বিয়ে করেছিলেন মহুয়া মৈত্র? বয়ফ্রেন্ডের জন্য ভেঙেছিল দাম্পত্য! তৃণমূলের এই প্রার্থীর অজানা তথ্য জানুন
তিনি লুই ভুইতোঁর মালকিন। ঝুলিতে রাশি রাশি ডিগ্রি, ব্যাগে ঈষদুষ্ণ গরম জল থাকে সর্বক্ষণ। এহেন হেভিওয়েট প্রার্থীকে নিয়ে মানুষের মনে কৌতুহল তো থাকবেই। সেই মহুয়া মৈত্র কি বিয়ে করেছেন? করলেও তাঁর স্বামীর নাম কি, কে তিনি! আজকের প্রতিবেদনে রইল সেই উত্তর।
দ্বীপেন্দ্র লাল মৈত্র এবং মঞ্জু মৈত্রের সংসারে ১২ অক্টোবর ১৯৭৪ সালে অসমের কাছাড় জেলার লাবাকে জন্মগ্রহণ করেন মহুয়া মৈত্র। তিনি কলকাতায় পড়াশোনা শুরু করেন।
বাবার চা বাগান ছিল। ইস্কুলের পাট চুকিয়ে পাড়ি দেন বিদেশে। পড়তেন ম্যাসাচুসেটসের মাউন্ট হোলিওক কলেজে। পরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের মাউন্ট হলিওক কলেজ থেকে ১৯৯৮ সালে অর্থনীতি ও গণিতে স্নাতক হন।
নিউইয়র্ক সিটি ও লন্ডনে জেপি মরগানের জন্য তিনি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার হিসাবে কাজ করেন। রাজনীতিতে সক্রিয় প্রবেশের আগে তিনি জেপি মরগানের ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন।
ধীরে ধীরে ভাইস প্রেসিডেন্টের পদে উত্তরণ। মার্কিন অর্থনৈতিক সংস্থা জেপি মর্গ্যানের ভাইস প্রেসিডেন্টের চাকরি ছেড়ে ২০০৯ সালে রাহুল গান্ধীর ‘আম আদমি কা সিপাহি’ সংগঠনের মারফত রাজনীতির ময়দানে আগমন। তখন বছর পঁয়ত্রিশের মহুয়ার।
তবে ‘ক্ষয়িষ্ণু’ কংগ্রেস তাঁকে বেশিদিন ধরে রাখতে পারেনি। ২০১০ সালে তিনি ঠিকানা বদলে চলে যান কালীঘাটে। তার ছ’বছর পরে ২০১৬ সালে নদিয়ার করিমপুর বিধানসভায় তাঁকে টিকিট দেন মমতা। প্রায় চার দশকের ‘বাম ঘাঁটি’-তে ঘাসফুল ফোটান মহুয়া।
২০১৯ সালেই কৃষ্ণনগর লোকসভার টিকিট এবং জয়। সাংসদ হওয়ার পর থেকেই তিনি সর্বভারতীয় স্তরে পরিচিত মুখ। মহুয়ার আগে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ ছিলেন তাপস পাল। ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে জেতা সাংসদ তাপস ২০১৯ সালের ভোটের আগে মহাবিতর্কিত এক মন্তব্য করে নিজেকে এবং দলকে বিশেষ ফাঁপরে ফেলেছিলেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখনই ঠিক করে নেন, ২০১৯ সালে তাপসকে আর কৃষ্ণনগরের টিকিট দেবে না তৃণমূল। বদলে সেখানে পাঠানো হয় মহুয়াকে। মুখ রক্ষা করেন এই নেত্রী। ‘দাদা’র কীর্তি সার্থক ভাবে ভুলিয়ে দিতে পেরেছিলেন ‘দিদি’ মহুয়া।
এবারের সব জনমত সমীক্ষা জানিয়েছে হারের মুখ দেখতে পারেন তৃণমূলের হেভিওয়েট ও বিতর্কিত প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। এই কেন্দ্র থেকে প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়েই জয়ের মুখ দেখতে পারেন বিজেপির প্রার্থী রাজমাতা অমৃতা রায়।
তবে সেসব আমলেই নিচ্ছেন না মহুয়া। মহুয়া মৈত্র বলেন, জয় নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। জয় কতটা বড় হবে সেটাই দেখার বাকি এবং তা ঠিক হবে ৪ জুন। আমি সাংসদ হওয়ার পর থেকেই এখানকার মানুষের মধ্যে ছিলাম এবং আছি। এ কারণে এখানকার মানুষের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
দর্শন হিরানন্দানির থেকে ‘ঘুষ’ নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করেছেন তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় হয়েছে গোটা দেশ। ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’ করার অভিযোগে লোকসভার এথিক্স কমিটি মহুয়ার বিচার করে।
তাঁর সাংসদ পদ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁকেই আবারও কৃষ্ণনগর থেকে প্রার্থী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মহুয়া মৈত্র। তিনিও এবারের লোকসভা নির্বাচনের তারকা প্রার্থী।
গত ডিসেম্বরে সংসদ থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর নতুন সংসদ ভবনের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন তিনি এখনও রাজনীতিতে আছেন, ছিলেন ও থাকবেন। এখনও ৭৫ বছর বয়স অবধি লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি। সামনের অক্টোবরে ৫০ বছর বয়স হবে মহুয়া মৈত্রের।
মহুয়া মৈত্রর বৈবাহিক জীবন শুরু হয়েছিল ডেনমার্কের ডানিসের লার্স বর্সনের সঙ্গে বিয়ের মধ্য দিয়ে। তার স্বামী ছিলেন একজন বিদেশী। তবে তাদের বিবাহিত জীবন খুব বেশি বছর স্থায়ী হয়নি।
অন্যদিকে মহুয়া মৈত্রের ডিভোর্স হওয়ার আগে তিনি জয় অনন্ত দেহাদরাইয়ের সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। তাদের এই সম্পর্ক বিবাহ বিচ্ছেদের তিন বছর আগে থেকে ছিল বলেও সূত্রের খবর। তাদের মধ্যেকার গভীর বন্ধুত্বের বিষয়টি মহুয়া মৈত্র স্বীকারও করেছেন।
এমনকি মহুয়ার বিবাহ বিচ্ছেদের পিছনে জয় অনন্ত দেহাদরাইয়ের সঙ্গে বন্ধুত্বকেও অনেকে দায়ী করে থাকেন। তবে এই বন্ধুত্ব বেশি দিন টেকেনি। এমনকি বর্তমানে তারা একে অপরের জাত শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছেন।