ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনকে নিয়ে বিতর্ক চলছেই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের জন্য গলা ফাটাচ্ছেন তখন একাধিক গবেষক করোনা চিকিৎসায় এর কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন। সম্প্রতি বিশ্বের বিখ্যাত মেডিক্যাল জার্নাল ল্যান্যানসেটের প্রতিবেদনেও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। তার পরেই গত ২৫ মে এই ওষুধটির পরীক্ষামূলক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যদিও চলতি সপ্তাহে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে 'হু'। বরং ফের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ট্রায়াল চালানোর নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কিন্তু 'হু'-এর এই ঘোষণার পরেই নতুন এক ট্রায়ালে উঠে এসেছে ইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারের হতাশাজনক ফল।
সম্প্রতি ব্রিটেনের গবেষণা ও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে উঠে এসেছে করোনা প্রতিরোধে ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সেবনের কোনও উপকারিতা নেই। বরং করোনা আক্রান্তদের শরীরে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তাই এই ওষুধটির প্রয়োগ ও ট্রায়াল এখনই বন্ধ করা উচিত বলে মত দিয়েছেন গবেষকরা।
নিজের সিদ্ধান্ত থেকে এবার পিছু হটল 'হু', ফের শুরু হচ্ছে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল
এবার ইতালিকে সরিয়ে বিশ্বে করোনা সংক্রমণে ৬ নম্বরে ভারত, দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় ফের নয়া রেকর্ড
আমেরিকায় ১৯ লক্ষ ছাড়াল আক্রান্তের সংখ্যা, ট্রাম্পের দাবি প্রস্তুত করোনা ভ্যাকসিনের ২০ লক্ষ ডোজ
এই প্রসঙ্গে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও সহ-গবেষক মার্টিন লন্ড্রি বলেছেন, ‘আমরা এই বলে সমাপ্তি টানতে চাই যে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মৃত্যু ঝুঁকি কমাতে পারে না। কেবল যুক্তরাজ্যেই নয়, অনেক দেশেই এটার প্রয়োগ হচ্ছে, যা বন্ধ করা উচিত।’
এই গবেষণার জন্য ব্রিটেনের ১৭৫টি হাসপাতালের ১১ হাজার রোগীকে বাছাই করা হয়। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৫৪২ জনকে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দেওয়া হয়। অন্যদিকে ৩ হাজার ১৩২ জনকে আলাদাভাবে দেওয়া হয় কেবল চিকিৎসা পরিষেবা। কিন্তু মৃতের হারে উল্লেখযোগ্য কোনও পার্থক্য পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি এই গবেষণায় ম্যালেরিয়ার এই ওষুধ প্রয়োগে রোগীদের হাসপাতালে থাকার সময়ও কমে আসার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের প্রফেসর পিটার ওপেন’শ বলেছেন, গবেষণা উঠে আসা এই ফল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। "আমরা স্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছি যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের ওপর হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের কোনও প্রভাব নেই। করোনার চিকিৎসায় এটা প্রয়োগের কোনও উপকারিতা নেই।" পাশাপাশি গবেষকরা মানব দেহের জন্য ওষুধটিকে বিষাক্তও বলছে। সেই কারণে এর ট্রায়াল ও প্রয়োগ এখনই বন্ধ করা উচিত বলে মনে করছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরাও। এর আগে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানিয়েছিল, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রোগীর হৃদস্পন্দন নষ্ট করতে পারে।