৯ মিনিটের ব্ল্যাকআউটে ফ্যান-এসি-ফ্রিজ সব চালিয়ে রাখুন, মোদীর ডাকে ঘনাচ্ছে বড় বিপদ

প্রধানমন্ত্রী রবিবার রাত ৯টায় ৯ মিনিটের ব্ল্যাকআউটের আহ্বান জানিয়েছেন

বিরোধীরা এই পদক্ষেপের প্রবল সমালোচনা করেছে

তাদের দাবি এটা মোদীর নিজস্ব প্রচার পাওয়ার ছলনা

কিন্তু, এই পদক্ষেপে দেশে অজান্তেই অন্য এক বিপদ ঘনিয়ে এসেছে

 

amartya lahiri | Published : Apr 4, 2020 10:17 AM IST / Updated: Apr 04 2020, 05:52 PM IST

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার সকালে এক ভিডিও বার্তায়, করোনাভাইরাসকে পরাস্ত করার জন্য দেশের মানুষ কতটা ঐক্যবদ্ধ তা প্রদর্শনের জন্য, রবিবার রাত ৯টায় ভারত-কে নয় মিনিটের জন্য ব্ল্যাকআউট করে, অর্থাৎ সব আলো নিভিয়ে দিয়ে নিজের বাড়িতে প্রদীপ, মোমবাতি বা মোবাইল ফোনের আলো বা টর্চ জ্বালানোর আহ্বান জানিয়েছেন। এটা তাঁর নিজস্ব প্রচার পাওয়ার ছলনা বলে এই পদক্ষেপের প্রবল সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। কিন্তু, শুধু তাই নয়, এই পদক্ষেপে দেশে অন্য এক বিপদ দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিদ্যুত সরবরাহ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা জানিয়েছেন, এই ব্ল্যাকআউট-এর ফলে স্থিতি নষ্ট হতে পারে দেশের বিদ্যুৎ গ্রিড-এর। যার ফলে গ্রিড ধসে যেতে পর্যন্ত পারে। সেই ক্ষেত্রে সেই গ্রিড সারিয়ে তোলা না পর্যন্ত পরিষেবা ব্যহত হতে পারে। তবে এই বিষয়টি মানছে না কেন্দ্রীয় বিদ্যুত মন্ত্রক। মন্ত্রকের মুখপাত্রের দাবি, গ্রিডের স্থিতিশীলতায় এ জাতীয় কোনও প্রভাব পড়বে না। কারণ, ব্ল্যাকআউট চলাকালীন বিদ্যুতের চাহিদা ১০ গিগাওয়াট থেকে ১২ গিগাওয়াট কম হতে পারে। এতে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের স্থিতি নষ্টের সম্ভাবনা নেই। এর আগে 'আর্থ আওয়ার' উদযাপনের সময়ও প্রায় সারা দেশের মানুষ একসঙ্গে আলো নিভিয়েছিলেন, কোনও সমস্যা হয়নি।

বিদ্যুত সরবরাহ পর্ষদের কর্তাব্যক্তিরা থেকে ইঞ্জিনিয়াররা অবশ্য অন্য কথা বলছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, এখন লকডাউনের ফলে ভারতের সমস্ত শিল্প ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের বিদ্যুতের চাহিদা নেই। গ্রিডে আপাতত শুধুমাত্র বসতবাড়ির এবং প্রয়োজনীয় পরিষেবা ক্ষেত্রের বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। এই সময়ে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ থাকার কথা, অথচ হঠাৎ করে তা গত বছরের তুলনায় ২৫ শতাংশ কমে গিয়েছে। ২ এপ্রিল সারা দেশের বিদ্যুতের মোট চাহিদা ছিল ১২৫.৮১ গিগাওয়াট। তার ৪০ শতাংশের কিছু কম চাহিদা এসেছিল শুধু আলো থেকে আসছে। তাই, এখন গ্রিডের সমস্ত আলো হঠাৎ একসঙ্গে বন্ধ করলে আকস্মিক চাহিদা হ্রাসের ধাক্কায় বিদ্যুৎ গ্রিড ধসে যেতে পারে।

করোনা-যোদ্ধা মহিলা ডাক্তারদের কুপ্রস্তাবের বন্যা, অশ্লীলতার সীমা ছাড়ালো পাকিস্তান

বিশ্বব্যাঙ্ক একাই দিল ১০০ কোটি ডলার, করোনা-ধাক্কায় বিশাল অঙ্কের ঋণ নিচ্ছে মোদী সরকার

নামমাত্র দামে পোর্টেবল ভেন্টিলেটর, করোনা-যুদ্ধে একের পর এক অস্ত্রে জাত চেনাচ্ছে আইআইটি

তাহলে উপায়? বিদ্যুত কর্তারা ভারতচবাসীর কাছে আবেদন করছেন, আলো নেভালে ঘরের অন্যান্য বৈদ্যুতিক যন্ত চালু রাখুন। নিউক্লিয়ার পাওয়ার কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড-এর সহযোগী পরিচালক এম কে মাথুর যেমন এক বার্তায় আবেদন করেছেন, 'গ্রিডের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য দয়া করে ৫/৪/২০২০ তারিখ রাত ৮টা ৫৫ থেকে ৯ টা ১০ পর্যন্ত, ১৫ মিনিটের জন্য ঘরের সমস্ত ফ্যান খুলে রাখুন'। ইঞ্জিনিয়াররা বিদ্যুত চাহিদার স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ওই সময়কালে অন্যান্য বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম যেমন ফ্রিজ, এয়ার কন্ডিশনার, মাইক্রোওভেন ইত্যাদিও চালু রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ুর মতো বেশ কয়েকটি রাজ্যে, বিদ্যুতকর্তারা রাজ্য সরকারের কাছে এই বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে তা জানিয়ে চিঠিও লিখেছেন। তাঁরা সতর্ক করছেন, গ্রিডটি ভেঙে পড়লে কিন্তু, ঘরবাড়িতে তো বটেই সেইসঙ্গে হাসপাতালগুলি, যেখানে করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসা চলছে, সেখানেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে না।

 

Share this article
click me!