এদিন বাজার বন্ধ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে থেকেই দেখা যাচ্ছিল যে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যে শেয়ারগুলো রয়েছে তার দাম পড়ছে। সকলেই এক নতুন পতনের আশঙ্কা করছিলেন। আর সে সময়ই যেন খেল দেখাল বাজার।
যেভাবে মঙ্গলবার সকাল থেকে বাজারে একটা পতন শুরু হয়েছিল। তাতে মনে হচ্ছিল এবারও বুঝি আর রক্ষে নেই। ওমিক্রন আতঙ্ক না ফের বাজারে ধস নামায়। তবে কথায় বলে না যার সব ভালো তো শেষ ভালো। মঙ্গলবার বম্বে স্টক মার্কেটের সূচকও যেন সেটা হারে হারে প্রমাণ করে দিল। যার জেরে পতনের মুখ দেখেও ফের সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছে সূচক। আর এর জেরে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক শেষ বেলায় ৬০০ পয়েন্ট রিগেন করেছে। এর ফলে ব্যাঙ্ক এবং ধাতব স্টক-এর বিনিয়োগকারীদের ঝুলিতে ঢুকেছে সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকা। শেষ বেলায় বাজারের এই ঘুরে দাঁড়ানো নতুন করে আশার আলো সঞ্চার করেছে বিনিয়োগকারীদের মনে। মনে করা হচ্ছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের ধাক্কা করোনা অতিমারির অন্যান্য অতিমারির ভ্যারিয়েন্টের ধাক্কার তুলনায় অনেকটাই হালকা থাকবে।
ভারত বলেই নয় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের আতঙ্ক বিশ্বজুড়েই বিভিন্ন শেয়ার বাজারে রয়েছে। ইতিমধ্যে বিশ্ববাজারও শেয়ার দামে অপ্রত্যাশিত ওঠা-নামা দেখতে পাচ্ছে। এরমধ্যে গোদের উপর বিষফোড়া বলা যায় যে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ তুলে নেওয়ার প্রবণতা। এটা সব শেয়ার বাজারের এখন পরিচিত ছবি। তবে, ভারতের ক্ষেত্রে একটু আশার আলো রয়েছে এই কারণেই যে মঙ্গলবার শেষ বেলায় শেয়ার বাজার ৬০০ পয়েন্ট রিগেন করতেই যে সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগকারীদের ঝুলিতে এসেছে তার অধিকাংশটাই বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জেরর তালিকাভুক্ত সংস্থা। দেখা গিয়েছে মোট সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকার এই ফায়দায় ২৬০ লক্ষ কোটি টাকার সামান্য কিছু বেশি বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলির ঝুলিতেই গিয়েছে।
শেষ বেলায় বাজারের যে ছবিটা ধরা পড়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে ৩০টি শেয়ার মূলত বাজারকে চাঙ্গা করার পিছনে কাজ করেছে। এদের থেকে মিলিতভাবে ৮৮৬.৫১ পয়েন্ট বাজার লাভ করেছে। যা শেষবেলায়া সূচকের বন্ধ হওয়ার সময় যে ৫৭,৬৩৩.৬৫-এর স্কোর করেছে তার ১.৫৬ পারসেন্ট। এদিকে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের চাঙ্গা হওয়ার সঙ্গে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জেও বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছে। এদিন ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের নিফটি ২৬৪.৪৫ পয়েন্টের বৃদ্ধির মুখ দেখে। বাজার বন্ধ হওয়ার সময় নিফটির স্কোর ছিল ১৭,১৭৬.৭০। নিফটি এদিন যে বৃদ্ধির মুখ দেখেছে তা এই ক্লোজিং স্কোরের ১.৫৬ পারসেন্ট।
বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের পড়তে পড়তে শেষবেলায় রিকভার করে নেওয়া নিয়ে প্রত্যাশিতভাবেই বিশ্লষণ করেছেন শেয়ারবাজারের বিশেষজ্ঞরা। জিওজিত ফিনাসিয়াল সার্ভিসের হেড অফ রিসার্চ বিনোদ নায়ার জানিয়েছেন, 'যেভাবে এদিন স্বাস্থ্যক্ষেত্রের স্টকগুলোর দাম পড়ছিল তাতে বাজারের ঘুরে দাঁড়ানোটা খুবই সদর্থক। বিশেষ করে এমপিসি ঘোষণার জন্য ব্যঙ্কিং স্টকের চাহিদা বাজারের ক্ষেত্রে খুবই ভালো কাজ করেছে। আর বিনিয়োগকারীরা বুঝে গিয়েছে যে আরবিআই এমপিসি নিয়ে কোনও কড়া কথা শোনাবে না। কারণ ওমিক্রনের ধাক্কায় বাজারকে ঘিরে যে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে তার জন্য ব্যঙ্কিং স্টক-এর দাম বাড়বে। তাই সময় থাকতেই আগেভাগে ব্যাঙ্কিং স্টক এবং মেটাল স্টকের উপরে লেনদেন এদিন শেষবেলায় শেয়ারবাজারে ফের গতি এনে দিয়েছে।'
একনজরে এদিন শেয়ারবাজারের ছবিটা
-------------------------------------------------------