ওঁদের চোখের জল মিশে গিয়েছিল যমুনায়, লকডাউনের দিল্লিতে ৪ দিন কেটেছে খোলা আকাশের নিচে


কথা রেখেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল
খালি করা হয়েছে যমুনার তীর
সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার হয়েছে অভিবাসী শ্রমিকদের
ঘরপোড়া ৪০০ মানুষ ছিলেন যমুনার তীরে 

Asianet News Bangla | Published : Apr 16, 2020 12:37 PM IST

করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্বকেই হাতিয়ার করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। একই পথে চলে লকডাউনকে পুরোপুরি কার্যকর করতে বদ্ধ পরিকর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এই অবস্থায় আরও আরও একমার সামনে এল ভারতের রাজধানীতে দরিদ্র মানুষের অসহায়তার ছবি। মহামারীর এই ভয়ঙ্কর সময়ই টানা চার দিন চার তার খোলা আকাশের নিচেই কাটাতে হয়েছিল ৪০০ থেকে ৫০০ জন মানুষকে। আর সেই অসহায় মানুষের ভিড়ে যেমন ছিল শিশু, তেমনই ছিল মহিলা ও বয়স্করা। 

এক অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গিয়েছেন তাঁদের আশ্রয়স্থান। সেই আবাসস্থল বসবাসেরও অযোগ্য হয়ে পড়ে। কিন্তু মহামারী আর লকডাউনের এই সময় কোথায় যাবেন তাঁরা? কী খাবেন? এই সব ভেবে দিশেহারা হয়েই আশ্রয় নিয়েছিলেন যমুনা নদীর তীরে। কাশ্মীরা ঘাট এলাকায় যমুনার তীরে একটি ফ্লাই ওভারের তলায়তেই কেটেছে রাতদিন। দিনে মাত্র এক বেলার জন্য খাবারের বাক্স পেয়েছেন কেউ কেউ। তাঁদের কথায় আজ বিপন্ন তাঁদের জীবিকা। অন্ন সংস্থানও ঠিক মত হয়না। তাই এই অবস্থায় একে অপরকে ছেড়ে যেতে তাঁরা নারাজ ছিলেন। তিন দিন পর বুধবারই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল তাঁদের সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন। সেই মত দিল্লি পুলিশ এসে তাঁদের একাধিক আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিয়েছে বলেই সরকারি সূত্রের খবর। 

বাকিদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা জানেন না অন্য জন। তবে সেই মানুষদের ভিড়ের সাক্ষী বিমল যাদব জানিয়েছেন, আমরা জানতাম মহামারীর হয়েছে। তার কারণে লকডাউন চলছে। তাই আমরা অন্য কোথাও যাওয়ার চেষ্টা করিনি। যমুনার তীরেই আশ্রয় নিয়েছিলাম। মেনে চলেছিলাম সরকারি বিধি। একে অপরের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখেছিলাম। আমাদের অনেকেরই মাস্ক নেই। তাই আমরা কাপড় দিয়েই নাক আর মুখ ঢেকে রেখেছিলাম। 

আরও পড়ুনঃ উদ্বিগ্ন অমর্ত্য সেন, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় আর রঘুরাম রাজনের চিঠি, দরিদ্রের জীবনে ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলছ...
আরও পড়ুনঃ পিৎজা খেয়ে কোয়ারেন্টাইনে ৭২টি পরিবার, দিল্লিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ডেলিভারি বয় .
রও পড়ুনঃ করোনা যুদ্ধে চিনের ওপর ভরসা রাখতে নারাজ, দ্রুত পরীক্ষার কিট তৈরি করছে ভারত ...
ভিন রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকেই এঁরা দুটো খাবারের জন্য এসেছিলেন দিল্লিতে। কিন্তু লকডানের অর্থ সংস্থানের পথ বন্ধ। কবে থেকে আবার কাজে ফিরতে পারবেন তা জানা নেই। দু বেলা তো দূরের কথা এক বেলাও পেট ভরা খাবার নেই। কোনও রকমে কেটে চলেছে দিন। এই অবস্থায় লকডাউন শেষের অপেক্ষায় দিন গুণছেন ওঁরা। শুধু ওঁরা নয় এই দেশের লক্ষ লক্ষ শ্রমিক। যাঁদের জীবন আর জীবিকা দাঁড়িয়ে রয়েছে পাহাড়ের কিনারায়। 
 

Share this article
click me!