সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যুর তীব্র নিন্দা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় এসেন্সির বিরুদ্ধে এবার তদন্ত নামবে সিআইডি। কাল থেকেই শুরু তদন্ত।
লালন শেখের মৃত্যুর রহস্যের কিনাতে করতে এবার তদন্ত নামল সিআইডি। কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই-এর বিরুদ্ধেই তদন্ত করবে রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা। সূত্রের খবর রামপুরহাট থানা থেকে কেস ডায়েরি নেবে সিআইডি। মঙ্গলবারই সিআইডির একটি দল বীরভূম পৌঁছে গেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই লালন শেখের মৃত্যুর রহস্যের কিনারা করতে আসরে নেমেছে সিআইডি।
প্রয়াত তৃণমূল কংগ্রেস নেতা লালন শেখের স্ত্রীর অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রীয় এজেন্সির কর্মকর্তারাই তাঁর স্বামীর মৃত্যুর জন্য দায়ি। তিনি বলেছেন সিবিআই কর্তাদের অত্যাচারের কারণেই লালন শেখের মৃত্যু হয়েছে। কেস থেকে লালন শেখেন নাম সরিয়ে দেওযার জন্য লালন শেখের পরিবারের কাছ থেকে সিবিআই কর্তারা ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন বলেও অভিযোগ করেছেন লালন শেখের স্ত্রী। আর সেই কারণে তিনি মৃত্যুর সিআইডি তদন্তের দাবি করেছিলেন।
বর্তমানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিলে মেঘালায় রয়েছে। সেখান থেকেই তিনি সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যুর নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, 'সিবিআই যদি এতই বুদ্ধিমান হয় তাহলে কী করে লালন শেখ তাদের হেফাজতে মারা গেল? আমি জানি তাঁর স্ত্রী একটি এফআইআর দায়ের করেছেন। এই বিষয়ে আমরা খতিয়ে দেখব।'
মঙ্গলবার রাতে পশ্চিমবঙ্গের ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) এক উর্ধ্বতন কর্তা বলেন, তাঁরা লালন শেখের মৃত্যুর তদন্তের নির্দেশ পেয়েছেন। বীরভূ্ম জেলা পুলিশ ইতিমধ্যেই বগটুইকাণ্ডের মূল অভিযুক্তের সিবিআই হেফাজতে মৃত্যুর তদন্ত শুরু করেছে।
অন্যদিকে লালন শেখের স্ত্রীর তোলা অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই। সিবিআই-এর সিনিয়র কর্তা জানিয়েছেন, এজেন্সির কর্মকর্তাদের মধ্যে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন তারা বগটুই গণহত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করতে এসেছেন। আর কোনও আধিকারিকই টাকা চাইতে পারে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুন এক সিবিআই আধিকারিক পিটিআইকে জানিয়েছেন, লালন শেখকে গেস্টা হাউসের শৌচাগারে ঝুলন্ত অবস্থা পাওয়া গিয়েছিল। সেখানেই সিবিআই-এর অস্থায়ী ক্যাম্প অফিস। বিকেল ৪টে ৩০ মিনিটে উদ্ধার হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, সেই সময় দুই তদন্তকারী আধিকারিক আদালতে ছিলেন। তিনি আরও জানিয়েছেন একজন সিআরপিএফ কনস্টেবল শৌচাগারের বাইরে মোতায়েন ছিল। কিন্তু তার উপস্থিতিতেই লালন শেখ আত্মহত্যা করতে সক্ষম হয়েছে। গোটা ঘটনা রাজ্য পুলিশ ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে জানান হয়েছে। প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে। গত ৫ ডিসেম্বর লালন শেখতে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারপর প্রথম দফায় ৬ দিন দ্বিতীয় দফায় তিন দিনের সিবিআই হেফাজত দিয়েছিল আদালত।
আরও পড়ুনঃ
কে এই লালন শেখ? সিবিআই ক্যাম্প অফিসে তার রহস্যজনক মৃত্যুতেই কি ইতি পড়বে বগটুই গণহত্যাকাণ্ডের তদন্ত
সিবিআই-এর অত্যাচারেই লালন শেখের মৃত্যু - অভিযোগ পরিবারের, বীরভূম পুলিশ বলল তদন্ত হবে
সিবিআই ক্যাম্প অফিসে রহস্যজনক মৃত্যু বগটুই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের