শীতকালে শরীরকে উষ্ণ রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কিছু বিশেষ খাবার খাওয়া জরুরি। এই নিবন্ধে আয়ুর্বেদ ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতে এমন ১০টি সুপারফুড সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। 

শীতকাল শীতলতা, সুস্বাদু খাবারের সুবাস এবং উষ্ণ পোশাকের আরামদায়ক অনুভূতি নিয়ে আসে। হালকা শীতের পাশাপাশি, দেশের কিছু রাজ্য এবং অংশে শীত এসে গেছে। বিশ্রাম এবং সুস্বাদু খাবারের পাশাপাশি, শরীরকে ঠান্ডা, কাশি এবং ক্লান্তির মতো সমস্যার সঙ্গেও লড়াই করতে হয়। তাই, এমন খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ যা শরীরকে উষ্ণ রাখে, শক্তি জোগায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে।

আয়ুর্বেদ এবং পুষ্টি বিশেষজ্ঞ উভয়ই বিশ্বাস করেন যে কিছু শীতকালীন সুপারফুড খাওয়া কেবল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় না বরং ত্বক, চুল এবং হাড়ের স্বাস্থ্যকেও শক্তিশালী করে। তাই, আজ আমরা এমন কিছু সুপারফুড শেয়ার করব যা আপনাকে অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং শীতকালে আপনার শরীরকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করতে পারে, রোগ থেকে রক্ষা করে। আসুন জেনে নেওয়া যাক এমন ১০ শীতকালীন সুপারফুড সম্পর্কে যা স্বাদ এবং স্বাস্থ্যের নিখুঁত সমন্বয়।

১) গুড়

শীতে গুড় খেলে শরীর ভেতর থেকে উষ্ণ থাকে। এতে উপস্থিত আয়রন, খনিজ পদার্থ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তকে বিশুদ্ধ করে এবং ক্লান্তি দূর করে। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে গুড় খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও শক্তিশালী হয়।

২) তিল

তিলের বীজে ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক এবং তিল থাকে, যা হাড়কে শক্তিশালী করে। এগুলি ত্বককে শুষ্কতা থেকেও রক্ষা করে এবং প্রাকৃতিক তেল বজায় রাখে। তিলের বীজ থেকে তৈরি লাড্ডু বা চিক্কি শীতকালে এটি খাওয়ার একটি সুস্বাদু উপায়।

৩) মধু

মধুতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শরীরকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। সকালে হালকা গরম জলে এক চা চামচ মধু এবং লেবু মিশিয়ে পান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় থাকে।

৪) শুকনো ফল

বাদাম, কাজু, আখরোট এবং কিশমিশ শীতকালে শরীরকে উষ্ণ রাখে। এতে স্বাস্থ্যকর চর্বি, ওমেগা-৩ এবং প্রোটিন থাকে, যা পেশী শক্তিশালী করে এবং মনকে সক্রিয় রাখে।

৫) গাজর

প্রিয় শীতকালীন সবজি গাজর, বিটা-ক্যারোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ। এগুলি দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে। গাজরের হালুয়া একটি সুস্বাদু, স্বাস্থ্যকর শীতকালীন মিষ্টি।

৬) স্যুপ এবং পোরিজ

গরম স্যুপ এবং পোরিজ শীতকালে শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখে। এগুলি সহজে হজম হয় এবং শরীরকে প্রয়োজনীয় প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে। সবজির স্যুপ বা মুগ ডালের দোল শীতের জন্য একটি নিখুঁত খাবার।

৭) আমলকি

আমলা ভিটামিন সি-এর একটি সমৃদ্ধ উৎস, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করে। প্রতিদিন আমলা রস বা জাম খেলে ঠান্ডা লাগা, ত্বকের সমস্যা এবং চুল পড়া প্রতিরোধ করা যায়। এই কারণেই এটিকে শীতের "সবচেয়ে শক্তিশালী সুপারফুড" বলা হয়।

৮) মূলা

মূলায় উপস্থিত এনজাইমগুলি লিভার পরিষ্কার করে এবং হজম ব্যবস্থা উন্নত করে। এটি ত্বককে একটি প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতাও দেয়। মূলার পরোটা বা সালাদ শীতকালে শরীরকে ঠান্ডা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

৯) সবুজ শাকসবজি

পালং শাক, সরিষা, ভাদুয়া, মূলা, লাল পালং শাক এবং মেথির মতো সবুজ শাকসবজি শীতকালে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এগুলিতে ফাইবারের সঙ্গে ভিটামিন এ, সি এবং কে থাকে, যা শরীরের ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। সরিষার শাক এবং ভুট্টার রুটি হল সেরা সংমিশ্রণ।