বগটুই গ্রামে অগ্নি সংযোগের ঘটনায় সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন প্রধান অভিযুক্ত লালন শেখের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুর তদন্ত চেয়ে একাধিক দাবি তুলল APDR সংগঠন।
বীরভূমের রামপুরহাট সিবিআই ক্যাম্প অফিসে সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন বগটুই কাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত লালন শেখের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। বন্দি অবস্থায় থাকাকালীনই তাঁকে মেরে ফেলা হয়েছে দাবি করেছে নিহত লালনের পরিবার। এই বিষয়ে সিবিআইয়ের কলকাতার অফিসে মেমোরান্ডাম জমা দিল গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি ( APDR)।
স্মারকলিপি জমা দেওয়ার আগে এই সমিতি কলকাতার এক্সাইড ক্রসিং থেকে নিজাম প্যালেসে সিবিআই অফিস পর্যন্ত একটি মিছিলের আয়োজন করে এবং সিবিআই অফিসের সামনে এক ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ দেখায়।
সিবিআই অফিসে পৌঁছতে বারবার কলকাতা পুলিশের বাধার সম্মুখীন হন এপিডিআর কর্মীরা। সিবিআই অফিসের গেটে পৌঁছে অবশেষে একটি স্মারকলিপি জমা দিতে সফল হন তাঁরা। এপিডিআর দাবি তুলেছে যে, সিবিআই কোনওভাবেই একটি নিরাপত্তা সংস্থা হিসেবে সরাসরি নাগরিকদের কাছ থেকে স্মারকলিপি গ্রহণ করতে পারে না। গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি আরও জানিয়েছে যে, আমাদের সমাবেশে কলকাতা পুলিশের বারবার বাধা দেওয়াও অত্যন্ত নিন্দনীয়।
জমা দেওয়া স্মারকলিপিতে তিনটি দাবি উত্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠন। এই দাবিগুলি হল,
১) সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে রামপুরহাট সিবিআই ক্যাম্প অফিসের ইনচার্জ এবং অন্যান্য পুলিশ ও সিবিআই কর্মীদের অবিলম্বে বরখাস্ত করা হোক।
২) মৃত্যুর কারণ এবং মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের পাশাপাশি লালন শেখের মৃত্যুর পিছনে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র - আত্মহত্যা বা হত্যার কারণ খুঁজে বের করতে কলকাতা হাইকোর্টের একজন বিচারকের তত্ত্বাবধানে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক।
৩) মামলাগুলির তদন্তের জন্য সিবিআই কর্মীদের যথাযথ এবং বৈজ্ঞানিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হোক।
২০২২ সালের ২১ মার্চ বীরভূমের বগটুই গ্রামে একের পর এক বাড়িতে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। বাড়ির ভেতরেই আটকা পড়ে পুড়ে মারা যান ৯ জন মানুষ। সেই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত লালন শেখ ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন। প্রায় ৯ মাস পর গত ৪ ডিসেম্বর লালনকে পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের পাকুড় গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তার পর ২ দফায় তাঁকে সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। এর পর সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন মৃত্যু হয় তাঁর। হেফাজতে থাকাকালীন তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছিল, এমনকি তাঁর জিভও টেনে ছিঁড়ে নেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন লালনের স্ত্রী। এই মৃত্যুর প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি জানায়, প্রতিটি ধরনের হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর প্রতিবাদ করে নিজেদের কাজ অব্যাহত রাখবে সংগঠন।
আরও পড়ুন-
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পাকা বাড়ির মালিকদের নাম কেন? নবান্ন থেকে জেলাশাসকদের কড়া হুঁশিয়ারি মুখ্যসচিবের
সারা ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে জাল আধার কার্ড, বিশেষ বিশেষ রাজ্য চিহ্নিত করে সমীক্ষার উদ্যোগ কেন্দ্র সরকারের