Health News: রাগ মানব মনের একটি স্বাভাবিক আবেগ হলেও, অতিরিক্ত বা দীর্ঘস্থায়ী রাগ শরীরের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। রাগ কেবল মানসিক শান্তিই নষ্ট করে না, বরং শরীরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষতি করে। 

Health News: রাগ মানুষের স্বাভাবিক আবেগ হলেও অতিরিক্ত বা দীর্ঘস্থায়ী রাগ শরীরের ওপর যে কতটা ভয়াবহ প্রভাব ফেলে, তা অনেকেই জানেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাগ শুধু মানসিক অস্থিরতাই বাড়ায় না, শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

কীভাবে রাগ কন্ট্রোল করবেন?

তবে সবকিছুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয় আমাদের হৃদযন্ত্র বা কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম।রাগ লাগলেই শরীরের ভেতর শুরু হয় ‘ফাইট অর ফ্লাইট’ প্রতিক্রিয়া। এতে দ্রুত নিঃসরণ হয় অ্যাড্রেনালিন ও কর্টিসলসহ নানা স্ট্রেস হরমোন। এই প্রক্রিয়া হৃদযন্ত্রের ওপর চরম চাপ সৃষ্টি করে।

হৃদস্পন্দন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। রক্তনালিগুলো সংকুচিত হয়ে রক্তচাপ হঠাৎই উঁচুতে ওঠে। রক্তে প্লাটিলেট দ্রুত জমাট বাঁধতে থাকে।

গবেষণা বলছে, তীব্র রাগের পর দুই ঘণ্টা পর্যন্ত হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি প্রায় পাঁচ গুণ পর্যন্ত বেড়ে যায়। যারা প্রায়ই রেগে যান, তাদের উচ্চ রক্তচাপ, করোনারি আর্টারি ডিজিজ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি আরও বেশি।

হৃদযন্ত্রের পাশাপাশি মস্তিষ্ক ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গও রাগের শিকার হয়।যেমন :

মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কর্টিসলের অতিরিক্ত নিঃসরণ হিপোক্যাম্পাসসহ মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ নিউরন ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। রক্তনালির দ্রুত প্রসারণ-সংকোচনের ফলে তীব্র মাথাব্যথা বা মাইগ্রেনের মতো সমস্যাও দেখা যায়।

হজমতন্ত্র আমাদের অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। রাগ হলে রক্ত অধিকাংশই হৃদযন্ত্র ও পেশির দিকে প্রবাহিত হয়, ফলে হজমতন্ত্রে রক্তের সরবরাহ কমে যায়। এর কারণে এসিডিটি, আলসার এবং ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমসহ নানান হজমজনিত সমস্যা বাড়তে পারে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর প্রভাব পড়ে। দীর্ঘস্থায়ী স্ট্রেস হরমোন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়, ফলে সহজেই সর্দি-কাশি বা বিভিন্ন সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।

প্রাচীন আয়ুর্বেদ ও চাইনিজ মেডিসিনে রাগকে লিভারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত মনে করা হলেও, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের মূল ফোকাস জীবনহানির ঝুঁকিতে থাকা হৃদযন্ত্রের ওপর। তাই রাগকে দমন নয়, স্বাস্থ্যকর উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করাই দীর্ঘ, সুস্থ ও শান্তির জীবনের অপরিহার্য অংশ।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।