একমাত্র রান্নার তেলই পারে বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে, মার্কিন গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য

বাল্যবিবাহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির জ্বলন্ত সংস্যা। বাংলাদেশ রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। কীভাবে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা যায় তাই নিয়েই গবেষণা করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বিশ্ববিদ্যালয়। 
 

বাল্যবিবাহ বাংলাদেশের একটি জ্বলন্ত সমস্যা। বাল্য বিবাহের শীর্ষে রয়েছে আফ্রিকার দেশ নাইজার। দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। এই সমস্যা থেকে নিস্তার পাওয়া যায় কী করে? তা নিয়েই একটি গবেষণা আর সমীক্ষা করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড আর ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়। তাতেই উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। গবেষণা রিপোর্ট বলা হয়েছে একমাত্র রান্না তেলই পারে বাংলাদেশে বাল্য বিবাহের হার কমিয়ে দিতে। সমস্যা সমাধানে বেশ কয়েক বছর গবেষণার পর সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। তাতেই বলা হয়েছে গৃহস্থালীর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভোজ্য তেল সরবরাহের মাধ্যমে বাংলাদেশে কমিয়ে বাল্যবিবাহের হার কমানো যেতে পারে। 


বাংলাদেশের বাল্যবিবাহের সমাপ্তির লক্ষণ:তত্ত্ব ও পরীক্ষামূলক প্রমাণ শীর্ষক এই গবেষণায় বলা হয়েছে রান্নার তেল বিলি করায় ১৮ বছরের কম বয়সীদের বিয়ে প্রায় ১৭ শতাংশ বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। ১৬ বছরের নিচে বিয়ের হার হ্রাস পেয়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ। গবেষক দল ১৫-১৭ বছর বয়সীদের পরিবারের ভোজ্য তেল সরবরাহ করেছিল। পরিবারগুলিকে বলা হয়েছিল এই ভোজ্য তেল দেওয়ার পরিবর্তে তাদের বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হবে। দেখা গেছে বহু পরিবারই এই দাবি মেনে নিয়েছিল। বাংলাদেশের মহিলাদের বিয়ের বয়স ভারতের মতই ১৮। 

Latest Videos

কোভিড ১৯এর মধ্যেই মারাত্মক আকার নিচ্ছে কালো ছত্রাক, মৃত্যুর হার প্রায় ৫০ শতাংশ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা 'save the child' এর উদ্যোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এই সমীক্ষা করেছিল। নেতৃত্বে ছিলেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের নিনা বুকম্যান। দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলাদেশের প্রায় ৬টি জেলার ৪৬০টি গ্রামীণ পরিবারের জনগোষ্টীর কয়েক হাজার মেয়ের মধ্যে এই সমীক্ষা করা হয়েছিল।  গবেষকদের মতে রান্নার তেল বাংলাদেশের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি গৃহস্থালীর সামগ্রী। আর সেই কারণেই এটি বেছে নেওয়া হয়েছিল সমীক্ষার জন্য। বাংলাদেশে ভোজ্য তেলের দামও যথেষ্ট বেশি। পরিবহন খরচের তুলনায় ভোজ্য তেলের দাম বেশি। প্রতিটি পরিবারই এটি কেনে। ২০০৭ সাল থেকে ২০১৭  সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরেই এই সমীক্ষা চালান হয়েছিল। তারপরেই সেই সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। 

হলুদ নদীর জলে ভাসছে চিন, ভয়ঙ্কর বন্যা পরিস্থিতিতে সংকটে শি জিংপিং সেনা নামালেন

বিশ্বের একাধিক দেশেই বাল্য বিবাহ বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছ। কিন্তু তারপরেই বন্ধ করা যায়নি এই প্রাচিন প্রথাটি। ২০২০ সালে  রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্টে বলা হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে ১৮ বছর হওয়ার আগেই প্রায় ২৯ শতাংশ মহিলার বিয়ে হয়ে যায়। এই এলাকার মহিলাদের বিয়ের গড় বয়স ২০-২৪। বাংলাদেশে ৫১ শতাংশ মহিলারই ১৮ আগে বিয়ে হয়ে যায় বলেও রিপোর্ট অনুমান করা হয়েছে। বিশ্বের প্রতি তিনটি শিশুর মধ্যে ভারতের একটি শিশুর বিয়ে হয় ১৮র আগে। ছেলেদের তুলনায় বাল্যবিবাহের হার মেয়েদের মধ্যেই বেশি। তারই প্রভাব পড়ছে মেয়েটির শরীর আর তাঁর সন্তানের ওপর। বন্ধ হয়ে যায় পড়শুনাও। 

মিথ ভেঙে মক্কার নিরাপত্তায় মহিলা সেনা, হজের পবিত্র সময় কর্তব্য পালনে অটল সৌদির মহিলারা

যেসময় গবেষণার সময় সংশ্লিষ্টদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বাড়ির মেয়েটির ১৮ হওয়ার আগে বিয়ে দিতে পারবে না- পরিবর্তে তাদের সামনে দুটি শর্ত রাখা হয়েছিল। একটি ছিল বিনা মূল্য রান্নার তেল সরবরাহ, দ্বিতীয়টি ছিল, ক্ষমতায়নের প্রশিক্ষণ। ১৫-১৭ বছরের মেয়ের পরিবারে বছরে ১৬ ডরাল তেল কিনে দেওয়া হয়েছিল। তাতে ২ বছর পর দেখা যায় অধিকাংশ অবিবাহিত রয়েছে। 

অন্যদিকে ক্ষমতায়নের প্রশিক্ষণ হিসেবে ১০-১৯ বছর বয়সীদের একাধিক হাতের কাজ শেখান হয়েছিল। মহিলাদের আইনি অধিকার, পুষ্টি, প্রজননেরও পাঠ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই কর্মসূচিতে রক্ষণশীল পরিবারের মহিলাদের সংখ্যা ধীরে ধীরে হ্রাস পেয়েছিল বলেও জানান হয়েছে রিপোর্টে। তবে এই বিভাগে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মহিলাদের মধ্যে যৌতুকের প্রভাব ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যৌতুকের নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় এই কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। 

Share this article
click me!

Latest Videos

‘West Bengal-এ জঙ্গিদের সরকারের মুখোশ Mamata Banerjee’ Suvendu Adhikari-র ঝাঁঝালো তোপ মমতাকে
লজ্জা মমতার! জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্য এই বাংলা!| Suvendu Adhikari #shorts #shortsvideo #suvenduadhikari
'উল্টো ঝুলিয়ে সোজা করব', এগরার জনসভায় এসে কাকে বললেন Suvendu Adhikari ?
PM Modi Live : কুয়েতে Gulf Spic-এর ভারতীয় কর্মীদের সঙ্গে আড্ডা মোদীর, দেখুন সরাসরি
Narendra Modi : কুয়েতের সঙ্গে সম্পর্কে জোর ভারতের, দেখুন কী বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী