Kali Puja 2023: ভয়ঙ্কর রূপের কালী ছিলেন উড়নচণ্ডী! তাঁকে বেঁধে রাখা হত লোহার শিকল দিয়ে

সন্ধে হলেই ঘুটঘুটে অন্ধকার, প্রাণঘাতী জীবজন্তুর আনাগোনা, জনমানবশূন্য ঘোর জঙ্গলের ভেতরে উড়নচণ্ডীর মতো ঘুরে বেড়াতেন মা কালী। এখনও মন্দিরের চারপাশে শোনা যায় ঘুঙুরের আওয়াজ।

Sahely Sen | Published : Nov 12, 2023 4:45 AM IST / Updated: Nov 12 2023, 11:50 AM IST

অন্ধকার ঘনালেই যেমন চারিদিকে জ্বলে উঠছে টুনি লাইটের মালা, ঘরে ঘরে আলোকিত হচ্ছে প্রদীপ, বাজি ফাটছে, ফুলঝুরি ঝরছে, চারিদিকে গান-বাজনা, আনন্দ, হাসি-ঠাট্টা, ঠিক তেমনটা কিন্তু ছিল না প্রাচীনকালের দুর্গাপুরের উখরা গ্রাম। এখানে সন্ধে হলেই ঘুটঘুটে অন্ধকার, প্রাণঘাতী জীবজন্তুর আনাগোনা, জনমানবশূন্য ঘোর জঙ্গলের ভেতরে উড়নচণ্ডীর মতো ঘুরে বেড়াতেন মা কালী। 

-
উখরা-র ভয়ঙ্করী কালী মা সম্পর্কে কথিত আছে যে, প্রাচীন কালে দেবীর তীব্র শক্তির প্রভাবে এখানে কোনও সাধারণ মানুষ বাস করতে পারতেন না। পশু পাখিদের জন্যেও নাকি এই এলাকাটি ছিল ব্যাপক ভয়ের জায়গা ছিল। সেই জন্যই হয়তো এই ভয়কে কেন্দ্র করে মায়ের নাম হয়েছে ‘ভয়ঙ্করী’। 
-

বর্তমানে উখরার বর্মণ পরিবার মন্দিরের সংরক্ষণ ও পূজাপাঠের নিয়ম পালন করে থাকেন। এই পরিবারের সদস্যরাই জানিয়েছেন যে, প্রাচীন কালে পূজাস্থলে ছিল একটি প্রকান্ড বোল গাছ, সেই গাছটিতে বাস করতেন স্বয়ং নাগ মহারাজ। মা কালীর তীব্র শক্তির দাপটে এই এলাকা ছিল একেবারে জনমানবশূন্য। পরবর্তীকালে প্রেমপুরী গোঁসাই নামের এক সাধু এই ভয়ঙ্করী মায়ের সাধনা করা শুরু করেন।



কিন্তু  দেবী ছিলেন চঞ্চলা। তিনি বার বার সাধুর সাধনাস্থল ত্যাগ করে চলে যেতেন। গোঁসাইয়ের সাধনায় বারবার ব্যাঘাত ঘটত। বেশ কয়েকবার ব্যর্থ হওয়ার কারণে, সাধু প্রেমপুরী গোঁসাই একবার ১০৮টি নরমুন্ড দিয়ে মায়ের আসন তৈরী করলেন। এই আসনটি এখনও বিদ্যমান। একই সঙ্গে তিনি পূজাস্থলের চারিদিকে প্রতিষ্ঠা করলেন একাধিক শিব মন্দির। যাতে মা, স্বয়ং মহাদেবকে, অর্থাৎ নিজের স্বামীকে উপেক্ষা করে পালিয়ে যেতে না পারেন। 

-
এই পুজো সম্পর্কে এমনও শোনা যায় যে, কালী এতটাই উড়নচণ্ডী ছিলেন যে, এক সময় তাঁকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। গোঁসাইয়ের সেই ভক্তির শিকলে বাঁধা পড়েই হয়তো দেবী আজ শান্ত হয়েছেন এবং ভক্তদের কাছে বছর বছর পূজিতা হচ্ছেন।

-
দেবী এখানে কৃপা করে বহু ভক্তদের বহু রূপে দেখা দিয়েছেন বলেও শোনা যায়। মন্দিরের পূজারী সন্ধেবেলা ধ্যানের সময় একলা মন্দিরে মায়ের উপস্থিতি অনুভব করেন। মা নাকি ঘোর আঁধারে লাল পাড় সাদা শাড়ি পরে মন্দিরের সামনে ঝাঁট দেন। বছরের বিভিন্ন তিথিতে নাকি শোনা যায় মায়ের পায়ের ঘুঙুরের আওয়াজ।

Read more Articles on
Share this article
click me!