পত্রলেখা বসু চন্দ্র, বর্ধমান: জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে যখন উত্তাল গোটা বিশ্ব, তখন কৃষ্ণাঙ্গ বিতর্ক মাথাচাড়া দিল বাংলাতেও! সরকারি স্কুলে প্রাক-প্রাথমিক স্তরে পড়ুয়াদের বর্ণবিদ্বেষী পাঠ দেওয়ার অভিযোগে সাসপেন্ড হলেন দুই শিক্ষিকা।শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, অনুমোদিত তো নয়ই, বইটি সরকারি ছাপাখানায় ছাপাও হয়নি। নিজেদের উদ্যোগে স্কুলে বইটি পড়ানো হচ্ছিল।
আরও পড়ুন: রাইস মিলের সামনে মিলল 'রেশনের চাল', শোরগোল বাঁকুড়ায়
বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল বালিকা বিদ্যালয়। স্কুলটিতে আগে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্তই পঠনপাঠন চলত। বছর তিনেক হল, প্রাক-প্রাথমিক বিভাগও চালু হয়েছে। কিন্তু প্রাক-প্রাথমিকে পড়ুয়াদের এ কেমন ইংরেজি বই পড়ানো হচ্ছিল! বইটিতে 'ইউ' অক্ষরের সঙ্গে পরিচয় ঘটাতে 'আগলি' শব্দটি লেখা হয়েছে। শব্দটির অর্থ যে 'কুৎসিত', তাও লিখে আছে, আর সঙ্গে দেওয়া হয়েছে এক কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের ছবি! ঘটনাটি জানাজানি হতেই সমালোচনা ঝড় ওঠে। পূর্ব বর্ধমান জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক স্বপনকুমার দত্তকে আপত্তির কথা জানান বর্ধমান শহরের রামকৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা সুদীপ মজুমদার। তিনি আবার কলকাতার বঙ্গবাসী কলেজের সান্ধ্য বিভাগের অধ্য়াপকও বটে। আর তাতেই কাজ হয়। বৃহস্পতিবার বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষিকা শ্রাবণী মল্লিক ও প্রাক-প্রাথমিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষিকা বর্ণালী রায়কে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: করোনা আবহে ভুয়ো ডাক্তারের পর্দাফাঁস. চেম্বার থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ
শিক্ষামহলের বক্তব্য, ইংরেজি অক্ষর 'ইউ ফর আগলি'-র উদাহরণ হিসেবে এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির ছবি ব্যবহার করা হয়েছে বই-এ। অর্থাৎ শিশুদের শেখানো হচ্ছে, কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির মানে কদাকার বা কুৎসিত। ঘটনার জন্য শাস্তিপ্রাপ্ত দুই শিক্ষিকা-সহ স্কুলের সকলেই অবশ্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ঘৃণ্য বিষয়টি যে বইতে ছিল, তা তাদের নজর এড়িয়ে গিয়েছে।