গ্রাম বাংলার বাউল শিল্পী আজ টোটোচালক, করোনায় থাবায় সুর হারিয়ে আজ বেচছেন পুঁতির মালা

পেটের দায়ে একসময়ের মানুষের প্রিয় বাউল শিল্পী এখন টোটোতে দশকর্মার পসরা সাজিয়ে নিয়ে গ্রামে গঞ্জে বিকিকিনি করে কোনরকমে পরিবার নিয়ে দিন গুজরান করতে বাধ্য হচ্ছেন। করোনার থাবা সমাজকে আজ কতখানি পালটে দিয়েছে, তা দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রখ্যাত বাউল শিল্পী লক্ষ্মণ দাসকে দেখলে বুঝে নিতে অসুবিধে হয় না। 

করোনার দাপটে জীবন থেকে হারিয়েছে 'সুর', বাউলশিল্পীরা এখন ব্যবসায়ি! এক সময় তাঁর বাউল গান শোনার জন্য পাগল ছিলেন মানুষ। করোনার দাপট বদলে দিয়েছে সব কিছুই। পেটের দায়ে একসময়ের মানুষের প্রিয় বাউল শিল্পী এখন টোটোতে দশকর্মার পসরা সাজিয়ে নিয়ে গ্রামে গঞ্জে বিকিকিনি করে কোনরকমে পরিবার নিয়ে দিন গুজরান করতে বাধ্য হচ্ছেন। করোনার থাবা সমাজকে আজ কতখানি পালটে দিয়েছে, তা দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রখ্যাত বাউল শিল্পী লক্ষ্মণ দাসকে দেখলে বুঝে নিতে অসুবিধে হয় না।


হিলির বাসুদেবপুর এলাকার বাসিন্দা লক্ষ্মণ মালো। বয়সের ভারে আজ কর্মক্ষমতা কমে গিয়েছে অনেকটাই। বাউল সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে ব্যাপক খ্যাতি রয়েছে তাঁর। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বাউল সঙ্গীতের অনুষ্ঠান করেছেন। বেতারেও একাধিক সঙ্গীত সম্প্রচারিত হয়েছে তাঁর। অনেক গানের রেকর্ডের অ্যালবামও প্রকাশিত হয়েছিল একসময়। বাউলের দীক্ষা নিয়ে লক্ষ্মণ মালো থেকে নাম হয়েছিল লক্ষ্মণ দাস। শিল্পের সঙ্গে খ্যাতি বাড়তেই লক্ষ্মণ দাস বাউল বলে সকলের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন। তাঁর গান সবার কাছেই অত্যন্ত প্রিয় হয়ে উঠেছিল। আর তিনিও নিজে গান ছাডা় আর কিছুই ভাবতে পারতেন না। সব সময় থাকতেন গান নিয়েই। গানই ছিল তাঁর কাছে মুক্তির পথ। তবে করোনার জেরে বদলে গেল সব কিছুই।

Latest Videos

একসময় পুজো আসার  আগেই বেজে উঠত বাজনা। গলা ছেড়ে শুরু হত রেওয়াজ। আর সেই সঙ্গে একের পর এক বায়না শুরু হত শিল্পীদের। তাঁদের অনুষ্ঠান ঘিরে উষ্ণতা বাড়ে গ্রাম বাংলায়। বাউল শিল্পী থেকে লোক গানের দল, আলকাপ থেকে যাত্রাপালা। কিন্তু হায়! করোনার পরবর্তী পর্যায়ে এ সব এখন অতীত। আগে তাও সরকারি কিছু অনুষ্ঠান থেকে ডাক আসত,  কিন্তু গত দু’বছর ধরে সেসবও বন্ধ সরকারি নির্দেশে।  তাই ছয় জনের সংসারের পেট চালাতে সেই সময় থেকেই সংকটে পড়েন বাউল শিল্পী লক্ষ্মণ দাস । সংসার সামলাতে বাউল ছেড়ে উপার্জনের অন্য পথ বেছে নিতে হয়। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করেই উপার্জনের প্রচেষ্টা শুরু করেন। অগত্যা টোটোতে করে কাঠের মালা, নামাবলী সহ দশকর্মার সামগ্রী বিক্রি করতে শুরু করেন তিনি। আর এভাবেই এখন বাউলগান ছেড়ে ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছেন নামজাদা বাউল শিল্পী। তবুও আশা ছাড়েননি,  রাতে বাড়ি ফিরে হাতে তুলে নেন একতারা,  গুন গুন করে গেয়ে ওঠেন জীবনের সবচেয়ে ভালোবাসার বাউল গান।এই আশায় হয়তো একদিন কেটে যাবে দুর্দশার কালো মেঘ। আবার পুজোর দিনগুলোতে গ্রামেগঞ্জে বসবে বাউল গানের আসর। আর সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে গলা ছেড়ে গান গাইবেন, এই আশায় শুধু তিনি নন, প্রার্থনা করে দিন গুনছেন তাঁর স্ত্রী ও প্রত্যেক ছেলেমেয়ে।


আরও পড়ুন-
লক্ষ্মীর ভান্ডারের প্রচারে এবার বাউল গান, রাস্তায় ঘুরে গান গাইছেন বিনয়কৃষ্ণ মহন্ত
বিধান চন্দ্র রায়ের স্মরণে গানে মেতে উঠল নৌকা, যাত্রীদের মন ভরাল বাংলার বাউল শিল্পীরা
'আমরা রেশনের চাল খাই-শুধু ওনার জন্যই মিনিকেট এনেছিলাম', শাহ যেতেই অন্য রূপ বাসুদেব বাউলের

Share this article
click me!

Latest Videos

Mamata Banerjee: 'মোদী কিছু দেয় নি আমি ৫০ লক্ষ বাড়ি দিয়েছি' বিতর্কিত মন্তব্য মমতার
দেরিতে আসায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে কড়া ধমক MLA অসিত মজুমদারের, দেখুন ভিডিও
বাগদায় ফের চলল বুলডোজার! হাইকোর্টের নির্দেশে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল ৬টি দোকান | Bagdah News
Guyana-র সরস্বতী বিদ্যা নিকেতন স্কুলে Narendra Modi, কথা বললেন পড়ুয়াদের সঙ্গে
‘সবরমতি রিপোর্ট’ দেখলেন বিজেপির হেভিওয়েটরা! দেখুন কী বার্তা দিলেন সিনেমার ব্যপারে | Sabarmati Report