আবারও অনুপ্রবেশের চেষ্টা আটকে দিল BSF, উত্তপ্ত মালদার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত

Published : Jan 11, 2025, 04:35 PM IST
 Bangladesh Violence BSF tightens border measures to prevent Bangladeshi infiltration bsm

সংক্ষিপ্ত

গভীর রাতে মালদার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে একদল অনুপ্রবেশকারী এই দেশে ঢোকার চেষ্টা করে। যাতে গোটা পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছ সীমান্তরক্ষীদের দিকে তেড়ে যায় অনুপ্রবেশকারীরা। বাঁশ ও লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। 

আবারও উত্তপ্ত হল মালদার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা। এবার ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী বিএসএফ-কে লক্ষ্য করে গুলি চালান অভিযোগ উঠল বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে। যদিও হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে কাঁটাতারের এপারের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে।

শুক্রবার গভীর রাতে মালদার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে একদল অনুপ্রবেশকারী এই দেশে ঢোকার চেষ্টা করে। যাতে গোটা পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছ সীমান্তরক্ষীদের দিকে তেড়ে যায় অনুপ্রবেশকারীরা। বাঁশ ও লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। সীমান্তের ওপার থেকে গুলি ছোঁড়া হয় বলেও অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাল্টা বিএসএফ শূন্য গুলি ছোঁড়ে। বিএসএফ জানিয়েছে শুক্রবার রাতে মালদহের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে খুব ভিড় জমতে শুরু করে। প্রচুর মানুষ একেক জায়গায় জ়ড়ো হয়। সন্দেহ হয় বিএসএফ-এর। পাল্টা বিএসএফও প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু ঘটনাস্থলের দিকে দুই নিরাপত্তারক্ষী এগিয়ে যায়। তাতেই সমস্যা দেখা দেয়। সীমান্তের ওপার থেকে হামলা শুরু হয়। তখনই পাল্টা বিএসএফ শূন্যে গুলি ছোঁড়া। নিমেষে এলাকা ফাঁকা হয়ে যায়।

স্থানীয়দের অনুমান, পাচার কাজেই বাংলাদেশ থেকে কাঁটা তার পেরিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেছিল বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীরা। কিন্তু বিএসএফ-এর তৎপরতার কারণে তারা সুবিধে করতে পারেনি। মালদায় ভারত - বাংলাদেশ সীমান্তে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তেজনা দেখা দিচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন মালদার এই এলাকায় কাঁটাতার এখনও পুরোপুরি দেওয়া হয়নি। আর সেই কারণে এই এলাকাটি অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ও চোরাচালানকারীদের কাছে স্বর্গরাজ্য। এই এলাকা দিয়ে অবাধে ভারতে ঢোকা যায়। কিন্তু বিএসএফ এই এলাকায় তৎপর হওয়ায় তারা সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে।

সম্প্রতি বিএসএফ-কে সীমান্ত কাঁটাতার দিতে বাধা দিয়েছিল বাংলাদেশের নিরাপত্তা রক্ষী বিজিপি। তাতে পরিস্থিতি জটিয় হয়ে ওঠে। এখনও পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এই অবস্থায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সমস্যা মেটাতে বারবার আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু পরিস্থিতি শান্ত হলেও সমস্যার সুরাহা হয়নি।

অন্যদিকে মালদাতেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় ভারতীয়দের চাষের জমির ওপর নজর দিয়েছে বাংলাদেশীরা। ভারতীয় জমির চাষ তারা নষ্ট করে দিচ্ছে। জমির ফসল কেটে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি চাষের সরঞ্জামও নষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশীরা। স্থানীয় বাসিন্দারা আরও অভিযোগ করেছেন, কয়েক দিন ধরেই বিএসএফ আর বিজিবির মধ্যে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তার জন্যই চাষের কাজে যেতে নিষেধ করা হয়েছিল। কয়েক দিন তাঁরা কাজে যাননি। এদিন চাষের জমিতে গিয়ে দেখতে পান তাদের পাকা ফসল কেটে নিয়েছে বাংলাদেশীরা। এই অবস্থায় স্থানীয়রা রীতিমত হতাশ হয়ে পড়েন। তারা বিএসএফ-এর কাছেও অভিযোগ জানিয়েছেন।

শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থির। নির্যাতন করা হচ্ছে হিন্দুদের ওপর। বাংলাদেশে আইনের শাসন নেই বলেও অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশে বেড়েছে পাক-জঙ্গিদের আনাগোনা। সম্প্রতি অসম-সহ এই রাজ্য থেকেও জঙ্গিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অনুপ্রবেশের ঘটনাও ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে অনুপ্রবেশ আটকানো একটি চ্যালেঞ্জ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফ-এর কাছে। বর্তমানে সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বিএসএফ। টহল জোরদার করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সীমান্ত ঘিরে রাখা অত্যন্ত জরুরি। পশ্চিমবঙ্গ দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলির তুলনায় বাংলাদেশের সঙ্গে সবথেকে বেশি সীমান্ত ভাগ করে নেয়। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে ২২১৭ কিলোমিটার।

বাংলাদেশের সঙ্গে বর্তমানে ভারতের সম্পর্ক খুব একটা স্বাভাবিক নয়। বাংলাদেশে ভারত বিরোধী সুর চড়া হচ্ছে। হিন্দু বিরোধিতা আর ভারত বিরোধিতা প্রায় সমার্থক করে ফেলেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। অন্যদিকে শেখ হাসিনাকে এই দেশে আশ্রয় দিয়েছে ভারত। যা মেনে নিতে নারাজ বাংলাদেশ। একাধিকবার শেখ হিসানাকে ফেরতও চেয়েছে। তবে সোজাসুজি নয়। এবার বাংলাদেশের তদন্ত কমিশন হাসিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এই দেশে আসতে চায়। কিন্তু তার জন্য এখনও পর্যন্ত ভারতের কাছে কোনও রকম আবেদন বা নিবেদন জানায়নি। মুখে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার কথা বললেও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে খুব একটা আগ্রহী নয় তা তাদের কাজেই স্পষ্ট হচ্ছে। এদিনও যার প্রমাণ দিল বিজিবি। অন্যদিকে সম্প্রতি এই রাজ্যের মৎস্যজীবীদের বাংলাদেশ সরকার আটকে রেখেছিল জলসীমা অতিক্রম করার অভিযোগে। সম্প্রতি তাদের মুক্তিও দিয়েছে মহম্মদ ইউনুস সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৎস্যজীবীদের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বলেন, মৎস্যজীবীদের বাংলাদেশের কারাগারে রেখে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করা হয়েছে। মমতার এই অভিযোগ থেকেও স্পষ্ট বাংলাদেশে ক্রমশই চওড়া হচ্ছে ভারত বিরোধী সুর।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

 

PREV
click me!

Recommended Stories

"মমতা কিছুই করেননি, মোদীজি যা করেছেন তা ভালো": বন্দে মাতরম নিয়ে বঙ্কিমচন্দ্রের প্রপৌত্র
'যাত্রীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত এই ভোগান্তির জন্য', ইন্ডিগোর বিপর্যয়ে কেন্দ্রকে নিশানা মমতার