কেশপুরের জনসভা থেকে 'নতুন তৃণমূল'এর দুই মুখকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন অভিষেক। তারা হলেন মঞ্জু দলবেরা ও শেখ শেখ হাসিমুদ্দিন।
উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ পঞ্চায়েত নির্বাচনে বড় সাফল্যের মুখ দেখছে তৃণমূল কংগ্রেস। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মাটিতে নেমে লড়াই করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তাঁর মুখেই শোনা গিয়েছিল 'নতুন তৃণমূল'। কেশপুরের জনসভা থেকে 'নতুন তৃণমূল'এর দুই মুখকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন অভিষেক। কিন্তু কেমন ফল করল তাঁরা- এই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
অভিষেকের একজন 'নতুন তৃণমূল' হল মঞ্জু দলবেরা। তিনি তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। গোয়ালতোডড ৫৩ নম্বর বুথের প্রার্থী। তবে তিনি এবারই প্রথম দাঁড়িয়েছে এমনটা নয়। ২০১৮ সালেও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করেছিলেন। জয়ীও হয়েছিলেন। তবে এবার আর তাঁকে লড়াইয়ের মুখে পড়তে হয়নি। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় লাভ করেছেন। জানিয়েছেন, মানুষের জন্য কাজ করেছেন বলেই তাঁর এই জয়। আগামী দিনেও মানুষের জন্যই কাজ করতে চান বলেও জানিয়েছেন তিনি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মঞ্জু আবাস যোজনার টাকা ফেরত দিয়েছেন। তিনি সৎভাবেই জীবন যাপন করেন। সেই কারণে স্থানীয়দের কাছে অত্যান্ত জনপ্রিয়।
অন্য 'নতুন তৃণমূল'শেখ হাসিমুদ্দিনকে কঠোর লড়াই করেই জয় হাসিল করতে হয়েছে। প্রতিপক্ষ ছিল কংগ্রেস প্রার্থী। ২১ ভোটে জয়ী হয়েছেন কলাগ্রাম পঞ্চায়েতের ১২ নম্বর বুথ থেকে। ভোটের দিনে প্রবল হিংসার ঘটনা ঘটেছিল। আহতে হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন। ওষুধের দোকানের কর্মী হাসিমুদ্দিন। রাজনীতির সঙ্গে তেমন যোগাযোগ নেই। স্থানীয়রা জানিয়েছেন প্রথমে ভোটে দাঁড়াতে রাজিও ছিলেন না। কিন্তু অভিষেকের কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়ে ভোট যুদ্ধে সামিল হন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে এখনও পর্যন্ত ১৬ হাজারের বেশি গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে ঘাসফুল শিবির। অনেক পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় বিজেপি। তারপর সিপিএম আর কংগ্রেস। যদিও ভোট থেকে গণনা পর্যন্ত সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে তৃণমূল।গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ দখলে তৃণমূল কংগ্রেস যেমন এগিয়ে রয়েছে তেমনই ভোট হিংসায় সব থেকে বেশি প্রাণ গেছে তৃণমূলের সমর্থকদের। নির্বাচনের দিন ঘোষণা থেকে এপর্যন্ত ৩০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। শুধুমাত্র ভোটের দিমনই মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনেও বেশি মানুষের, যার মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিল ১১জন। তবে এই হিংসার কথা মানতে নারাজ রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কমিশনার রাজীব সিনহার দাবি মৃত্যের ঘটনা তিন থেকে চার জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তবে সরকারি হিসেব অনুযায়ী ২০০৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই রাজ্যে সবথেকে বেশি হিংসার ঘটনা ঘটেছিল। বাম আমলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে মৃত্যু হয়েছিল ৭৬ জনের। ভোটের দিনই মারা গিয়েছিল ৪০ জন।