অধীররঞ্জন চৌধুরীর (Adhir Chowdhury) কৌশলেই তাঁকে হারিয়ে দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। লোকসভা ভোটের পর এবার সেই রহস্যই ফাঁস করল। তৃণমূল সূত্রের খবর গুরুমারা বিদ্যেই এখানে কার্যকর। বহরমপুর (Beharampur) লোকসভা কেন্দ্র মানেই অধীর চৌধুরী। প্রায় সমর্থক শব্দে পরিণত হয়েছিল। মিথ হয়ে উঠেছিলেন অধীর। আর সেই কারণেই দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি এই কেন্দ্রের সাংসদ।
অধীর বহরমপুরের প্রথম সাংসদ হন ১৯৯৯ সালে। তার আগে ১৯৯৪ সালে লোকসভা উপনির্বাচনে কংগ্রেস এক সংখ্যালঘু প্রার্থী দাঁড় করিয়ে বাজিমাৎ করেছিল। তবে সেবার সেই কৌশল সেভাবে খাটেনি। কিন্তু সেই সময়ের কংগ্রেস জেলা সভাপতি অতীশ সিনহার প্রার্থী নুরে আলম চৌধুরী প্রার্থী ছিলেন। আরএসপির প্রমথেশ মুখোপাধ্যায়ের কাছে তিনি হেরেছিলেন ৩২ হাজার ভোটে। এই নুরে আলম সম্পর্কে রেজিনগরের বর্তমান বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরীর কাকা।
এই সময়ই কংগ্রেস নেতৃত্ব বিশ্বাস করে যদি কখনও কোনও বড় দল সংখ্যালঘু প্রার্থী দাঁড় করিয়ে একটি বেশি পরিশ্রম করে তাতে তারা জিতবেই। সেই সময়ই আরও একটি বিষয়ে সামনে আসে জেলা নেতৃত্ব না খাটলে হেরে যাবে প্রার্থী। কারণ সেই সময় অধীর নুরে আলমের জন্য সেভাবে খাটেননি।
এবার সেই কৌশলই কাজে লাগিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ সেই সময়ের অনেক কংগ্রেস নেতাই বর্তমানে তৃণমূলে। তারাই সেই কৌশল মমতা অভিষেকের সামনে রেখেছিল বলে সূত্রের খবর। তাতেই ইউসুফ পাঠানকে অধীরের বিরুদ্ধে প্রার্থী করা হয়। তৃণমূল সমীক্ষায় স্পষ্ট ছিল- অধীর নিজের করিশ্মায় জিতেন বলেও দাবি করলেও তাঁর প্রাণ ভোমরা লুকিয়ে ছিল বিজেপি ঘরে। সংসদীয় রাজনীতির শুরু থেকে বহরমপুরের প্রার্থী অধীর। যত দিন যাচ্ছে ততই অধীরের ভোট বাড়ছিল। দুর্বল হচ্ছিল বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক। এবার সেই জায়গাতেই হাত রেখেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ বহরমপুরে ৫৫ শতাংশই সংখ্যালঘু ভোট। বাকিটা হিন্দু। সেই সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কেই ভাগ বসিয়ে অধীরের রাজপ্রাসাদে ভাঙন ধরিয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
তবে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, তারা কেউই ভাবতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস ইউসুফ পাঠানের মতে হেভিওয়াট প্রার্থী নির্বাচন করবেন বহরমপুরের জন্য। প্রথম থেকেই সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে যা চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল অধীরকে। অধীরের টেকনিক আর মমতার প্রার্থী বাছাই- এই দুটিই অধীরের হারের তীর হিসেবে কার্যকর হয়েছে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।