করোনা যুদ্ধের অস্ত্র তৈরি করল ডিআরডিও
তাদের তৈরি প্রতিষেধককে অনুমোদন দিল ডিজিসিআই
ওষুধটি খেতে হয় জলে গুলে
দ্রুতই সুস্থ হবে রোগী, কমবে অক্সিজেন নির্ভরতাও
করোনা মহামারির দ্বিতীয় তরঙ্গ সুনামি হয়ে আছড়ে পড়েছে ভারতে। বর্তমানে দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যাটা ৪ লক্ষেরও বেশি হচ্ছে, আর মৃত্যুর সংখ্য়া ৪ হাজারেরও বেশি। এই অবস্থায়, করোনা মোকাবিলায় ভারতের হাতে এল এক নতুন ও কার্যকর অস্ত্র। প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা বা ডিআরডিও (DRDO)-র তৈরি কোভিড-১৯ চিকিত্সার একটি ওষুধকে, শনিবার জরুরিভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিল দেশের শীর্ষ ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিআই (DGCI)।
এই ওষুধটি গুঁড়ো আকারে তৈরি করা হয়েছে। সেই গুঁড়ো জলে গুলে নিয়ে মুখে দিয়ে খেতে হবে। ডিআরডিও-র গবেষণাগার এবং হায়দরাবাদের ডা. রেড্ডিজ ল্যাবরেটরিজ-এর যৌথ গবেষণায় এই ওষুধটি বিকশিত হয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ২-ডিঅক্সি-ডি-গ্লুকোজ বা সংক্ষেপে টু-ডিজি। এটি খেলে কোভিড একেবারে সেড়ে যাবে তা না হলেও, এই ওষুধের ক্লিনিকাল পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই ওষুধে থাকা একটি অণু হাসপাতালে ভর্তি থাকা কোভিড রোগীদের দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে সহায়তা করে। শুধু তাই নয়, ডিজিসিআই জানিয়েছে, তারা পরীক্ষা করে দেখেছে যে, রোগীদের অক্সিজেন নির্ভরতাও কমায় এই ওষুধটি।
কোভিড মহামারির প্রথম তরঙ্গ চলার সময়, হায়দরাববাদের সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বা সিসিএমবি (CCMB)-র সহায়তায় নতুন করোনাভাইরাসটির প্রতিষেধক তৈরির লক্ষ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছিলেন। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসেই তাঁরা আবিষ্কার করেছিলেন ২-ডিজি'র মধ্যে থাকা বিশেষ অণুটি মানবদেহে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের সংখ্যা বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। তাই এটি এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে। সেই গবেষণার ফলাফলের উপর ভিত্তি করেই ডিসিজিআই এবং সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন বা সিডিএসসিও (CDSCO) গত বছরের মে মাসে কোভিড -১৯ রোগীদের উপর ২-ডিজি-র দ্বিতীয় পর্যায়ে ক্লিনিকাল পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছিল।
আরও পড়ুন - লাগবে না কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট - হাসপাতালে ভর্তিতে ৪ নতুন নির্দেশ, কী বলল কেন্দ্র
আরও পড়ুন - মুকুল রায়কে নিয়ে জল্পনার অবসান - এরপর কোন পথে, নিজেই জানালেন সেই কথা
আরও পড়ুন - 'দলের ক্ষতি করেননি' - তৃণমূলে টিকেই গেলেন দিব্যেন্দু অধিকারী, বহিষ্কৃত প্রাক্তন বিধায়ক
২০২০ সালের মে এবং অক্টোবরের মধ্যে এই ওষুধটির দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা হয়। এই পর্যায়ে ১১০ জন রোগীর উপর পরীক্ষা করা হয়েছিল। সেই সময় এই ওষুধটি মানব দেহে প্রয়োগের পক্ষে নিরাপদ বলে প্রমাণিত হয়েছিল। পরীক্ষাধীন রোগীদের সুস্থ হওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা গিয়েছিল। তৃতীয় ধাপের পরীক্ষাগুলি হয় ছয়টি হাসপাতালে। আর 'ডোজ রেঞ্জিং', অর্থাৎ রোগ সারাতে ঠিক কত পরিমাণ ডোজ প্রয়োগ করা দরকার এবং কতটা ডোজ সুরক্ষিত, তা যাচাই-এর জন্য ১১টি হাসপাতালে পরীক্ষা চালানো হয়েছে।