চালান ছাড়াই আরজি করের নির্যাতিতার ময়নাতদন্ত! সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নে জর্জরিত রাজ্য- দেখুন ছবিতে

নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে উঠেছিল আরজি কর মামলা। বেঞ্চের বাকি সদস্যরা হলেন জেবি পারদিওয়ালা ও মনোজ মিশ্র।

গত শুনানিতেই সুপ্রিম সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিল তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে মুখ বন্ধ খামে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে হবে। সেইমত সুপ্রিম কোর্টে এদিন স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেয়। কিন্তু আবারও স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে হবে আগামী সপ্তাহে, পরবর্তী শুনানির দিন।

সুপ্রিম কোর্টে এদিন রাজ্যের বিরুদ্ধে একাধির নালিশ ঠোঁকে বিরোধীরা। জুনিয়ার ডাক্তারদের আইনজীবীর পাশাপাশি নির্যাতিতার আইনজীবী ও সিবিআই -এর আইনজীবীও রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

সিবিআই এবং অন্যান্য আইনজীবীদের তরফে নির্যাতিতার শরীরের নমুনা সংগ্রহ এবং প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগে একাধিক যুক্তি দেওয়া হয় রাজ্যের, বিশেষ করে কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে।

তারপরই ফেল সুপ্রিম কোর্ট আরজি কর হত্যাকাণ্ডেকর স্টেটাস রিপোর্ট তলব করে। আগামী সোমবার সিবিআইকে মুখবন্ধ খামে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর। তার আগের দিন অর্থাৎ ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে হবে।

এদিন সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে একের পর এক প্রশ্ন করেন। অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা কখন রুজু করা হয়। উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিবাল জানান দুপুর ১টা ৪৭ মিনিটে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। দুপুর ২টো ৫৫ মিনিটে মামলায় যুক্ত করা হয়। জেনারেল ডায়েরি নিয়েও প্রশ্ন, রাজ্য জানায় ২টো ৫৫মিনিটে তা করা হয়।

ময়নাতদন্তের সময়কাল নিয়ে সওয়াল-জবাবের মাঝেই প্রধান বিচারপতি জানতে চান দেহ যখন ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় সেই চালান কোথায়? চালান এই কারণেই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তাতে বোঝা যায় যে দেহের সঙ্গে কী কী পাঠানো হয়েছিল। সিবিআই-এর কাছে সেই চালান চায় সুপ্রিম কোর্ট।

পাল্টা সিবিআই জানিয়ে দেয় তারা কোনও চালান পায়নি। তাতেই উষ্মা প্রকাশ করে কোর্ট। আদালতের প্রশ্ন চালান ছাড়া কী করে ময়নাতদন্ত সম্ভব? আদালত জানায় চালান থেকেই বোঝা যায় ময়নাতদন্তের সময় দেহের সঙ্গে কী কী পাঠান হয়েছিল।

এরপরই প্রধান বিচারপতি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, চালান ছাড়়া দেহ ময়নাতদন্তের জ্য গ্রহণ করা যায় না? উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিবাল বলেন, এই মুহূর্তে আমার কাছে যা তথ্য আছে তাতে ম্যাজিস্ট্রেট লিখিতভাবে যা দিয়েছেন তা ছাড়া কিছু নেই। রাজ্য জানিয়েছে, হাইকোর্টের কেসডায়েরিতে চালান ছিল।

ময়নাতদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ফিরোজ এডুলজি। নিহত তরুণীর পোশাক কি ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক তদন্তকারী আধিকারিককে পাঠিয়েছিলেন? ২৭ বছরের কর্মজীবনে দেখিনি যে FIR হওয়ার আগেই সার্চ অ্যান্ড সিজার হয়েছে!

ফিরোজ এন্ডুলজি বলেন, দেওয়ালের টাইলস ও বেসিন পাল্টে দেওয়া হয়েছে। এভাবে অপরাধের জায়গার চরিত্র বদল করা হচ্ছে।

সঠিক ভাবে ময়নাতদন্ত হয়েছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। তখন সিবিআইয়ের তরফেও জানানো হয়, ময়নাতদন্ত কখন করা হয়েছে— সেই সময়ের উল্লেখ নেই। যদিও রাজ্যের আইনজীবীর যুক্তি, সব কিছু উল্লেখ রয়েছে।

সিবিআই জানিয়েছে, ফরেন্সিক রিপের্ট নিয়ে তাদের মনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় সংস্থা সেটি এমস বা অন্যত্র পরীক্ষার জন্য পাঠাতে চায়।।