ফিরহাদ বনাম মদন বাক্যবাণ, তৃণমূলের অন্দরের মতপার্থক্য শেষমেশ গিয়ে ঠেকল বিরিয়ানিতে

শাসকদলের বিভিন্ন ছোট ছোট গোষ্ঠীর মধ্যে যখন জেলায় জেলায় কোন্দল ঘটছে, তখন দুই ওজনদার নেতার মধ্যে এই সৌজন্যবোধ আদতে দলের নিচুতলার প্রতিই একটি নিদর্শন হয়ে রইল।

রাজ্যে বিরোধীদের হাতে অস্ত্র থাকা নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন কামারহাটির হেভিওয়েট তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তাঁর মন্তব্য নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়ে যথেষ্ট অস্বস্তি বাড়ে ঘাসফুল শিবিরে। ফলত, তাঁর মন্তব্য নিয়ে যথেষ্ট বিরূপ হতে দেখা যায় ঘাসফুল শিবিরেরই আরেক হেভিওয়েট নেতা তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। সেই বিবাদের রেশ পৌঁছে গেল একেবারে বিরিয়ানিতে।

সম্প্রতি শাসক দলের ২ নেতার মধ্যে একটি মতপার্থক্য হয়। সেই বিরোধবশত একজন অন্যজনকে অসমর্থন জানিয়ে মন্তব্য করেন। দুই তাবড় নেতার মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েনে তৃণমূলের ওপর মহলে বেশ ডামাডোল তৈরি হয়। কিন্তু, গোষ্ঠী কোন্দলের মধ্যে না গিয়ে এই অসমর্থন অবশেষে পৌঁছে গেল হৃদ্যতায়। বন্ধুত্ব দিয়েই ববি-মদনের দ্বন্দ্বের অবসান হতে দেখল সমগ্র দল। মদন মিত্রের অস্ত্র প্রশিক্ষক সম্পর্কীয় মন্তব্য থেকেই দুই নেতার মতানৈক্য শুরু হয় বলে জানা গেছে।

Latest Videos

অস্ত্র প্রশিক্ষণ সম্বন্ধে কামারহাটির নেতা মদন মিত্র বলেছিলেন, ‘‌আমি বলেছি কোথায় কোথায় পৌঁছচ্ছে (অস্ত্র) জানালে আমাদের সুবিধা হয়। আমাদের কর্মীরা ওগুলো নিয়ে নেবে। আমাদের কাছে ওগুলোর ভালো ট্রেনার রয়েছে। এক্স আর্মি, কর্ণেল। প্র্যাকটিসটা করে রাখবে। যাতে বিজেপি ব্যবহার করতে না পারে। শেখাবে। দেখাবে। আমাদের কর্মীদের অভিনয় শেখানো হবে। এক্স আর্মি যাদের অনুমোদন রয়েছে তারা শেখাবে। আমাদের কর্মীরা শিখবেন।’‌

মদনের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়ার নিদান সম্পর্কে বেশ বিরূপ হন ফিরহাদ হাকিম। তিনি সরাসরি বলেন, ‘‌এমন মন্তব্য অনুচিত। উনি একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। উনি মন্ত্রিসভার সদস্য নন। দল পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে অবস্থান জানিয়েছে। আমাদের দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন সেটাই চূড়ান্ত। পাগলে কী না বলে, ছাগলে কী না খায়! মদন মিত্র কে? ট্রেনিং দেওয়ার ক্ষমতা নেই। তিনি পঞ্চায়েত এলাকায় থাকেন না। রাজ্যের মন্ত্রী নন। এসব কথা বলে প্রেস অ্যাট্র্যাকশন করা যায়। ভোট শান্তিপূর্ণ হবে।’‌

তাঁর এই ক্ষোভ স্বাভাবিকভাবেই বড় গোলমাল সৃষ্টি করতে পারত শাসকদলের একেবারে ওপর মহলে। কারণ, এই মতপার্থক্যের ক্ষেত্রে কলকাতার মেয়রের বক্তব্যকেই সমর্থন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু, পরিস্থিতি হল ভিন্ন। বিরূপ মন্তব্য শুনে পরিস্থিতির গুরুত্ব সামাল দিতে নিজেই এগিয়ে এলেন রঙিন নেতা মদন মিত্র। সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কোনও অন্তর্দ্বন্দ্বের ব্যাপার নেই। ববি আমার প্রিয় ভাই। ও আমাকে বিরিয়ানি খাওয়াক।’

তাঁর এই আবদার শুনে মেয়র ববি হাকিম কী বলেছেন? সূত্রের খবর, তিনিও সমস্ত দ্বন্দ্বে জল ঢেলে দিয়ে মদনের বিরিয়ানি-দাবি সাগ্রহে মেনে নিয়েছেন। অর্থাৎ, ফিরহাদের তরফে মদনের জন্য বিরিয়ানির ব্যবস্থা পাকা। বেশ তাড়াতাড়িই চেতলা থেকে কামারহাটিতে বিরিয়ানি পৌঁছবে বলে দলীয় সূত্রে খবর। শাসকদলের বিভিন্ন ছোট ছোট ক্ষমতাবান গোষ্ঠীর মধ্যে যখন জেলায় জেলায় কোন্দল ঘটছে, তখন দুই ওজনদার নেতার মধ্যে এই সৌজন্যবোধ আদতে দলের নিচুতলার প্রতিই একটি নিদর্শন হয়ে রইল।


আরও পড়ুন-
রেফার করে দেওয়ার দরুন কোনও রোগীর মৃত্যু হলে দায় ওই চিকিৎসককেই নিতে হবে: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
মহানগরীতে সস্ত্রীক এসে নামলেন বঙ্গের নয়া রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস, বরণ করে নিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম
জনপ্রিয় পানীয় ‘রসনা’-র সৃষ্টিকর্তা আরিজ পিরোজশা খামবাট্টার প্রয়াণ, মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর

Share this article
click me!

Latest Videos

'একত্রিত হতে হবেই, ওরা ৫০ পেরলেই শরিয়া আইন চালু করবে' গর্জে উঠলেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari | News
'Mamata Banerjee-র জন্যই অভয়ার এই অবস্থা' বলতে গিয়ে এ কী বললেন Suvendu Adhikari, দেখুন
শুভেন্দুর বিরাট ঘোষণা! সোনাচূড়ার আড়াই বিঘা জমিতে হবে বিশাল Ram Mandir | Suvendu Adhikari
'সনাতনী সম্মেলন'-এ Suvendu Adhikari-র বিশেষ বার্তা, দেখুন সরাসরি
‘RG Kar-র তথ্য প্রমাণ Mamata Banerjee-র নির্দেশে লোপাট হয়েছে’ বিস্ফোরক Adhir Ranjan Chowdhury