সংক্ষিপ্ত

ভুয়ো ওয়েবসাইট সার্চ করে যেসমস্ত মানুষ বিনিয়োগের ফাঁদে পা দিতেন, তাঁদের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করার জন্য ওয়েলকাম কিট পাঠাত জালিয়াতরা।

ভুয়ো কল সেন্টারের পর এবার ভুয়ো ওয়েবসাইট। কল্লোলিনী কলকাতায় অসুর দমনে একের পর এক সাফল্য কলকাতা পুলিশের ঝুলিতে। এবার শহরের অন্দরে ভুয়ো ওয়েবসাইট খুলে কোটি কোটি টাকার প্রতারণার ছক ফাঁস হয়ে গেল পুলিশি তৎপরতায়।

ঝাঁ চকচকে ওয়েবসাইটে বহুবিধ বিনিয়োগের হদিশ। সেই হদিশের টোপে ফেলেই মানুষকে বোকা বানিয়ে কোটি কোটি টাকা লুটে গায়েব হয়ে যাওয়ার কারবার চলছিল জমিয়ে। কিন্তু, গোপন সূত্রে পুলিশের কানে গিয়ে পৌঁছল সেই জালিয়াতির খোঁজ।

প্রতারণা চক্রের তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশ গত ১৮ নভেম্বর গ্রেফতার করে ৪ প্রতারককে। এদের নাম সঞ্জয় যাদব, রাজেশ টুঙ্গার, বিবেক টুঙ্গার এবং যুবরাজ আগরওয়াল। ধৃত চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখার আধিকারিকরা দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে আরও দুই কারবারিকে। এরা হলেন ২৪ বছর বয়সী আরিহান্ত আগরওয়াল এবং ৩১ বছর বয়সী আশিস ত্রিবেদী।

পুলিশ সূত্রে খবর, জালিয়াতি করে তোলা কোটি টাকা বিভিন্ন আলাদা আলাদা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে দেওয়া হত, জালিয়াতদের হাতে ছিল কমপক্ষে এগারোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। ট্রান্সফারের পর সেই টাকা ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং অথবা এটিএমে গিয়ে নগদ হিসেবে তুলে নেওয়া হত। এ ভাবেই বড় অঙ্কের টাকা ছোট ছোট ভাগে ভাগও হয়ে যেত এবং কালো টাকাকে সহজে সাদাও করা হয়ে যেত।

লালবাজারের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, জালিয়াতি করে পাওয়া ১ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকার মধ্যে ১০ লক্ষ টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল কলকাতার কলাকার স্ট্রিটের আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের শাখায় একটি সংস্থার নামে খোলা অ্যাকাউন্টে। ৭৪ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছিল রাঁচির একটি ‘ডান্স অ্যান্ড ফিটনেস স্টুডিও’-র অ্যাকাউন্টে। তবে, তদন্তের মাধ্যমে দেখা যায় যে, এই দু’টি অ্যাকাউন্টই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে একটি মোবাইল নম্বর দ্বারা। সেই নম্বরের সূত্র ধরেই দেখা যায় মোবাইল নম্বরটি রেজিস্টার্ড রয়েছে ২৪ বছর বয়সী আরিহান্ত আগরওয়ালের নামে। তাঁর কাছ থেকে ওই নম্বরের সিম কার্ডটিও বাজেয়াপ্ত করা গেছে। আরিহান্তের সহযোগী ছিল আশিস ত্রিবেদী। ধৃত দু’জনকেই ৩০ নভেম্বর আদালতে তোলা হবে।

ধৃতদের তল্লাশি করে ৬টি সিমকার্ড, ৪টি মোবাইল ফোন এবং ৩টি ‘ওয়েলকাম কিট’ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ভুয়ো ওয়েবসাইট সার্চ করে যেসমস্ত মানুষ বিনিয়োগের ফাঁদে পা দিতেন, তাঁদের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করার জন্য এই ওয়েলকাম কিট পাঠাত জালিয়াতরা। এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে আরও বড় মাথা জড়িয়ে আছে কিনা, তা জানতে ধৃতদের কড়া জিজ্ঞাসাবাদ করছেন সাইবার অপরাধ দমন শাখার কর্তারা।


আরও পড়ুন-
শীতবস্ত্র বিতরণ নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদেশে তড়িঘড়ি হিঙ্গলগঞ্জে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক
বিশ্বভারতীর মাঠে কেন পৌষমেলা করা যাবে না, তা কর্তৃপক্ষের কাছে স্পষ্ট জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট
কেবলমাত্র পুরাণের বিষ্ণুর বাহন নয়, বাস্তবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নজরদার হতে চলেছে বাজপাখি