কলকাতার জন্য মনকেমন করবে না? প্রশ্নের জবাবে পর্দার ‘আইনজীবী’ অকপট, ‘‘অবশ্যই করবে। কিন্তু পরিস্থিতির সঙ্গে সব সময়েই মানিয়ে চলতে হয়।’’
কলকাতায় থাকলে অনেক কিছু করতেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। বাজি পোড়াতেন। কব্জি ডুবিয়ে খাওয়াদাওয়াও সারতেন। বিশেষ করে পাঠাঁর মাংস তো খেতেনই। আর ভার্চুয়ালি ভাইফোঁটা। দীপাবলি আর ভ্রাতৃদ্বিতীয়া মিলিয়ে প্রতি বছরেই জমজমাট পরিকল্পনা থাকে তাঁর। এ বছর নতুন ছবি নোটারির শ্যুটিংয়ের কারণে অভিনেতা ভোপালে। চলতি মাস কাটবে সেখানেই। দীপাবলি কি তা হলে মাঠে মারা গেল? এশিয়ানেট নিউজ বাংলা ফোনে যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে। প্রযোজক-পরিচালক-অভিনেতা বলেছেন, ‘‘কলকাতায় থাকলে যে ভাবে দিনটা কাটাতাম ভোপালে সেটা সম্ভব নয়। তাই পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিকল্পনা বদলে ফেলেছি। সাধারণত প্রতি বছরেই নিজের শহরে থাকি। এ বছর অন্য শহরে। কাজ উপলক্ষে নতুন অভিজ্ঞতা হবে। এ বার ভোপালের দীপাবলি দেখব।’’
বিশেষ দিনে পরমব্রতর বিশেষ পরিকল্পনা কী? কালীপুজোর ভোরেই তিনি ছবির প্রযোজক এবং পরিচালককে নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন মহাকালেশ্বর মন্দিরে। নিম্নচাপের কারণে আকাশ মেঘলা। বাতাস ভেজা। এই আবহাওয়ায় জিন্সের জ্যাকেট, টি শার্ট আর ট্র্যাক প্যান্টে সেজে পুজো দিতে গিয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়াও, এ দিন আবহাওয়া ঠিকঠাক থাকলে টিম ‘নোটারি’কে নিয়ে ক্রিকেট ম্যাচ খেলার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। দুপুরের মেনু পাঁঠার মাংস-ভাত। পরমব্রতর গাড়ির চালক তাঁর এই শখ মেটাবেন, এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
কলকাতায় থাকলে এ দিন সবাইকে নিয়ে প্রতি বছর প্রচুর বাজি পোড়ান। ছোট বেলায় শব্দবাজিও পুড়িয়েছেন। তখন কালীপুজো আর দিওয়ালি— দু’দিনের বাজি গুছিয়ে তুলে রাখতেন। ভাই-বোনেরা এক সঙ্গে হলেই সব বাজি এক জায়গায় নিয়ে হইহই করে মেতে উঠতেন সবার সঙ্গে। শব্দবাজি নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে পরমব্রতও অভ্যাস বদলে নিয়েছেন আলোর বাজিতে। বড় হওয়ার পরে উৎসবের তালিকায় ধনতেরাস জুড়েছে? অভিনেতার মতে, এই পরব বাঙালিদের নয়। তাই ছোটবেলায় ধনতেরাস কী?— সেটাই জানতেন না। বড় হয়ে চেনাজানার গণ্ডি বাড়তেই এই উদযাপন সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল হয়েছেন। যদিও ধনতেরাস নিয়ে তাঁর কোনও মাতামাতি নেই।
এ ছাড়াও রয়েছে ভাইফোঁটা। পরমব্রতর কথায়, ‘‘ছোট বেলায় এই অনুষ্ঠানও ভীষণ ধুমধাম করে হত। সমস্ত ভাই-বোনেরা মিলে সে এক জমকালো আয়োজন। বড় হওয়ার পরে পেশার তাগিদে আমরা সবাই ছড়িয়ে গিয়েছি। কোনও ভাই থাকে বিদেশে। কোনও বোন দেশেরই অন্য প্রান্তে। ভাইফোঁটার দিনে এখনও আমরা মিলিত হই। তবে ভার্চুয়ালি। ল্যাপটপে ভিডিয়ো কলে তখনই ভাইফোঁটাও সেরে নিই।’’ কলকাতার জন্য মনকেমন করবে না? প্রশ্নের জবাবে পর্দার ‘আইনজীবী’ অকপট, ‘‘অবশ্যই করবে। কিন্তু পরিস্থিতির সঙ্গে সব সময়েই মানিয়ে চলতে হয়। পরপর দু’দিন ছুটির কারণে ইউনিটের সবাই খুশি। উৎসব উপলক্ষে মিষ্টিমুখ, উপহার দেওয়ানেওয়ার পালা তাই ওঁদের সবার সঙ্গেই সারব।’’