দেশের প্রথম ওমিক্রন (Omicron) আক্রান্তের মৃত্যু হল মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) পুনেতে (Pune)। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি সম্প্রতি নাইজেরিয়া (Nigeria) থেকে ভারতে ফিরেছিলেন, পাশাপাশি ডায়াবেটিস (Diabetes) ছিল।
গত ২ ডিসেম্বর ভারতে প্রথম ওমিক্রন (Omicron) সংক্রমণের ঘটনা ধরা পড়েছিল। তার প্রায় ১ মাস পর, ২৮ ডিসেম্বর দেশের প্রথম ওমিক্রন আক্রান্তের মৃত্যু ঘটল। পুনের (Pune) একটি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) এক ব্যক্তির। ৫২ বছর বয়সী ওই ওমিক্রন আক্রান্ত সম্প্রতি নাইজেরিয়া (Nigeria) থেকে ভারতে ফিরেছিলেন। কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি তিনি ডায়াবেটিসে (Diabetes) ভুগছিলেন, অর্থাৎ সহ-অসুস্থতা ছিল। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি (National Institute of Virology), ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের জন্য ওই ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করার পর, নিশ্চিত করেছে যে, তাঁর শরীরে যে করোনা বাসা বেঁধেছিল, তা ওমিক্রনই ছিল।
গত ১৫ ডিসেম্বর বিশ্বে প্রথম ওমিক্রন রোগীর মৃত্যুর খবর দিয়েছিল ব্রিটেন। তারপর থেকে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। ভারতে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ১০০০ ছাপিয়ে গেলেও, এতদিন কারোর মৃত্যুর খবর ছিল না। এবার তাও নথিবদ্ধ করা হল। তবে, এখনও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আক্রান্তরা উপসর্গহীন বা হালকা উপসর্গ রয়েছে।
এদিকে ভারতে করোনা মহামারির তৃতীয় তরঙ্গের (COVID-19 Third Wave) পদধ্বণি শোনা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার, কেন্দ্র জানিয়েছিল গত ২৪ ঘন্টায় দেশে ১৩,০০০-এর বেশি নতুন কোভিড-১৯ কেস রিপোর্ট করা হয়েছে। গত ২৬ ডিসেম্বর থেকেই ফের দৈনিক নতুন করোনা-১৯ কেসের সংখ্যা ১০,০০০-এর উপরে চলে গিয়েছে। গত সপ্তাহে দৈনিক গড় নতুন কোভিড-১৯ সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৮,০০০। ওমিক্রন সংক্রমণের সংখ্যা ১,১৫৯-এ পৌঁছেছে। ভারতের 'আর নট মান', যা দিয়ে কোভিড-১৯'এর বিস্তার মাপা হয়, বর্তমানে রয়েছে ১.২২। অর্থাৎ, প্রতি ১০০ জন সংক্রামিত ব্যক্তি, আরও ১২২ জন সুস্থ ব্যক্তিকে সংক্রামিত করছে। এই কারণেই সংক্রমণের সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে।
দেশের আটটি জেলায় ইতিবাচকতার হার ১০ শতাংশের বেশি রয়েছে। ১৪ টি জেলায় ৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে ইতিবাচকতার হার। মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, দিল্লি, কর্ণাটক এবং গুজরাটে সাপ্তাহিক কোভিড-১৯ কেস এবং ইতিবাচকতার হার যেভাবে বেড়ে গিয়েছে, তাতে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্র সতর্ক করেছে, মহারাষ্ট্র, নতুন সংক্রমণে প্রায় ৩৮ শতাংশ বেড়েছে। এদিকে, ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের সংক্রমণের সংখ্যা ২-৩ দিনের দ্বিগুণ হচ্ছে।
তবে কোভিড নিয়ে সবই যে খারাপ খবর রয়েছে, তা নয়। দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) একটি নতুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে একাধিক অভিযোজন নিয়ে নভেল করোনাভাইরাসের ওমিক্রন রূপান্তর, শরীরের প্রতিরক্ষার প্রথম স্তর - অ্যান্টিবডিগুলিকে হারিয়ে দিতে পারলেও, প্রতিরক্ষার দ্বিতীয় স্তর - টি-কোষকে হারাতে সক্ষম নয়। টি-কোষ এই রূপান্তরকে শুধু দ্রুত চিনতে পারছে, তা নয়। নয়া ভেরিয়েন্টকে নিরপেক্ষ করতেও এটি অত্যন্ত কার্যকর। এছাড়াও আরও একটি আশার খবর শুনিয়েছে ভারত বায়োটেক (Bharat Viotech) সংস্থা। তাদের ফেজ ২ এবং ফেজ ৩ পেডিয়াট্রিক ট্রায়ালের ফলাফলে দেখা গিয়েছে, কোভ্য়াক্সিন (Covaxin) প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় ২ থেকে ১৮ বছরের বয়সী, অর্থাৎ শিশু ও কিশোরদের মধ্যে ১.৭ গুণ বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি করছে।