'আমরা দুটি ভাই শিবের গাজন গাই', গাজন নিয়ে জনপ্রিয় ছড়ার রেশ এখনও ছড়িয়ে গ্রাম বাংলায়

Published : Apr 12, 2023, 09:08 PM ISTUpdated : Apr 13, 2023, 10:39 AM IST
Metro rake runs under river for first time in India reaches Howrah from Kolkata

সংক্ষিপ্ত

গাজন প্রাচীন বাংলার একটি ব্যাতীক্রমী ধর্মীয় অনুষ্ঠান। গ্রামের মানুষের সমবেত অনুষ্ঠান। যা কালের নিয়মি কিছুটি ফিকে হলেও হারিয়ে যায়নি। তারই প্রমাণ সোশ্যাল মিডিয়ায়। 

গ্রাম বাংলার প্রাচীন মেলাগুলির মধ্যে এখনও অন্যতম গাজনের মেলা। গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় একটি পার্বনও বটে। এই প্রথার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শিবঠাকুর। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তা শিবই ধ্বংসের দেবতা। চৈত্রের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হয়ে যায় গাজনের মেলা। তবে মূল অনুষ্ঠান কিন্তু হয় নীলষষ্ঠী আর চৈত্র সংক্রান্তির দিন পর্যন্ত। তবে কেউ পাঁচ দিনের ব্রত পালন করেন, কেই আবার ১৫ দিনের। মূলত ভগবান শিবেরই আরাধনা হয়। একই সঙ্গে ধর্মরাজেরও উপাসনা করা হয়। নারী পুরুষ সকলেই এই উৎসবে সামিল হন। কিন্তু গাজনে আরাধ্য দেবতার উপাসনায় কতগুলি কঠিন পন্থা অনুসরণ করা হয়। সেকথায় পরে আসছি।

এখনও গ্রাম বাংলায় গাজনের মেলা নিয়ে যথেষ্ট উন্মাদনা রয়েছে। কেউ গাজন বলেন তো কেউ আবার চড়ক বলেন। এখনও গ্রামের দিকে এই সময় বহুরূপীদের দেখা যায়। যাদের অধিকাংশ শিব সেজে ঘুরে বেড়ান। সম্প্রতি গাজন নিয়ে একটা লেখা ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সঙ্গে শিবঠাকুর সাজা বহুরূপীর একটি ছবিও। ফেসবুকে বালুরঘাটের বাসিন্দা দেবজিৎ মুখোপাধ্যায় কিছুটা মজার ছলেই লিখেছেন, ভগবান যে ওপর থেকে সবসময় আমার ওপর নজর রাখে তা তিনি আজ নিজের চোখে দেখলেন। তিনি আরও লিখেছেন , তিনি যাতে পথভ্রষ্ট না হন তারজন্য তাঁকে নাকি নজরবন্দি করে রাখা হয়েছে। তারপরই তিনি লিখেছেন, তিনি বাদ দিয়ে অন্য কেউ তাঁর দর্শন পাবে না। কিন্তু কিছু সময়ের জন্য তিনি সকলকেই ভগবান দর্শনের ব্যবস্থা করে দেন। আপনিও দেখুন গ্রাম বাংলার বর্তমানে সবথেকে জনপ্রিয় যান টোটো-তে চড়া এক শিব ঠাকুর।

বাবা ভোলেনাথ- এই নামটি দিয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। কারণ একটাই হিন্দু শাস্ত্র মতে শিবঠাকুর জটিল কোনও বিষয়ের মধ্যে থাকেন না। স্বভাবে সোজা সরল। এমনিতে ভাল মানুষ। রেগে গেলে তাণ্ডব শুরু করেন। আর সেই কারণেই দেবতা থেকে অসুরকূল এমনকি সাধারণ মানুষও তাঁর কাছ থেকে বর আদায় করে নিতে পারে। সেই ভোলেনাথই ত্রিশুল হাতে বলে রয়েছে টোটোর ছাদে। তবে তাঁর দর্শন থেকে বঞ্চিত টোটো-র যাত্রীরা। তবে কথায় রয়েছে শিবঠাকুর পুজো করা সহজ। সাধারণ বেলপাতাতেই তুষ্ঠ তিনি। তিনি তপস্যা করা কঠিন। সহজে ধরা দেননা। পছন্দ করেন না অহংকার।

যাইহোক এবার আসি গাজনের কথায়। বাংলায় গজান শব্দের অর্থ গর্জন। যা এসেছে সন্ন্যাসীদের উৎসব থেকে। অন্য অর্থ কিন্তু গা- মানে গ্রাম। আর জন স্থানীয় মানুষ। গ্রামের মানুষদের সমবেত অনুষ্ঠানই গাজন। তবে এই অনুষ্ঠানে শিব ঠাকুর আরাধনায় মগ্ন সন্ন্যাসীদের ভূমিকা অনেক। তারাই মূল অনুষ্ঠানের পরিচালক। অনেকেই আবার শিব ঠাকুরের কাছে মানত করে থাকেন। তাঁরা এই সময় কয়েকটা দিনের জন্য সন্ন্যাস ব্রত পালন করেন। যাইহোক এই অনুষ্ঠানের মূল অর্থই হল, বেদনা, ভক্তি আর ত্যাগ বা আত্মনিগ্রহের মাধ্যমে সন্তুষ্টি অর্জন করা।

তবে বাংলায় দুই রকম গাজন রয়েছে- শিবের গাজন আর ধর্মের গাজন। শিবের গাজনে শিবের গান হয়। শিব লীলাবতীর বিয়ে হয়। সন্ন্যাসীরাই বরযাত্রী। ধর্মের গাজনে আরাধ্য যমরাজ।

PREV
click me!

Recommended Stories

২০ ডিসেম্বর বঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, কী কী কর্মসূচি থাকছে? দেখুন কী বলছেন শুভেন্দু
৩৫ বছরের যুবকের সঙ্গে নাবলিকার বিয়ের তোড়জোড়, পরিবারের বিরুদ্ধে নালিশ জানাতে থানায় কনে