আরজি কর কাণ্ডের জেরে গোটা বাংলা দেখেছিল এক ধারাবাহিক নাগরিক আন্দোলন।
শুধু তাই নয়, এই আন্দোলন থেকেই শাসকদলের বিরুদ্ধে জোরালো স্লোগান উঠেছিল। আর ঠিক সেই আবহের মধ্যেই রাজ্যের ৬টি বিধানসভায় উপনির্বাচন ঘোষণা করে কমিশন।
যার ফলাফল সামনে এল ২৩ নভেম্বর। আর সেখানে দেখা গেল যে, নাগরিক আন্দোলনের কোনও প্রভাবই পড়ল না উপনির্বাচনের ফলাফলে। নৈহাটি এবং মেদিনীপুর, এই দুটিকে মোটামুটি শহরের আসনই বলা চলে। একটিতেও দাঁড়াতেই পারেননি বিরোধীরা। কার্যত, দাপট দেখিয়ে জয় তুলে নিয়েছে তৃণমূল।
সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, গত ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট এবং গত লোকসভায় বিধানসভাভিত্তিক যে ব্যবধান ছিল নৈহাটিতে, তাও একেবারে ছাপিয়ে গেছে শাসকদল।
মূলত, নাগরিক আন্দোলনের চালিকাশক্তি ছিল জুনিয়র ডাক্তারদের হাতেই। যদিও এদিন উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর, এই বিষয় নিয়ে জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের কেউ কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম একজন নেতার কথায়, “ভোটের ফল নিয়ে আমরা আদৌ কোনও কথা বলব কি না, তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছি।”
প্রসঙ্গত, নৈহাটিতে ২০২১ সালে তৃণমূল জেতে প্রায় ১৯ হাজার ভোটে। এরপর ২০২৪ সালের ব্যারাকপুর লোকসভার অন্তর্গত এই বিধানসভায় তৃণমূলের লিড কমে দাঁড়ায় ১৫ হাজার। উপনির্বাচনে সেই ব্যবধান প্রায় ৫০ হাজারে পৌঁছে গেছে।
অন্যদিকে, মেদিনীপুর আসনে গত ২০২১ সালে তৃণমূলের জুন মালিয়া জেতেন ২৪ হাজারেরও বেশি ভোটে। কিন্তু সেখানেই লোকসভা ভোটে তাঁর লিড কমে দাঁড়ায় দুহাজারের থেকে একটু বেশি। উপনির্বাচনে সেই ব্যবধান বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে প্রায় ৩৩ হাজার।
অনেকের মতে সংগঠনের পাশাপাশি অর্থনৈতিক একটি বাস্তুতন্ত্র তৈরি করে ফেলেছে তৃণমূল। এক প্রবীণ সিপিএম নেতার মতে, “সরকারি বিভিন্ন ভাতা ছাড়াও তৃণমূলের সঙ্গে থাকার সুবাদে প্রতিটি এলাকার বহু মানুষ পেট চালাচ্ছেন। তারা যে সবাই এই দুর্নীতিতে জড়িয়ে রয়েছেন তা কিন্তু নয়। তবে তাদের কাছে তৃণমূল আসলে রুটিরুজি। এই অংশই তৃণমূলকে বাড়তি সুবিধা করে দিচ্ছে।”
এই সামাজিক ভাতার যে প্রভাব প্রতিটি ভোটে পড়ছে, তা একাধারে মেনে নিয়েছেন বিজেপি নেতারাও।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।