পত্রলেখা বসু চন্দ্র, বর্ধমান: জিএসটি ইস্যুতে যখন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে রাজ্য, তখন বকেয়ার অজুহাতে বর্ধমানের বেশ কয়েকটি পুরসভার অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হল। তাহলে কি এবার জিএসটিকে হাতিয়ার করে মোদি সরকার পুর পরিষেবা বন্ধ করে দিতে চাইছে? প্রশ্ন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: সাইবার প্রতারকদের নিশানায় উপাচার্য, শোরগোল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে
তখনও জিএসটি চালু হয়নি। ২০১৫-১৬ সালে পূর্ব বর্ধমান জেলায় অপটিক্যাল ফাইবার বসানোর কাজ করে একটি বেসরকারি মোবাইল পরিষে বা প্রদানকারী সংস্থা। নিয়মমাফিক নির্দিষ্ট হারে ফিও দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিকে। এরপর ওই ফি-এর উপর কর চেয়ে তৎকালীন সার্ভিস ট্যাক্স ডিপার্টমেন্ট থেকে চিঠি দেওয়া হয় বর্ধমান পুরসভায়। পুরসভার সূত্রে খবর, প্রথমে রাজি না হলেও পরের কর বাবদ প্রাপ্য টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়। এমনকী, পরবর্তীকালে যখন জিএসটি চালু হয়, তখন মোবাইল সংস্থার বাড়তি টাকা আদায় করে তা জমা দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ঘটনা হল, টাকা মিটিয়ে দেওয়ার পরেও বকেয়া জিএসটি কারণ দেখিয়ে বর্ধমান পুরসভার একটি অ্যাকাউন্ট ব্যাংককে ফ্লিজ করে দিতে বলা এবং ব্যাংক তা করেও দেয়!
স্রেফ বর্ধমান পুরসভাই নয়, একই কারণ দেখিয়ে ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে কাটোয়া পুরসভার প্রধান অ্যাকাউন্টটিও। অভিযোগ, সার্ভিস ট্য়াক্সের সুদ বাবদ ৬ লক্ষ টাকা জমা পড়েনি! পুরসভা প্রশাসক তথা বিদায়ী চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, পুরসভার তরফে নিয়মাফিক সার্ভিস ট্যাক্স দিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরে যে বেসরকারি মোবাইল সংস্থা এলাকায় অপটিক্যাল ফাইবার বসিয়েছেন, সেই সংস্থার তরফে জানানো হয়, তাদের সার্ভিস ট্যাক্স মকুব করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানোর পর সমস্যা মিটেও গিয়েছিল। এখন আবার আগাম নোটিশ ছাড়াই ৬ লক্ষ বকেয়া দাবি করে অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাটি খুঁড়ে উদ্ধার বন্দুক-মাইন-যন্ত্রাংশ, আগ্নেয়াস্ত্রগুলি মাওবাদীদের বলে অনুমান পুলিশের
জানা গিয়েছে, বর্ধমান পুরসভার যে অ্য়াকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে, সেটি প্রধান অ্য়াকাউন্ট নয়। ফলে সেক্ষেত্রে পুর পরিষেবা চালু রাখতে তেমন সমস্য়া হবে না। কিন্তু প্রধান অ্যাকাউন্টটি ফ্রিজ করায় সমস্যায় পড়েছে কাটোয়া পুরসভা কর্তৃপক্ষ। অ্যাকাউন্টটি চালু না হলে পুর পরিষেবা বিঘ্নিত হতে পারে, সেকথা স্বীকার করে নিয়েছেন প্রশাসক তথা বিদায়ী চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্য়ায়।