Kali Puja: কৃষ্ণের সঙ্গে প্রেম করার সময়েই রাধা ধরা পড়ে গিয়েছিলেন স্বামী আয়ান ঘোষের কাছে! তারপর কীভাবে মা কালী হয়েছিলেন বৈষ্ণব?

Published : Nov 06, 2023, 11:47 AM IST
siddheshwari kali mandir green kali

সংক্ষিপ্ত

বলি নয়, মা কালী ভালোবাসেন বাঁশির সুর শুনতে। এই আশ্চর্য কালীপুজোর কাহিনীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রেমের লীলার গল্প। 

নিজেদের মধ্যে ঘন প্রেমালাপে মগ্ন ছিলেন ভগবান কৃষ্ণ এবং তাঁর প্রেমিকা রাধা। তাঁদের লীলাখেলা চলাকালীন খবর গিয়ে পৌঁছোয় রাধিকার স্বামী আয়ান ঘোষের কানে। রাধার স্বামী আয়ান ঘোষ সম্পর্কে ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের মামা। তিনি যখন এসে উপস্থিত হলেন, তখন দেখতে পেলেন, তাঁর স্ত্রী রাধিকার সামনে কৃষ্ণ নেই। রয়েছেন স্বয়ং মা কালী। রাধা তাঁরই পুজো করছেন! কীভাবে এমন হল?


প্রেমিকাকে স্বামী-ছলনার অপমান থেকে বাঁচাতে শ্রীকৃষ্ণ দেবী কালী-র রূপ ধারণ করেছিলেন, যা ‘কৃষ্ণ-কালী’ নামে পরিচিত হয়েছিল, এই কালীর গাত্রবর্ণ কালো নয়, নীলও নয়। এঁর গায়ের রং কচি কলাপাতার মতো সবুজ। রাধিকার এই বিশেষ কালী পুজোর কথা কিন্তু বেশিদিন চাপা থাকেনি। এই কথা গ্রামে গ্রামে রটে গিয়েছিল, আর রটে গিয়েছিল বলে এর নাম ‘রটন্তী’ কালী পুজো। পশ্চিমবঙ্গে এই কালীর পুজো করা হয় হুগলী জেলার অন্তর্গত হরিপাল থানার শ্রীপতিপুর পশ্চিম গ্রামে অবস্থিত প্রায় ৭০ বছর পুরনো সিদ্ধেশ্বরী কালী মাতার মন্দিরে।

-
হুগলী জেলার সুপ্রাচীন গ্রাম হরিপাল। এই অঞ্চলে একটি ছোট এলাকা হল শ্রীপতিপুর গ্রাম। এই গ্রামের অধিকারী পরিবারে দীর্ঘদিন যাবৎ পূজিতা হন মা ‘সবুজ-কালী’। এখানেই সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যাপার হল, মা কালীর গায়ের রঙ কচি কলাপাতার মতো সবুজ।


-
প্রায় ৭০ বছর আগে এই গ্রামেরই এক দরিদ্র গোঁড়া বৈষ্ণব পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন বটকৃষ্ণ অধিকারী। বৈষ্ণব সুলভ আচরণ ছোট থেকেই জন্ম সূত্রে পেয়েছিলেন তিনি। তৎকালীন ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় পাশ করার পর কিছু বছর ভিন রাজ্যে চাকরি করেছিলেন বটকৃষ্ণ অধিকারী। কিন্তু, চাকরি ছেড়ে গ্রামে ফিরে এসে আবার চাষবাস করতে শুরু করেন তিনি। এরপর একদিন আঙুরবালা দেবীর সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন। কিন্তু, সংসারে তাঁর মতি ছিল না। মাঠে ঘাটে শ্মশানে ঘুরে বেড়াতেন। এভাবেই কিছু বছর চলার পর, কোনও এক মাঠে তিনি যখন গরুর খোটা বাঁধছিলেন তখনই তাঁর পিছনে এসে উপস্থিত হন এক সাদা বস্ত্র পরিহিত সন্ন্যাসী। তিনি এসে বলেন, অমুক স্থানে অমুক সময়ে তোমার দীক্ষা হবে। এরপর কী ঘটেছিল, সেই কথা অজানা।

-
শ্মশানে সাধনা করতে করতে একদিন বটকৃষ্ণ অধিকারী সিদ্ধি লাভ করেন এবং তারপর স্বপ্নাদৃষ্ট হয়ে মা কালীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু, কুলীন বৈষ্ণব পরিবারে জন্ম হয়েছিল তাঁর! বাড়িতে কেউ তিলক সেবা রাধা গোবিন্দের নাম না-করে জল স্পর্শ করেন না, সেই বৈষ্ণব বাড়িতে কালী পুজো করা এক বজ্রাঘাতের মতো ব্যাপার। তৎকালীন সমাজের মাথারা কিছুতেই মেনে নিলেন না। সমস্ত বাধা অতিক্রম করে বাড়িতে কালীর ঘট স্থাপন করলেন বটকৃষ্ণ অধিকারী।


পরে আবারও তিনি স্বপ্নদৃষ্ট হন যে, ঘট নয়, এবার কালীর মূর্তি স্থাপন করতে হবে। কিন্তু এ কি! এ তো কালো বা নীল বর্ণ নয়! এ তো নব দুর্বার ওপর শ্যাম ও শ্যামা একসঙ্গে রয়েছেন! সেই থেকে কৃষ্ণ ও কালীর আদেশে বটকৃষ্ণ ঠাকুর রটন্তী কালীপুজোর তিথিতে প্রতিষ্ঠা করলেন এই সবুজ কালিমাতাকে। এখানে মা পরম বৈষ্ণব। তিনি বলি পেতে ভালোবাসেন না। মা-কে তাঁর ভক্তরা বাঁশির সুর শুনিয়ে মুগ্ধ করে রাখেন। প্রেম-লীলা থেকে পূর্ণতা পাওয়া দেবী বাংলার এক অনন্য কালীপুজো।



 

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

PREV
click me!

Recommended Stories

"মমতা কিছুই করেননি, মোদীজি যা করেছেন তা ভালো": বন্দে মাতরম নিয়ে বঙ্কিমচন্দ্রের প্রপৌত্র
'যাত্রীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত এই ভোগান্তির জন্য', ইন্ডিগোর বিপর্যয়ে কেন্দ্রকে নিশানা মমতার