সাগরদিধি উপনির্বাচনে প্রস্তুতি শেষ। সোমবার সকাল থেকেই ভোট গ্রহণ শুরু। রাজ্যের চারটি যুযুধান দলই রয়েছে ভোট ময়দানে,
সোমবার মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। এই নির্বাচনে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতার একটি মঞ্চ প্রস্তুত হয়েছে। কারণ ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস, বিরোধী বিজেপির সঙ্গে ভোট যুদ্ধে সামিল হয়েছে বাম ও কংগ্রেস জোট। সাগরদিঘি মূলত সংখ্যালঘু এলাকা। চারটি রাজনৈতিক দলই সংখ্যালঘু এলাকা জয় করতে মরিয়া। ডিসেম্বর মাসে বিধায়ক সুব্রত সাহার মৃত্যুর পর থেকেই এই আসনটি ফাঁকা ছিল।
সাগরদিধি- ২০১১ সাল থেকে এই আসনে জিতে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সময় মুর্শিদাবাদের একমাত্র তৃণমূল বিধায়ক ছিলেন এই এলাকার সুব্রত সাহা। তিনিও কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছিলেন। যাইহোক ২০২১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ৫০ হাজারও বেশি ভোটের ব্যবধানে এই কেন্দ্র থেকে জিতেছিল। মোট ভোটের ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোট তৃণমূলের ঝুলিতেই পড়ছিল। সেই সময় বাম-কংগ্রেস জোট আর বিজেপির ভোট ছিল ১৯ ও ২৪ শতাংশ।
তৃণমূলের প্রার্থী দেবাশিষ বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আত্মীয়। প্রতিপক্ষ বিজেপির দিলীপ সাহা। বাম ও কংগ্রেস জোটের প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস- এলাকায় বিড়ি-ব্যারন নামেই পরিচিত তিনি।
বিড়ি শিল্পের জন্য বিখ্যাত মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি। বিড়ি শ্রমিকদের পাশাপাশি অভিবাসী শ্রমিকদের সমস্যা উপনির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এলাকার ৬০ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাস। গ্রামীণ আসনে ১৮.৫ তফশিলি জাতি ও ৬.৫ শতাংশ তফসিলি উপজাতির মানুষ বাস করে। ভোটারের সংখ্যা ২.৩ লক্ষ।
টানা চতুর্থবার সাগারদিঘি আসনে জয়ের ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও অন্যান্য শীর্ষ স্থানীয় নেতারা একাধিকবার এই কেন্দ্রে ভোট প্রচারে এসেছেন। ভোট প্রচারে অভিষেক বলেছিলেন আরও ভোটের ব্যবধান বাড়ানোই তণমূলের একনম্বর লক্ষ্য। তিনি আরও বলেছিলেন বাম কংগ্রেস ও বিজেপি জোটকে পরাস্ত করতে হবে।
অন্যদিকে বিজেপি হয়ে প্রচার করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি তৃণমূলের থাকার সময় মুর্শিদাবের দায়িত্বেও ছিলেন। অনেকের কথায় শুভেন্দ যথেষ্ট ভালই বোঝেন মুর্শিদাবাদের রাজনীতি। অন্যদিকে প্রচারে গিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদাররা। বিজেপি দাবি স্বচ্ছতার সঙ্গে অবাধ নির্বাচন হলে বিজেপি জয়ী হবে।
মুর্শিদাবাদ মানেই কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর খাস তালুক। উপনির্বাচনের দায়িত্বও তিনি নিজের ঘাড়েই নিয়েছিলেন। তিনিও কংগ্রেসের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি বলেন, স্থানীয় মানুষ বুঝতে পারেছে বিজেপি আর তৃণমূল একই মুদ্রার দুই পিঠ। তিনি আরও বলেন, রাজ্যের মানুষের থেকে বর্তমানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেকটাই সরে গেছেন। ছাত্রনেতা আনিশ খানের মৃত্যু নিয়োগ দুর্নীতি তৃণমূলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। যা উপনির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলেও দাবি তাঁর।
১৯৫০ সালের গো়ড়ার দিকে এই কেন্দ্র কংগ্রেশের শক্তঘাঁটি ছিল। ১৯৮৭ সাল থেকে সিপিআই(এম) সাগরদিঘি কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। পরিবর্তনের হাওয়া মুর্শিদাবের সাগরদিঘিতেই প্রথম লেগেছিল ২০১১ সালে। সেই সময় থেকেই এটি তৃণমূলের খাসতালুক। নির্বাচন কমিশন অবাধ আর সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ৩০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেছে।
আরও পড়ুনঃ
পাপমোচনী একাদশীর ব্রত পালন ১৭ মার্চ, জানুন এই একাদশীর পুরা-কথা আর গুরুত্ব
BREAKING NEWS: দীর্ঘ জেরার পরে গ্রেফতার মণীশ সিসোদিয়া, মদ-নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার করল সিবিআই
From The India Gate: স্বপ্নে বিভোর কংগ্রেসের দরজায় কোন্দলের কড়া, হনুমানের চিঠিতে হুলুস্থুলু