হাই কোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে শুক্রবার।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। এবার এই রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। বুধবার চাকরিহারাদের তিন আইনজীবী বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের বিরোধিতায় জোড়ালো সাওয়াল করেন। আজ দুপুর তিনটে থেকে শুরু হয় সেই মামলার শুনানি। চলে প্রায় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। হাই কোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে শুক্রবার।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের চাকরি বাতিলের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিলেন চাকরিহারাদের একাংশ। সেই মামলায় তিন আইনজীবীর ধারালো আক্রমণের নিশানায় থাকল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়। এই প্রসঙ্গে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুক্তি, হাই কোর্টের নির্দেশেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে এমন কোনও তথ্য এখন পর্যন্ত উঠে আসেনি যার জেরে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করা যায়। পাশাপাশি তিনি ডিভিশন বেঞ্চকে জানান, চাকরিহারাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও সুযোগ দেওয়া হয়নি। তাঁদের সঙ্গে কথা না বলেই চাকরি বাতিলের এত বড় রায় দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঠিক কোন আইনে এতজনের চাকরি বাতিল করা হল সে বিষয়ও প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবী। দ্বিতীয়ত, আইনজবী জানান, যাদের অপ্রশিক্ষিত শিক্ষক হিসেবে চাকরি বাতিল হয়েছে, তাঁদের নিয়োগ যে সময় হয়েছিল, পর্ষদের সেই সময়কার বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট উল্লেখ করা আছে, নিয়োগের ২ বছরের মধ্যে প্রশিক্ষণ নিতে হবে প্রার্থীদের। সেই অনুযায়ী নিয়োগ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোন ও নিয়ম ভাঙা হয়নি। তৃতীয়ত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের 'ঢাকি সমেত বিসর্জন দিয়ে দেব' মন্তব্য টেনে বিচারপতির যুক্তি চাকরি বাতিল আগে থেকেই ঠিক ছিল।
অন্যদিকে আইনজীবী সুবীর সান্যাল বলেন, আদালতন নিজে ৩২ হাজার প্রার্থীর তথ্য খতিয়ে দেখেনি। সব তথ্যই মামলাকারীদের কাছ থেকে পাওয়া। সিঙ্গল বেঞ্চ কয়েক জন পরীক্ষার্থীর ইন্টারভিউ নিয়ে কী ভাবে বুঝে গেল অ্যাপটিটিউড টেস্টে নিয়ম মানা হয়নি? প্রসঙ্গত, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ ঘিরে রীতিমত শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্যজুড়ে। এবার এই সংক্রান্ত আরও এক বড় রায় দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপধ্যায়। দু'মাসের মধ্যে ৭১ জন প্রার্থীকে প্রাথমিকে চাকরি দিতে হবে বলে নির্দেশ দিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আদালতের এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা। ২৬৩ দিনের লড়াইয়ের পর অবশেষে আশার আলো দেখছেন তাঁরা।