দুয়ারে রেশন মামলায় সোমবার শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে । সুপ্রিম কোর্টের রায় আসার পর নবান্ন থেকে বিষয়টি অফিসিয়ালি জানানো হয় প্রতিটি জেলাকে। অর্থাৎ বাড়ি বাড়ি যেভাবে রেশন পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল সেই ব্যবস্থাই বলবত থাকবে ।
দুয়ারে রেশন প্রকল্প নিয়ে রাজ্যকে স্বস্তি দিল সুপ্রিম কোর্টের রায়। সোমবার শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর দুরায়ে রেশন মামলায় শুনানির সময় কলকাতা হাইকোর্ট বলেছিল খাদ্য সুরক্ষা আইনে রাজ্য সরকারে দুয়ারে রেশন প্রকল্পের কোনও বৈধতা নেই। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। তাতেই রাজ্য সরকার সাময়িত স্বস্তি পায় শীর্ষ আদালতের রায়ে। কারণ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর আপাতত দুয়ারে রেশন প্রকল্প চালিয়ে যেতে কোনও বাধা নেই রাজ্য সরকারের।
লক ডাউনের পর থেকে কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছিল যে প্রতিটি দারিদ্র সীমার নিচে থাকা জনগণকে দেওয়া হবে রেশন। এমনকি পরবর্তীকালে এই সুবিধার আওতায় এসেছিলো দেশের মধ্যবিত্তরাও।ভারতবর্ষের এক বিরাট সংখ্যক জনগনের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার এই মানবিক প্রকল্প এনে সেসময় বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন মোদী। যদিও পরে বোঝা গেছে যে এর পুরোটাই ছিল ভোটের রাজনীতি। এই প্রকল্প ব্যাপক সাড়া ফেলে পশ্চিমবঙ্গেও । কিন্তু প্রকল্প প্রণয়নে সিদ্ধহস্ত পশ্চিমবঙ্গের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী কখনোই চাননি লাইম লাইট তার উপর থেকে সরে যাক। পাছে এই প্রকল্প এনে বিজেপি জনগণকে নিজের দিকে টানে, তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আনলেন এর ঠিক অনুরূপ আর এক প্রকল্প। নাম দিলেন 'দুয়ারে রেশন'। এর জন্য যদিও তিনি সমালোচনারও স্বীকার হন অনেক । কিন্তু তবুও এই প্রকল্প থামতে দেননি তিনি । ওদিকে দুয়ারে রেশনের জনপ্রিয়তা দেখে গেরুয়া শিবিরেও ষড়যন্ত্র তুঙ্গে। তারা ভাবলেন যে করেই হোক এই প্রকল্প রুখতেই হবে। তাই এই প্রকল্প খাদ্য সুরক্ষা আইন দ্বারা বৈধ নয় এমন দাবি জানিয়ে কোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। প্রাথমিকভাবে এই প্রকল্প পর্যালোচনা করে কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গেল এবং ডিভিশন দুই বেঞ্চই রায় দেয় অবিলম্বে এটি তুলে নেওয়ার। এছাড়া রেশন ডিলারদেরও এই প্রকল্প চালাতে মারাত্বক অসুবিধে হাওয়ায়, এক বৃহত্তর জনগণের স্বার্থে হাই কোর্ট এই প্রকল্প স্থগিত করার নির্দেশ দেন।
কিন্তু তাতেও আটকানো যায়নি মমতা- সরকারকে। তারা এই স্থগিতাদেশের পুনর্মূল্যায়নের আর্জি জানিয়ে রাজ্য সরকার দ্বারস্থ হয় সুপ্রিম কোর্টের। সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের বিপরীতে রায় দিয়ে বলে যে এই প্রকল্প একেবারেই খাদ্য আইন দ্বারা অবৈধ নয় । সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে স্বস্তি ফেরে নবান্নর। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের রায় আসার পর নবান্ন থেকে বিষয়টি অফিসিয়ালি জানানো হয় প্রতিটি জেলাকে। অর্থাৎ বাড়ি বাড়ি যেভাবে রেশন পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল সেই ব্যবস্থাই বলবত থাকবে আগামী দিনগুলোতেও।
সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, সুপ্রিম কোর্ট যেহেতু রায় দিয়েছে তাই এনিয়ে কিছু বলার নেই। কিন্তু বিষয়টি হচ্ছে যে কারণে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছিল তাকে একেবারে উড়িয়ে দেওয়া হয়নি।
বিধানসভা নির্বাচনের পরই মমতা বন্দোপাধ্যায় ঘোষণা করে এই প্রকল্প। তবে এটি খাদ্য সুরক্ষা আইনে বৈধ নয় এমন দাবি তুলে হাইকোর্টে মামলা করে বিরোধীরা। প্রথমে সিঙ্গেল বেঞ্চে এর রায় জারি হবার পর ,বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ থেকেও গত ২৮ সেপ্টেম্বরও দেওয়া হয় ওই একই রায় । এরপর ২০ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টে এনিয়ে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করে রাজ্য সরকার।অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি খতিয়ে দেখে আপাতভাবে হাই কোর্টের রায়কে স্থগিত রেখেছে।
হঠাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কেন দেখা করতে চান অমিত শাহ? ডিসেম্বরেই হবে বিশেষ বৈঠক
Gujarat Election: পাঁচ বছরে ৯৪% অনুদান এসেছে শুধুমাত্র বিজেপির অ্যাকাউন্টে
মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরের বলহারশাহ রেলওয়ে স্টেশনে ওভারব্রিজ ধ্বসে নিহত হন ১, আহত ১৫