বর্ষবরণের দিন কলকাতার পারদ পৌঁছে যেতে পারে ১৬-১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। উত্তুরে হাওয়ার বাধা হবে ভূমধ্যসাগরের পশ্চিমী ঝঞ্ঝা।
বিগত ৭ বছরের মধ্যে ২০২২-এ ‘উষ্ণতম’ বড়দিন পেয়েছে কলকাতা। ৫৩ বছরের রেকর্ড ভেঙে ডিসেম্বরের শেষে এসেও একুশের কাঁটায় রয়েছে পারদ। এরপর আবার নতুন দুঃসংবাদ হল, বর্ষশেষ-বর্ষবরণের উৎসবও কাটবে উষ্ণতাকে সঙ্গী করেই।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত পারদ যে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে, তার বঙ্গোপসাগরের কারণে। তবে, বর্ষবরণ যে ‘উষ্ণ’ কাটতে পারে, তার নেপথ্যে থাকবে সুদূর ভূমধ্যসাগর। সাগরের জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাসই শুকনো, হিমেল উত্তুরে হাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ফলত বঙ্গে শীত ঢুকতে পারছে না কোনওভাবেই।
মৌসম ভবনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘বঙ্গোপসাগরের উপর একটি বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়ে থাকার ফলে একটানা দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমী বাতাস সাগর থেকে স্থলভাগের দিকে ঢুকেছে। তার ফলে জলীয় বাষ্প বেড়ে যাওয়ায় উত্তুরে হাওয়া টের পাওয়া যায়নি। জলীয় বাষ্প বাড়লে গরমও বেশি লাগে। এক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছে।’
ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে এসে কলকাতার পারদ উঠে গেছে কুড়ির উপরে। সোমবার ২০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মঙ্গলবার ২০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বুধবারও ২০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। পৌষ মাসের মাজামাঝি এসেও পারদের এমন ঊর্ধ্বগমন বঙ্গবাসীর কাছে খুবই হতাশার। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ৫৩ বছরের রেকর্ড, ১৯৬৯ সালের পর ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে এই প্রথম এত উচ্চতায় রয়েছে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। অর্থাৎ, ঠান্ডার রেকর্ড ভাঙার বদলে ২০২২-এর শীতে ভাঙল উষ্ণতার রেকর্ড।
তবে এখনও পর্যন্ত আশার খবর এটাই যে, বুধবার রাত থেকে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২-৩ দিনে ৪-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে তাপমাত্রা। অর্থাত্, শীত ফিরবে। কিন্তু, তা আসবে খুবই সামান্য এবং পরিমিত সময়ের জন্য। বর্ষশেষের ঠিক আগের দিন থেকেই পারদ আবার উষ্ণতার দিকে এগোবে। ১ জানুয়ারি, অর্থাৎ বর্ষবরণের দিন কলকাতার পারদ পৌঁছে যেতে পারে ১৬-১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ বার কাঁটা হবে ভূমধ্যসাগরের পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। ফলে উত্তর ভারতেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে উত্তুরে হাওয়া। উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ভারতে এখন হাড়-হিম করা ঠান্ডা। শূন্যের কাছে রাজস্থানের তাপমাত্রা, পাঁচের আশপাশে রাজধানী। কিন্তু ঝঞ্ঝার পূর্বাভাস মাথায় রেখে সেখানেও তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে মৌসম ভবন। বর্ষশেষ-বর্ষবরণে এর কুপ্রভাব পড়বে বাংলার শীতেও।
আরও পড়ুন-
করোনার পরবর্তী ঢেউ আসার আগেই দেওয়া হোক চতুর্থ ভ্যাকসিন, বুস্টার ডোজের ওপর জোর স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের
ভারতের রেশন নীতিতে বদল, সমস্ত রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সশরীরে পর্যবেক্ষণের নির্দেশ কেন্দ্রের