বাংলার ঘরে ঘরে যে নাড়ু অতি উৎসাহে তৈরি হত মা-কাকিমাদের হাতের মুঠোর জাদুতে, কিংবা, করিতকর্মা বাবা-দাদাদের পারদর্শিতায়, সেই নাড়ু আজ কোথায়? কীভাবে তার পরিবর্তে কৌটো ভরে জমা হচ্ছে বাজার থেকে কেনা প্যাকেটে ভরা রেডিমেড নাড়ু?
লক্ষ্মী পুজো হোক, অথবা পৌষ পার্বণ, শীতকাল মানেই বাঙালির ঘরে ঘরে পায়েশ আর পিঠে-পুলি। নলেন গুড়ের রসগোল্লা, জয়নগরের মোয়ার সাথে সাথেই একটি অত্যন্ত সমাদৃত খাদ্যবস্তু হল নাড়ু। নারকেল হোক, বা তিলের, নাড়ু মানেই পাস্তা-পিৎজা ভুলে গোটা একটি থালা ভর্তি করে বসে যেতে পারে আম-বাঙালি।
-
কিন্তু, বাংলার ঘরে ঘরে যে নাড়ু অতি উৎসাহে তৈরি হত মা-কাকিমাদের হাতের মুঠোর জাদুতে, কিংবা, করিতকর্মা বাবা-দাদাদের পারদর্শিতায়, সেই নাড়ু আজ কোথায়? তার পরিবর্তে কৌটো ভরে জমা হচ্ছে বাজার থেকে কেনা প্যাকেটে ভরা রেডিমেড নাড়ু!
-
নৈহাটি, বর্ধমান সহ বাংলার বিভিন্ন জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম-বাংলায় এই নাড়ুই তৈরি হচ্ছে কোনও-না-কোনও মা-কাকিমাদের হাতে, প্রত্যেক বছরই দুর্গাপুজোর পর থেকে বেড়ে যাচ্ছে ব্যবসার রমরমা। শুধু যে নতুন প্রজন্মের ঘরণীরা প্যাকেটে ভরা নাড়ু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন, তা মোটেই নয়, পুরাতন প্রজন্মের অভিজ্ঞ পটীয়সীরাও প্যাকেটের নাড়ু কিনে নিয়ে গিয়ে বাড়িতে মুখ-মিষ্টি করাচ্ছেন। এই বিষয়ে গৃহিণীরা কে কী বলছেন?
-
বাজার থেকে কেনা এক নাড়ুর খরিদ্দারের কথায়, ‘বাড়িতে এত কাজের চাপ রয়েছে, তাই বসে বসে নারকেল গুড় মিশিয়ে নাড়ু তৈরি করে আর অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে চাইছিলাম না। প্যাকেটে ভরা নাড়ু কিনে নিলেই অনেকটা সময় বাঁচে। সেই জন্যেই কিনে নিয়ে গিয়ে খাওয়া হয়।’
-
অপর এক ক্রেতার মত একটু ভিন্ন। তিনি বললেন, ‘শুধু তিল আর নারকেল নিয়ে এলেই তো আর নাড়ু তৈরি হয়ে যায় না। তার সঙ্গে দরকার হয় চিনি কিংবা গুড়ও। এসবও জোগাড় করতে হয়। তারপর দরকার হয় গ্যাস। সহজে গ্যাসের যোগান দেওয়াও সম্ভব না, এখন গ্যাসের দামও বেড়ে গেছে। নাড়ুর গুড় পাক দিতে দিতেই মাসের অর্ধেক গ্যাস শেষ হয়ে যেতে পারে। বাকি সারামাস ডাল-ভাত রান্না করতেও ঘাম ছুটবে। এর থেকে বাজারের ‘রেডিমেড নাড়ু’ কিনে আনাই ভালো। খরচও বেশি হয় না, আবার মিষ্টিমুখ করাও হয়ে যায়।’
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।