চারিদিকে করোনার আতঙ্ক
তারমধ্যেই এক বৃদ্ধের রহস্যময় মৃত্যু
বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার পচা দেহ
চাঞ্চল্য রায়গঞ্র সুদর্শনপুরে
স্ত্রী-পুত্র থাকা সত্ত্বেও বাড়িতে একাই থাকতেন বৃদ্ধ। খাওয়ার জন্য তাঁর হোম ডেলিভারিই ছিল ভরসা। আর সেই হোম ডেলিভারি দিতে এসেই, শুক্রবার বন্ধ ঘরের মধ্য থেকে উদ্ধার হল তাঁর পচা-গলা দেহ। কীভাবে মৃত্যু হল তাঁর? ভয়াবহ অতিমারির সময়ে সকলেরই মনে প্রথমেই আসছে করোনাভাইরাসের কথা। তবে বৃদ্ধের মৃত্যুর পিছনে অন্য কারণও থাকতে পারে বলে মনে করছেন প্রতিবেশিরা। রায়গঞ্জ শহরের সুদর্শনপুর এলাকার ঘটনা। এই নিয়ে ওই এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
জানা গিয়েছে ৮০ ছুঁই ছুঁই ওই বৃদ্ধের নাম মনোজ সরকার। এক সময় তিনি শিক্ষকতা করতেন। দীর্ঘদিন হল অবসর নিয়েছেন। তাঁর স্ত্রী রায়গঞ্জ শহরেরই অন্য এক জায়গায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। দুই পুত্র কর্মসূত্রে থাকেন বাইরে। বৃদ্ধ মনোজ সরকার শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল ছিলেন। অশক্ত শরীরে খুব একটা বাইরে বের হতেন না। খাওয়ার আসত হোম ডেলিভারি মারফত।
প্রতিদিনের মতো শুক্রবারও হোম ডেলিভারির খাওয়া এসেছিল তাংর জন্য। কিন্তু ডেলিভারি দিতে আসা ব্যক্তি দীর্ঘক্ষন ধরে ডাকাডাকি করেও বৃদ্ধের কোনও সাড়া পাননি। এরপর, তিনি দরজা খুলে ভিতরে যেতেই, ঘরের ভিতর থেকে পচা দুর্গন্ধ পান। এরপরই তিনি পাড়া-প্রতিবেশীদের খবর দেন। তাঁরা ঘটনাটি জানান স্থানীয় কাউন্সিলর ও রায়গঞ্জ থানার পুলিশকে। পুলিশ আসার পর ঘরের বাইরে থেকেই দেখা যায়, ঘরের ভিতর একটি খাটের উপর ওই বৃদ্ধ শুয়ে রয়েছেন, ফ্যান চলছে। এরপরই ঘরের দরজা ভেঙে পুলিশ ভিতরে ঢুকে দেখে মনোজ সরকার মৃত, এবং তাঁর দেহে পচন ধরেছে। তারা দেহটি উদ্ধার করে তারা ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল হাসপাতালের পুলিশ মর্গে পাঠায়।
আরও পড়ুন - এক ডোজেই কামাল, নতুন রুশ টিকা তৈরি হবে ভারতেই - করোনাধ্বস্ত দেশে আনতে পারে বিপ্লব
আরও পড়ুন - করোনা পরিস্থিতিতেও কেন্দ্রের বঞ্চনা - মোদীকে পত্রাঘাত মমতার, তুললেন অক্সিজেনের দাবি
আরও পড়ুন - ভাইরাল ভিডিও - তালাবন্ধ আইসিইউতে করোনা রোগীদের মৃতদেহ, নেই একজনও ডাক্তার-নার্স
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে, ওই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, বর্তমানে করোনা অতিমারির তীব্র দাপট চলছে। এর মধ্যে আচমকা ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হওয়ায় কিছুটা হলেও তাঁরা আতঙ্কিত। তবে বৃদ্ধের মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও রহস্য আছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে তাঁদের মনে। কারণ, তাঁরা ফোন করেছিলেন মৃত মনোজ সরকারের ছেলেদের। তাঁর দুই ছেলে বা পরিবারের অন্য কেউ বৃদ্ধের মৃতদেহ নেওয়া তো দূর, মৃত্যু সংবাদ পেয়ে সেখানে আসতেও অস্বীকার করেছেন বলে স্থানীয়দের দাবি। তাতেই তাঁরা সন্দেহ করছেন, বৃদ্ধের মৃত্যুর পিছনে পারিবারিক বিবাদের কোনও ঘটনাও থাকতে পারে। রায়গঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসলে, অনেক রহস্যই উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।