দ্য ফেডেরেশন অব অটোমোবাইল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে ইতমধ্যেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছে বেশ কিছু প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হয়েছে। গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো মনে করছে এবারের ইউনিয়ন বাজেট অটোমোবাইল শিল্পকে ফের চাঙ্গা করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
অতিমারি করোনা পরিস্থিতির (Covid 19) মধ্যেই আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে পেশ হবে ২০২২-২৩ অর্থ বর্ষের ইউনিয়ন বাজেট (Union Budget)। আর এই বিজেটকে ঘিরে বিভিন্ন সেক্টরের প্রত্যাশার পারদ ক্রমশ চড়ছে। সেই তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে না অটোমোবাইল ইন্ডাসট্রিও (Automobile Sector)। বিগত দু বছর ধরে করোনা রুপ পরিবর্তন করে ক্রমশ দুর্বিসহ করে তুলছে দৈনন্দিন জীবন। সেই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রেও একটা বিরাট প্রভাব ফেলেছে করোনা। কোভিড পরিস্থিতিতে আর্থিক পরিকাঠামো একেবারে তলানি এসে ঠেকেছিল। একদিকে যেমন মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে তেমনই আবার মানুষের পকেটে টানও পড়েছে। এই সব কিছুর মাঝে একেবারে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে অটোমোবাইল শিল্প (Auto Industry)। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের দাপটে করোনা সংক্রমণের গ্রাফ ফের উর্ধ্বমুখী হয়েছে। যে কোনও সময়ই আছড়ে পড়তে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ। তাই এই রকম কঠিন পরিস্থিতিতে অটোমোবাইল শিল্পকে বাঁচাতে বাজেট থেকে একটা বিরাট প্রত্যাশা রয়েছে এই সেক্টরের। গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো মনে করছে এবারের ইউনিয়ন বাজেট (Union Budget) অটোমোবাইল শিল্পকে (Automobile Industry) ফের চাঙ্গা করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সেই আশাতেই বুক বাঁধছ অটো ইন্ডাস্ট্রি।
উল্লেখ্য, দ্য ফেডেরেশন অব অটোমোবাইল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে ইতমধ্যেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছে বেশ কিছু প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হয়েছে। দেশের মোট জিডিপির (GDP) ৭.১ শতাংশ আসে ৮ লক্ষ কোটি টাকার এই শিল্পক্ষেত্র থেকেই। সেই কারণেই অটোমোবাইল শিল্প ধাক্কা খেলে, তার সরাসরি প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক অর্থমন্ত্রকের কাছে যে প্রস্তবনা জমা দেওয়া হয়েছে সেখানে কী কী বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে।
আরও পড়ুন-OLA: বড় ঘোষণা ওলার, উন্নত প্রযুক্তির গাড়ির ডিজাইন করবে ব্রিটেনের ফিউচারফাউন্ড্রি
আরও পড়ুন-Toyota-র এই গাড়িটি কিনতে অপেক্ষা করতে হবে ৪ বছর, জেনে নিন এর কারণ
আরও পড়ুন-করোনাকালে মন্দা গাড়ি বাজার, ইউনিয়ান বাজেটে গাড়ি ও যন্ত্রাংশের ওপর জিএসটি ১৮ শতাংশ করার আবেদন FADA-এর
দ্য ফেডেরেশন অব অটোমোবাইল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন বা এফএডিএ-র তরফে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে অবমূল্যায়ন স্কিমের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানানো হয়েছে। ২০২০ সালের ৩১ মার্চ অবধি এই সুবিধা প্রযোজ্য ছিল। আসন্ন বাজেটে গাড়ি ব্যবসায়ীরা এই সুবিধার মেয়াদ কমপক্ষে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষ অবধি বাড়িয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছে।
অটোমোবাইল শিল্পকে চাঙ্গা করতে কেন্দ্রের কাছে দুই চাকার গাড়ির উপর জিএসটি (GST) কমিয়ে ১৮ শতাংশ করার আবেদন জানানো হয়েছে। এফএডিএ-র তরফে জানানো হয়েছে, প্রতি তিন থেকে চার মাস অন্তর গাড়ি তৈরির অন্যান্য কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পায়। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই গাড়ির দামও বৃদ্ধি পায়। তাই জিএসটি-র হার যদি কিছুটা কম করা যায় তাহলে গাড়ি শিল্প ফের মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে। একইসঙ্গে ব্যবহৃত গাড়ির ক্ষেত্রেও জিএসটি হার কমিয়ে ৫ শতাংশ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। জিএসটির হার যদি কিছুটা কমানো হয়, তাহলে গাড়ির চাহিদা বাড়তে পারে বলে মত প্রকাশ করেছে এফএডিএ।
আরও একটি বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে এই প্রস্তাবে। সেখানে বলা হয়েছে, ফেডেরেশন অব অটোমোবাইল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে কেন্দ্রের কাছে আবেদন করা হয়েছে, যে সব গাড়ি মালিকরা কর (Tax) প্রদান করেন তাঁদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হোক। এর ফলে আয়করদাতাদের আয়কর দিতেও উৎসাহ পাবেন সেই সঙ্গে গাড়ি বিক্রির পরিমানও বাড়বে।
২০২২-২৩ অর্থবর্ষে পেশ হতে চলা বাজেটে বৈদ্যুতিন গাড়ির (Electric Vehicles) চাহিদা বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। পেট্রোল-ডিজেলের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধির কারণে এবং আধুনিক যুগের চাহিদার সঙ্গে পাল্লা রেখে দেশে বাড়ছে বৈদ্যুতিন গাড়ির চাহিদা। তাই আসন্ন বাজেটে বৈদ্যুতিন গাড়ির ওপর জোড় দিতে এবং ক্রেতাদের ছাড় দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে লিথিয়াম আইওয়ন ব্যাটারি ও ইলেকট্রনিক গাড়ির স্পেয়ার পার্টসের উপরও জিএসটি কর কমানোর দাবি জানানো হয়েছে।