রীর নির্দেশের পরেও বদলায়নি পরিস্থিতি
     

Asianet News Bangla | Published : Jan 27, 2020 11:55 AM IST / Updated: Feb 07 2020, 03:38 PM IST

বুদ্ধদেব পাত্র, সংবাদদাতা- গ্রীষ্মে পুরুলিয়া জেলা জুড়ে জলকষ্ট নতুন কোনও বিষয় নয়। এবার অবশ্য শীতকালেই পানীয় জলের সরবরাহ নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পুরুলিয়াবাসীর একাংশের কপালে। জেলায় জুড়ে কনকনে ঠান্ডার মধ্যেই জলকষ্ট দেখা দিয়েছে পুরুলিয়ার বিভিন্ন গ্রামে। 

পুরুলিয়া ২ ব্লকের ঘোঙ্গা গ্রামে বেশ কয়েকদিন থেকেই তীব্র জলকস্ট শুরু হয়েছে। শীত শেষ হওয়ার আগেই যদি গ্রামে জল কষ্ট শুরু হয়ে যায়, তাহলে তীব্র দাবদাহে পুরুলিয়া জেলায় পানীয় জলের যে হাহাকার কোন পর্যায়ে পৌঁছবে তাই নিয়েই আতঙ্কে স্থানীয় বাসিন্দারা। বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই পুরুলিয়ার পানীয় জলের সমস্যা সমাধানের জন্য জাপানি ঋণদানকারী সংস্থা 'জাইকা' রাজ্য সরকারের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করে চললেও এখনও পানীয় জলের সমস্যার নিরসন করতে ব্যর্থ।

পুরুলিয়া শহর থেকে দশ কিলোমিটার দূরের ঘোঙ্গা গ্রামের ছবিটা দেখলেই পানীয় জল নিয়ে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হবে। শীত কালেই দু' আড়াই কিলোমিটার পথ হেঁটে পানীয় জল আনতে যাচ্ছেন গ্রামের মহিলারা।  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যত বারই পুরুলিয়ায় এসে প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন, জেলার পানীয় জল সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গত ২৯ সে  ডিসেম্বর পুরুলিয়ার বেলগুমা পুলিশ লাইনের সভাকক্ষে মুখ্যমন্ত্রী রুদ্ধদ্বার বৈঠকে জেলার বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি  জেলার পানীয় জল সমস্যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন ।

আরও পড়ুন- জল সঙ্কটকে জবাব, ওয়াটার পিউরিফায়ার 'শুদ্ধম' তৈরি করে তাক লাগালেন চাষির ছেলে

 ভৌগোলিকভাবে পাথর মাটির এই জেলায় আজও জল সবচেয়ে অমূল্য সম্পদ। বর্ষাকাল বাদে প্রায় সারা বছর জলের সমস্যা থাকে। গ্রীষ্মে তা প্রকট হয়। খানিকটা ব্যতিক্রম হলেও শীতের শেষ হতে না হতেই পানীয় জলের  আকাল দেখা দিয়েছে ঘোঙ্গা গ্রামে। সকাল হতেই বহু দূর থেকে মহিলারা দল বেঁধে কলসি মাথায় নিয়ে জল আনতে বেরিয়ে পড়ছেন। অন্যান্য কাজ ভুলে দিনের আলো ফুটতেই আগে পর্যাপ্ত জল এনে রাখার জন্য তোড়জোড় শুরু করতে হয় বাড়ির মহিলাদের। 


 জলের সমস্যা হবেই না বা কেন। অকেজো কয়েকটি নলকূপ শুধুমাত্র প্রতীকী হয়ে রয়ে গিয়েছে গ্রামে। গ্রামের ছোট ছোট ডোবার জলে নিত্য কাজ সারতে বাধ্য হন মহিলারা। গ্রামের এই এলাকাটি যেন সৎ মায়ের সন্তান। প্রশাসনের নজরে পড়ে না। আবার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামাতে চাননা বলে ক্ষোভ উগরে দেন গ্রামবাসীরা।
 
 ঘোঙ্গা গ্রামের পানীয় জলের সমস্যার বিষয়টি নিয়ে খবর পেয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিষয়ক দফতরের মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো। দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য তৎপর হয়েছেন তিনি। তবে মন্ত্রী মশাইয়ের এই তৎপরতা আদৌ ফলপ্রসূ হবে কি না, সেটাই দেখতে চান এলাকার বাসিন্দারা। 
 

Share this article
click me!