দিদির সুরক্ষা কবচ অনুষ্ঠানে বীরভূমে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন শতাব্দী রায়। পাশাপাশি নিজেও বিতর্ক তৈরি করেন তিনি। ভাতের থালা ফেলে উঠে গিয়ে।
দিদির দূত হয়ে জনসংযোগে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে নিজেই বিতর্কের সৃষ্টি করলেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। এদিন তাঁকে ঘিরে মেলেডাঙায় গ্রামের বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। গাড়ি আটকে দেওয়া হয় সাংসদরে। আর সেখানেই মেজাজ হারান তৃণমূল নেত্রী।
শুক্রবার সকালে প্রথমে হাঁসান বিধানসভার বিষ্ণুপুর অঞ্চলের মেলেডাঙা গ্রামে যান শতাব্দী রায়। সেখানে তিনি গাড়ি থেকে নামতেই রাস্তার সমস্যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীরা সাংসদকে ঘিরে রাস্তার সমস্যার কথা বলতে থাকেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, শতাব্দী রায় এলাক সাংসদ হওয়ার পর থেকেই তাঁরা রাস্তার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই রাস্তা নির্মাণ হয়নি। গ্রামবাসীদের দাবি একাধিকবার রাস্তার সমস্যা নিয়ে বলা হয়েছে। কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি। বিক্ষোভের মুখে পড়ে মেজাজ হারান শতাব্দী রায়। বিক্ষোভকারীদের নিচু স্বরে ধমক দিতেও দেখা যায় সাংসদকে। যদিও সাংবাদিকদের প্রশ্নের শতাব্দী বলেন, "আপনারা ভুল ব্যাখ্যা করেছেন। আমি কাউকে ধমক দিই নি। মজা করে বললাম আপনার বলা হলে অন্যজনকে বলতে দিন"।
মেলেডাঙ্গা গ্রাম থেকে শতাব্দী যান একই অঞ্চলের তেঁতুলিয়া গ্রামে। সেখানে তৃণমূল কর্মী সুজিত সরকারের বাড়িতে মধ্যাহ্ন ভোজনের আয়োজন করা হয়েছিল। ওই কর্মীর বাড়ির উঠোনে বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায়-সহ কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে এক আসনে পাতপেড়ে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। নিয়ম মেনে খেতেও বসেন শতাব্দী রায়। শাল পাতার থালায় দলের অন্যান্য নেতা কর্মীদের মত তাঁকেও ভাত, তরকারি- সহ একাধিক পদ দেওয়া হয়েছিল। তিনি সেই থালার সামনে বসেন। থালা টেনেও নেন। কিন্তু সাংবাদিকরা ছবি তোলার পরেই সেখান থেকে না খেয়ে কিন্তু আচমকাই উঠে পড়েন। তাঁর এই উঠে পড়ার পরই বাকি তৃণমূল নেতা কর্মীরা উঠে যায়। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তবে এই বিষয় নিয়েও সাফাই দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেন,'আমি বাড়ির ভিতর খেয়েছি। উপোস করিনি। ভাত, ডাল, পাঁচতরকারি, বেগুন ভাজা, মাছ ভাজা, মাংস দিয়ে ভাত খেয়েছি'। একই বক্তব্য গৃহকর্তা সুজিত সরকারের। তিনি বলেন, 'সাংসদ খেয়েছেন। ওখানে বসেই খেয়েছেন। একটা ফোন এসেছিল। তাই উঠে গিয়েছিলেন। পরে ওখানে বসেই খেয়েছেন। উনি না খেয়ে যাননি'।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রাম এলাকায় জনসংযোগ বাড়াতে দিদির সুরক্ষা কবচ নামে একটি দলীয় কর্মসূচি চালু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্যই হল জনসংযোগ বাড়ান আর সরকারি প্রকল্পের সুবিধে গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। তবে এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এর আগেও তৃণমূলের একাধিক নেতা স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন। সেই একই ঘটনা ঘটল শতাব্দী রায়ের ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুনঃ
'মোদীজি ভগবানের মত', কর্নাটকের হুবলিতে প্রধানমনন্ত্রীর নিরাপত্তা কর্ডন ভাঙায় অভিযুক্ত কুণালকে জানুন
বীরভূমে বিক্ষোভ 'দিদির দূত' শতাব্দী রায়কে ঘিরে, দেবাংশু ভট্টাচার্যের অবস্থাও তথৈবচ