তরুণ প্রজন্মের মধ্যে স্থুলতা মাত্রাতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই জন্য যে সব খাবারে বেশিমাত্রায় নুন, চিনি বা চর্বি থাকে সেই ধরনের খাবারের প্রতি কর বসানোর পরিমান বৃদ্ধির কথা ভাবার একটা পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র, এমনটাই জানাল নীতি আয়োগ। চিপস, ভুজিয়ার মত মুখোরোচক খাবারগুলোর ওপর কেন্দ্রকে করের পরিমান বাড়ানোর প্রস্তাব দিল নীতি আয়োগ।
বাড়িতে আমরা যতই ফুড ভ্যালু মেনে খাবার খাই না কেন, ঘরের বাইরে পা দিলে কিন্তু সেই নীতি ভঙ্গ হয় বই কী...স্কুল-কলেজ হোক অফিস ফেরত ট্রেনে-বাসে চড়ার সময় সকলেরই নজর পড়ে প্যাকেটবন্দী চিপস, ভুজিয়ার দিকে। গন্তব্য আসার আগে মনে হয় কানে হেডফোনটা লাগিয়ে একটু মুচমুচে খাবারের সঙ্গে বাকি পথটা চলে যাই। কিন্তু এতে ক্ষনিকের সাধপূরণ হলেও শরীরের অনেকখানি ক্ষতি হয়ে যায়। আসলে আট থেকে আশি সকলেরই পছন্দের তালিকায় থাকে চিপস (Chips), ভুজিয়ার (Bhijia) মত মুখোরোচক খাবারগুলো (First Food)। তাই শরীরের ক্ষতির কথা জেনেও নিজের লোভ সমবরণ করা যে বড়ই দায়..তাই আমরা সকলেই সবটা জেনেও যেন জ্ঞানপাপীর মত সেই কাজটাই করে চলেছি। আর তার ফলস্বরুপ যেটা হচ্ছে, তা হল তরুণ প্রজন্মের মধ্যে স্থুলতা (Obesity)মাত্রাতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই জন্য যে সব খাবারে বেশিমাত্রায় নুন (Salt), চিনি (Sugar) বা চর্বি (Fat) থাকে সেই ধরনের খাবারের প্রতি কর বসানোর (To Increase GST)পরিমান বৃদ্ধির কথা ভাবার একটা পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র, এমনটাই জানাল নীতি আয়োগ (NITI aayog)।
মূলত বিগত কয়েক বছরে দেশে স্থুলতার সমস্যা চরমে পৌঁছেছে। ২০১৯-২০ সালের জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা অনুসারে মহিলাদের মধ্যে স্থুলতার হার ২০১৫-১৬ সালের তুলনায় ২০.৬ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৪ শতাংশ। অন্যদিকে পুরুষদের মধ্যে এই হার ১৮.৪ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ২২.৯ শতাংশ। এই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই অস্বাস্থ্যকর খাবারের ওপর কর বসানোর কথা ভাবা হচ্ছে। উল্লেখ্য, বর্তমানে ব্র্যান্ড ছাড়া যে কোনও প্যাকেটবন্দি ভুজিয়া, ভেজিটেব্ল চিপস ও স্ন্যাক্সে ৫ শতাংশ পর্যন্ত জিএসটি বসানো হয়। অন্যদিকে এই সমস্ত খাবারই যেগুলো ব্র্যান্ডেড সেখানে করের পরিমান ১২ শতাংশ। তবে খুব শীঘ্রই কেন্দ্র এই করের হার বাড়ানো ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে জানাল নীতি আয়োগ।
২০১৯-২০ সালের জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা র রিপোর্ট অনুসারে কম বয়সী এবং মহিলাদের মধ্যে স্থুলতা বা ওবেসিটি বৃদ্ধির প্রবণতা বেশী মাত্রায় দেখা গিয়েছে। গত বছর জুনে মোটা হওয়ার সমস্যা নিয়ে জাতীয় স্তরে আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল নীতি আয়োগ। কোন ধরনের নীতি প্রয়োগে এই সমস্যার সমাধান করা যায় এই বিষয়টিও উঠে এসেছিল সেই আলোচনায়। তারপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল এই ধরনের খাবারে করের পরিমান বৃদ্ধি ছাড়াও প্যাকেটের সামনে লেবেল বদলানো ও এগুলির বিপণন ও বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত নানা বিষয়ও ছিল সেই তালিকায়। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই ব্রিটেন, জাপান, ডেনমার্ক-সহ বিভিন্ন দেশে মোটা হওয়ার প্রবণতা রয়েছে। বলা বাহুল্য, ভারতেও ২০১৫-১৬ সালে বাজেটে পিৎজ়া, বার্গার ও অন্যান্য জাঙ্ক ফুডে কর বসানোর প্রস্তাব দিয়েছিল কেরল।