ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ভারতীয় বংশোদ্ভুত ঋষি সুনকের সম্পত্তির মোট পরিমাণ ব্রিটেনের রানীর থেকেও বেশি। জেনে নিন কে এই ঋষি সুনক।
ইনফোসিস কর্তা নারায়ণ মূর্তির জামাই ভারতীয় বংশোদ্ভুত ঋষি সুনক বর্তমানে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীত্বের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। তার সম্পত্তির পরিমাণ শুনলে চমকে উঠবেন। তার সম্পত্তির বেশিরভাগটাই তার স্ত্রীয়ের। তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির বাবা নারায়ণ মূর্তি ভারতীয় প্রযুক্তি জায়ান্ট ইনফোসিস এর সহ প্রতিষ্ঠাতা। কোম্পানিতে অক্ষতার শেয়ারের মূল্য প্রায় ৪৩০ মিলিয়ন পাউন্ড। যা ব্রিটেনের রানীর থেকেও বেশি। সুনক এবং তার স্ত্রী দুজনের সম্পত্তির মোট পরিমাণ ৭৩০ মিলিয়ন পাউন্ড। এর পাশাপাশি ভারতে অ্যামাজনের সঙ্গে অক্ষতার পরিবারের ৯০০ মিলিয়ন পাউন্ডের যৌথ উদ্যোগ রয়েছে। অক্ষতা মূর্তি নিজে ব্রিটেনে একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানির মালিক। এছাড়াও ব্রিটেনের অন্যান্য পাঁচটি কোম্পানিতে ডিরেক্টর অথবা সরাসরি শেয়ারহোল্ডার হিসেবে রয়েছেন।
কিন্তু ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিসে অক্ষতামূর্তির অংশীদারিত্ব এবং সেখান থেকে প্রাপ্ত আয় বাবদ ব্রিটেনে কর না দেওয়া নিয়ে বিগত কয়েক মাস ধরেই আলোচনা চলছে। এ প্রসঙ্গে ঋষি বলেন, ‘আমি ব্রিটেনের করদাতা। আমার স্ত্রী অন্য দেশের। তাই তাঁর ক্ষেত্রে নিয়মটা আলাদা। বিষয়টা মিটে গিয়েছে।’ঋষি ব্রিটেনের নাগরিক হলেও, তাঁর স্ত্রী সে দেশের পাসপোর্ট নেননি। অক্ষতার যুক্তি, ভারতের নাগরিক হিসেবে তাঁর দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ নেই। ব্রিটেনের কর ব্যবস্থায় অক্ষতা ‘নন-ডোমিসাইলড’ হিসাবে চিহ্নিত। যাঁরা ব্রিটেনের স্থায়ী নাগরিক নন, তাঁদের এই তকমা দেওয়া হয়। বিদেশ থেকে তিনি যে আয় করেন তার জন্য ব্রিটেনে তাঁকে কর দিতে হয়না।
আরও পড়ুনঃ
বিলেতের প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী কি ঋষি সুনাক? ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর লড়াইয়ে অনেক এগিয়ে তিনি
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আমি হতাশ- আদালত অবমাননা মামলায় প্রতিক্রিয়া বিজয় মালিয়ার
কে এই ঋষি সুনক., যার এক ইস্তফাতে পতন হল জনসনের সাম্রাজ্যের
ইনভেস্টার ব্যাঙ্কর হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন ঋষি। রাজনীতিতে নামার আগে তিনি ছিলেন পুরোদস্তুর এক জন বিনিয়োগ ব্যবসায়ী। ব্রিটেনের অন্যতম বৃহৎ বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের তিনি ছিলেন এক জন সহপ্রতিষ্ঠাতা। ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালি থেকে বেঙ্গালুরু তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থা সবেতেই ছিল তাঁর সংস্থার বিনিয়োগ। ২০১৫ সালে কনজারভেটিভের হয়ে ভোট দাঁড়িয়ে রিচমন্ড ইয়র্কশায়ার থেকে জিতে সাংসদ হন তিনি। তার পর আর তাঁকে ফিরে তাকাতে হয়নি। দলে ক্রমশই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন ঋষি। বরিসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার আগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর একনিষ্ঠ সমর্থন ছিলেন তিনি। ফলে তাঁর মন্ত্রিসভাতে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ঋষি। তরুণ তুর্কি হিসাবে কনজারভেটিভ পার্টিতে তিনি ছিলেন জনপ্রিয় মুখ। সরকারি মুখপাত্র হিসাবে তাঁকে টিভি-রেডিয়োর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পাঠাতেন বরিস। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ান থেকে বেরিয়ে আসার প্রচারে তিনি বরিসের সঙ্গী ছিলেন। অতিমারির সময় ব্যবসায়ী এবং কর্মচারীদের জন্য বিপুল অর্থমূল্যের আর্থিক প্যাকেজ তৈরি করে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন ঋষি। সেই সময় তাঁর দলের ওয়েবসাইটে তাঁকে দেশের ‘পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছিল। ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে ঋষি। যদি তার জয় হয় তাহলে ঋষি সুনোক হবেন ব্রিটেনের প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রী।