সংক্ষিপ্ত
রাজু শ্রীবাস্তবকে বাঁচানোর জন্য AIIMS-এর সিনিয়র চিকিৎসকদের দল দিনরাত কাজ করছিল কিন্তু তার জীবন বাঁচানো যায়নি। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, তার মস্তিষ্কে ১০০ শতাংশ ব্লকেজ ছিল, যার কারণে মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দেয় এবং তিনি কোমায় চলে যান।
কৌতুক অভিনেতা রাজু শ্রীবাস্তব জিমে যেতেন। আর এই অনুশীলন করার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এই হার্ট অ্যাটাকই তার মৃত্যুর কারণ হয়ে ওঠে। রাজু শ্রীবাস্তবকে বাঁচানোর জন্য AIIMS-এর সিনিয়র চিকিৎসকদের দল দিনরাত কাজ করছিল কিন্তু তার জীবন বাঁচানো যায়নি। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, তার মস্তিষ্কে ১০০ শতাংশ ব্লকেজ ছিল, যার কারণে মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দেয় এবং তিনি কোমায় চলে যান।
এর আগে বিগ বস খ্যাত অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লা, কন্নড়ের বিখ্যাত অভিনেতা পুনীত রাজকুমারও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এই দুই অভিনেতাই ফিটনেস ফ্রিক ছিলেন এবং জিমে প্রচুর সময় কাটাতেন। যখন হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে এমন অভিনেতাদের যারা তাদের শরীরের প্রতি সচেতন এবং তাদের ডায়েটের যত্ন নেন, তখন সেই লোকদের কী হবে যারা কোনও নির্দেশিকা বা ফিটনেস প্রশিক্ষক ছাড়াই অনেক ঘন্টা জিম করেন। রাজু শ্রীবাস্তবের আগেও অনেক অভিনেতা এই ধরনের ব্যায়াম করতে গিয়ে মারা গেছেন। যদিও কেন এমন হচ্ছে তা তাদের মেডিকেল রিপোর্ট দেখে বলা যাবে, তবে এখনও এমন অনেক কারণ রয়েছে যার কারণে জিমে ব্যায়াম করার সময় একজন ব্যক্তির জীবনও বিপন্ন হয়ে যেতে পারে।
স্টেরয়েড হয়ে উঠছে হার্ট অ্যাটাকের বড় কারণ-
ডাক্তার স্টেরয়েডকে সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। জিমে ব্যায়াম করা বেশিরভাগ যুবক শরীরকে সুশোভিত ও পেশীবহুল করার জন্য এটি সেবন করে, তবে এটি সরাসরি হৃৎপিণ্ডের ধমনী এবং শিরাগুলিকে দুর্বল করে দেয়। যখন একজন ব্যক্তি বেশি ব্যায়াম করেন, তখন হৃৎপিণ্ড দ্রুত গতিতে কাজ করে এবং রক্তের প্রবাহ বৃদ্ধি পায়, কিন্তু হৃৎপিণ্ড দুর্বল হওয়ার কারণে, এটি রক্ত প্রবাহের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না এবং এর ফলে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে।
ওষুধ খেলেও কম ঘুম হার্টকে দুর্বল করে দেয়-
ডাঃ সঞ্জীব আগরওয়াল আরও বলেন, কম ঘুমানো, ওষুধ খাওয়া, সঠিক সময়ে সঠিক ডায়েট না করা এবং মানসিক চাপের মধ্যে থাকাও হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে এই সব কারণ বলিউডে খুব সাধারন। সেখানে ব্যস্ত জীবনযাত্রায়, অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করা, পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া এবং মানসিক চাপও তাদের জীবনধারার অংশ। হার্টকে শক্তিশালী রাখতে জিমে যাওয়া যেকোনো ব্যক্তির উচিত সঠিক খাবার গ্রহণ করা। প্রচুর ফলমূল, সালাদ খান, ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ভালো ঘুম করুন এবং মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন, তাহলে হার্ট ও মন সুস্থ থাকে।
মেডিকেল পরীক্ষাও খুব গুরুত্বপূর্ণ-
হৃৎপিণ্ড দুর্বল হলে বা এতে কিছু ভুল থাকলে সময়ে সময়ে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে হয়। চিকিৎসক বলেন, হার্টে দুর্বলতা থাকলে কিছু লক্ষণ যেমন শ্বাসকষ্ট, দ্রুত হৃদস্পন্দন, হালকা বুকে ব্যথা, কাঁধের পেছনে ব্যথা, এগুলো এমন কিছু লক্ষণ যা উপেক্ষা করা উচিত নয়। ডাক্তারের মতে, লোকেরা এই উপসর্গগুলি উপেক্ষা করে এবং পরে তা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বা হার্ট অ্যাটাকের আকারে বেরিয়ে আসে।
আরও পড়ুন- হার্ট অ্যাটাক হলে পরিস্থিতি কেন গুরুতর হয়, মৃত্যুর আগে ঠিক কি হয়েছিল রাজু শ্রীবাস্তবের সঙ্গে
আরও পড়ুন- মুখের জন্য সিরাম কেন উপকারী, জেনে নিন কীভাবে ঘরে বসে ফেস সিরাম তৈরি করবেন
আরও পড়ুন- অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কি, দ্রুত ত্বককে বৃদ্ধ করে তোলে, জেনে নিন আরও কী কী সমস্যা রয়েছে
হার্ট অ্যাটাক এড়াতে আপনার ৫টি জিনিস জানা দরকার-
হার্টকে সুস্থ রাখতে চাইলে কম ঘুমানোর এবং গভীর রাতে ঘুমানোর অভ্যাস ত্যাগ করুন। রাতে কমপক্ষে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমান
স্ট্রেস হার্টের পাশাপাশি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারে, তাই স্ট্রেসমুক্ত জীবনযাপন করার চেষ্টা করুন। মানসিক চাপ এড়াতে যোগব্যায়াম ও ধ্যানের সাহায্য নিন।
জিম বা ওয়ার্কআউট থেকে শরীরকে টোনড বা পেশীবহুল করতে স্টেরয়েড একেবারেই ব্যবহার করবেন না। স্টেরয়েড স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক।
এছাড়াও, সাপ্লিমেন্ট বা অ-প্রয়োজনীয় হরমোনের ওষুধ খাওয়াও হার্টের জন্য ভালো নয়। একটি ভাল স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করুন যাতে কম চর্বি এবং কম চিনি থাকে। এছাড়াও ফাইবার বেশি থাকে এমন খাবার খান।
৩০ বছর পর প্রতি বছর আপনার মেডিকেল চেকআপ করুন এবং ৪০ বছর পর ডাক্তারের পরামর্শে হার্ট, বিপি, কোলেস্টেরল এবং সুগার পরীক্ষা করান।