সংক্ষিপ্ত

  • জোর করে শোভনের বিজেপিতে যোগদান
  • শোভনকে বাধ্য় করানো হয়েছে, অভিযোগ রত্নার
  • বিজেপিতে থাকতে পারবেন না শোভন
  • শোভনকে সিড়ি করে একজন উঠতে চাইছে 
     

বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ইচ্ছাপ্রকাশের পরই ফের শোভন চট্টোপাধ্য়াযকে নিয়ে বিস্ফোরক খোলসা করলেন তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি,শোভনকে বিজেপিতে নিয়ে যেতে বাধ্য করেছিলেন একজন। 

মাত্র ১৫দিনেই বিজেপি বিচ্ছেদের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন শোভন-বৈশাখী। রাজ্য বিজেপির সদর দফতর মূরলীধর স্ট্রিটের হাওয়া বলছে,কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে কথা হওয়ার পরই এই ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী দলে পূর্ণ মর্যাদা পাচ্ছেন না বলেই দল ছাড়ার কথা বিজয়বর্গীয়কে জানিয়েছেন সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা এই জুটি। সবাই যখন শোভনের বিজেপি ছাড়ার কথা বলছেন, তখন ভিন্ন সুর শোনা গেছে তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের গলায়। বেহালা রবীন্দ্রনগরে পর্ণশ্রী ইউনাইটেড কাফের গনেশ পূজোর উদ্বোধনে রত্না চ্যাটার্জি বলেন, 'উনি বিজেপি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কিন্তু এখনও ছেড়ে আসেননি। আমার মনে হয়, যে কংগ্রেস পার্টি করে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছেন , সে কখনও একটা সাম্প্রদায়িক দলে গিয়ে থাকতে পারে না। তবে আমি জোর গলায় বলেতে পারি, শোভনবাবু স্বইচ্ছেয় বিজেপিতে যাননি। তাঁকে কেউ না কেউ বিজেপিতে যেতে বাধ্য করেছিল। কেউ যদি স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য শোভনবাবুকে সিড়ি হিসাবে ব্য়বহার করে অন্য় দলে গিয়ে ঘুঁটি সাজিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করবে, সেটা কোনওদিনও সম্ভব না। যে স্বার্থ চরিতার্থ হয়নি বলে চলে যাওয়া হয়েছিল, আবার সেইকারণেই ফিরে আসাও হচ্ছে। এখনও ফিরবেন কিনা সিদ্ধান্ত নেননি। তবে আমি মনে করি, ওই দল শোভনবাবুর পক্ষে করা কখনও সম্ভব নয়। শোভনবাবুকে ফিরতেই হবে।'

আরও পড়ুন :অমর্যাদার অভিযোগ, দল ছাড়তে চেয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চিঠি শোভন-বৈশাখীর

আরও পড়ুন :'পলিটিক্য়াল টুরিজম' করছেন, দেবশ্রী নিয়ে আপত্তিতে অনড় শোভন

রাজ্যের ওয়াকিবহাল মহলের মতে, আদতে শোভনকে বিজেপিতে যেতে বাধ্য করার পিছনে নাম না করে বৈশাখীর কথা বুঝিয়েছেন রত্না। এখন বিজেপিতে বৈশাখীর আঁতে ঘা লাগায় তিনি সেখানে থাকতে পারছেন না বলে বোঝাতে চেয়েছেন শোভন জায়া। এ নিয়ে অবশ্য মুখ খোলেননি শোভন-বৈশাখী। রাজ্য রাজনীতির সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বলছে,বিজেপির সংসারে মানিয়ে নিতে পারছেন না এই রাজনৈতিক জুটি। দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে যোগ দেওয়ার পর রাজ্য আসতেই বিগড়ে গিয়েছে সম্পর্কের তালমেল। মূলত, রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে বৈশাখীকে সরকারিভাবে আমন্ত্রণ না পাঠানোয় ক্ষুন্ন হন শোভন। এ নিয়ে প্রকাশ্যেই মুখ খোলেন বৈশাখী বন্দ্য়োপাধ্যায়। দলের এই আচরণে তিনি যে অপমানিত হয়েছেন, তা ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দেন তিনি। খবর রটে, বান্ধবীর এই অপমানের কারণে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আসবেন না বলে ঠিক করেছিলেন শোভন। উল্টে আগুনে ঘি পড়ে দিলীপ ঘোষের ডাল-ভাত মন্তব্যে। শোভন বৈশাখীর জুটি ব্যাখ্য়া করতে গিয়ে তাঁদের ডালভাত বলে বসেন দিলীপ ঘোষ। এমনকী সংবর্দনা মঞ্চে দিলীপবাবুর এই মন্তব্য যে তাঁর পছন্দ হয়নি তা সাংবাদিকদের বুঝিয়ে দেন বৈশাখী। 

এছাড়াও রয়েছে দেবশ্রী রায় প্রসঙ্গ। জানা গেছে, দেবশ্রী রায়কে দলে নেওয়া হবে কিনা তা দলের নিজস্ব সিদ্ধান্ত বলে জানিয়ে দিয়েছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। কিন্তু প্রথম থেকেই বিজেপিতে রায়দিঘির বিধায়কের যোগদান নিয়ে আপত্তি তোলেন শোভন। তাই দল তাঁদের কথায় গুরুত্ব না দেওয়ায় ইস্তফার ইচ্ছা পর্কাশ করেছেন তাঁরা। 

আরও পড়ুন :৭২ ঘন্টায় ঘুরে গেল খেলা, ইস্তফায় দলের সঙ্গে আরও দূরত্ব বাড়ালেন শোভন

আরও পড়ুন :দিলীপের বাড়িতে দেবশ্রী! যোগদান ঘিরে জল্পনা

সূত্রের খবর,বিজেপি থেকে নিষ্কৃতি চিঠিতে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন,তৃণমূলের চটিতেই পা গলিয়েছে বিজেপি। যেভাবে দলে অমর্যাদার স্বীকার হতে হচ্ছে তাতে এই পরিবেশে থাকা যায় না। বৈশাখীর দাবি, মিথ্যে কথা বলে তাঁদের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে। এই পরিবেশে কাজ করা যাচ্ছে না। এই পরিবেশে যদি কাজ করতে হত তাহলে পুরোনো দলেই থাকা যেত। বান্ধবীর বক্তব্য়ের সঙ্গে একমত শোভনও। বৃহস্পতিবার রাতে এনিয়ে নিজেদের মতামত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে জানিয়েছেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতায় কৈলাস বিজয়বর্গীয়র দক্ষিণ কলকাতার ফ্ল্য়াটে এ বিষয়ে কথা হয়েছে তাঁদের।