'কোভিড দেহ' ঘিরে পদ্মা-ভাগীরথীর জলে আতঙ্ক। মুর্শিদাবাদ জুড়ে উত্তর থেকে দক্ষিণ ভগবানগোলা, আজিমগঞ্জ, ডোমকল, রেজিনগর সহ জঙ্গিপুর, রঘুনাথগঞ্জ, ফারাক্কা,লাগোয়া বিশালাকার পদ্মা ও ভাগীরথী অববাহিকার বসবাসকারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে । ফল স্বরূপ দিন আনা দিন খাওয়া মৎস্যজীবীদের রুজিতে পড়েছে টান।দিন কয়েক আগে উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের গঙ্গায় সারি দিয়ে মৃতদেহ ভাসতে দেখা গিয়েছে । অনুমান করা হচ্ছে, করোনায় আক্রান্ত মৃতদেহ সৎকার না করে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে ।এই ছবি গঙ্গা অববাহিকার মানুষদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
আরও পড়ুন, কোভিড সংক্রমণ কমলেও পিছু ছাড়ছে না মৃত্যু, ভ্যাকসিন দিতে ফোন করুন পুরসভার এই নম্বরে
ইতিমধ্যে জেলার লালগোলা ও সংলগ্ন, ভগবানগোলা,জিয়াগঞ্জ সদর ঘাট ,লালাবাগ সদর ঘাটে আর নিত্য স্নান যাত্রীদের দেখা মিলছে না । সুতরাং শুনশান গঙ্গার ঘাট গুলি । সাধারন মানুষের ধারনা উত্তর প্রদেশ থেকে ভেসে আসা বেওয়ারিশ লাশ গুলির কিছুটা বিহার প্রশাসন উদ্ধার করতে পারলেও বাকি লাশ ঝাড়খন্ড হয়ে বাংলার গঙ্গায় ঢুকে যেতে পারে ।ওই লাশ যাতে কোনও ভাবেই বাংলায় প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য মালদহের মানিকচক এলাকা দিয়ে প্রবাহিত গঙ্গায় অতন্দ্র প্রহরা শুরু করেছে সেখানকার পুলিশ ও প্রশাসন । এই খবর চাউর হতেই গঙ্গা স্নান বন্ধ করে দিয়েছেন এলাকার মানুষ ।এদিকে ভাগীরথী ও পদ্মার টাটকা মাছের জন্য যে বাঙালি হাপিত্যেশ করে অপেক্ষা করে থাকতেন এলাকার মতস্যজীবীদের পাড়ে আসার অপেক্ষায় কয়েকদিন যাবত সেই সব মানুষদেরও আর দেখা মিলছে না বলে অভিযোগ ।জেলায় ফারাক্কা থেকে গঙ্গা ভাগ হয়ে ডিয়ার ফরেস্ট হয়ে ফিডার ক্যানেলের মধ্যমে ভাগীরথী নাম নিয়ে বয়ে যাচ্ছে কলকাতা অভিমুখে আর রঘুনাথগঞ্জের গিরিয়া থেকে পদ্মা নাম নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ।ফলে ভারতের মধ্যে প্রবাহিত পদ্মা ও ভাগীরথীর মাছের কদরে এখন ভাটার টান ।
আরও পড়ুন, কলকাতায় ভয়াবহ ব্ল্য়াক ফাংগাসের থাবা, লাফিয়ে বাড়ল সংক্রমণ, মৃত ৩
এই ব্যাপারে মৎস্যজীবী উত্তম হালদার , জীবন সরকার বলেন , 'বাপ ঠাকুর দার হাত ধরে মাছ ধরার পেশার সঙ্গে যুক্ত হয়েছি ।জীবনে কোন দিন এমন হয় নি যে পদ্মা – গঙ্গার মাছের কদর মানুষের মধ্যে কমেছে । সেই মাছ এখন বিক্রি হচ্ছে না । তাই কদিন থেকে আর জলে নামিনি । এই অবস্থা চলতে থাকলে লক ডাউনের মাঝে ছেলে মেয়েদের না খেয়ে থাকতে হবে ।' এই ব্যাপারে লালগোলার বাসিন্দা রমজান শেখ , সুখদেব সরকার বলেন,'টিভিতে দেখলাম গঙ্গা তে শয়ে শয়ে লাশ ভাসছে । তারপর ওই জলের মাছ খেতে অরুচি হচ্ছে আবার ভয়ও লাগছে মাছ খেয়ে যদি করোনা তে ধরে ।তাই নদীর মাছ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি ।' অবশ্য এই নিয়ে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন লালবাগ মহকুমা শাসক সুদীপ ঘোষ ।তিনি বলেন ,'এখন পর্যন্ত আমাদের রাজ্যে দেহ ভেসে আসার খবর পাওয়া যায় নি ।'