লকডাউনের দ্বিতীয় দিন। স্তব্ধ গোটা দেশের জনজীবন। জরুরী পরিষেবা ছাড়া বন্ধ যাতায়াতের প্রায় সব মাধ্যই। এই পরিস্থিতিতে ভারতে আটকে রয়েছে প্রচুর বিদেশী। যাদের অধিকাংশই পর্যটক বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্র মন্ত্রক। আটকে পড়া ৬-১০ হাজার পর্যটককে দেশে ফিরিয়ে দিতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। নাগরিকদের দেশে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, আমফানিস্তানসহ একাধিক দেশ।
আগেই আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বুধবার থেকে বন্ধ অন্তর্দেশীয় উড়ান পরিষেবাও। ভারতের আকাশে এখন শুধুই মালবাহী কার্গো বিমান চলাচল করছে। এই পরিস্থিতি বিদেশী রাষ্ট্রগুলি তাদের নিজস্ব বিমান পাঠিয়েই পর্যটকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছ। স্বারাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রের খবর ১০থেকে ১২টি দেশের বাসিন্দারা ভারতে আটকে পড়েছেন লকডাউনের কারণে। ইতিমধ্যেই তাদের সঙ্গে জরুরী ভিত্তিতে যোগাযোগ করা হচ্ছে। বিদেশী রাষ্ট্রদূতের অফিস থেকেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। বিদেশী পর্যটকদের দেশে ফেরাতে সবরকম সাহায্য করা হবে বলেও জানান হয়েছে।
একটি সূত্রের খবর ইতিমধ্যেই এক হাজার জার্মান পর্যটককে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে জার্মানী। ৪০০ পর্যটককে ভারত থেকে নিয়ে গেছে রাশিয়াও। ফ্রান্সের প্রায় ২০০০ পর্যটক এখনও রয়েছে ভারতে। এয়ার ফ্রান্সের বিশেষ বিমানে তাদের ফেরার ব্যবস্থা করছে ফ্রান্স সরকার।
ইংল্যান্ড ও আমেরিকাও বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করে নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হয়েছে। গোয়া, মুম্বই আর দিল্লিতে রয়েছেন ইজরায়েল থেকে আসা পর্যটকরা। তাদের উদ্ধারের জন্য তিনটি বিশেষ বিমান ভারতে পাঠোনো হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ করোনাভাইরাস মোকাবিলায় লকডাউন, আর তাতেই আপাতত স্থগিত এনপিআর
আরও পড়ুনঃ সাত পাকে বাঁধা সেই করোনা, বিয়ে পিছিয়ে সমাজকে বার্তা ২ আমলার
ফ্রান্সে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্ম আকার নিয়েছে। অধিকাংশ রাষ্ট্রদূতই বাড়ি থেকে কাজ করছেন। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় একজন আগেই দেশে ফিরে গিয়েছিলেন। তবে নাগরিকদের জরুরী ভিত্তিতেও দেশে ফেরানোর কাজ চলছে। একই পদক্ষেপ গ্রহণ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ভারতে আসা মার্কিন নাগরিকদের বিশেষ বিমানে দেশে ফেরানোর তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। ভারতে এই মুহূর্ত প্রচুর আফগান পর্যটকও রয়েছ। খুব তাড়াতাড়ি তাদেরও দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান হয়েছে। ভারতে আটকে পড়া বিদেশী পর্যটকরা চাইলে তাদের সবকরম সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
গোটা বিশ্বজুড়েই করোভাইরাসের মারাত্মক সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। ৪ লক্ষ ৭১ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা ২১ হাজারেরও বেশি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে অধিকাংশ দেশেই সামাজিত দূরত্ব বজায় রাখার দিকে হাঁটছে। একাধিক রাষ্ট্র বন্ধ করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা। অনেক আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনার সংক্রমণকের আন্তর্জাতিক মরহামারী আখ্যা দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বিশ্বের সবকটি দেশকে সতর্ক করেছিল। সেই সময়ই জানান হয়েছিল করোনাভাইরাসের মারাত্মক প্রভাব পড়বে বিশ্ব অর্থনীতিতেও।