জনসংখ্যার সবচেয়ে বেশি অংশকে টিকা দিয়েছে এই দেশ
এই পরিসংখ্যানে যে কোনও দেশের থেকে এগিয়ে তারা
তা সত্ত্বেও এক সপ্তাহে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা হল দ্বিগুণ
তাহলে কি করোনা জোয়ার আটকাতে পারছে না টিকা
তাদের জনসংখ্যা ১ লক্ষের সামান্য কম। জনসংখ্যা কম হওয়াতেই সম্ভবত সেশেলস-এর অধিকাংশ নাগরিকই ইতিমধ্য়েই করোনার টিকা পেয়ে গিয়েছেন। শতাংশের হিসাবে বিশ্বের অন্যান্য যে কোনও দেশের তুলনায় তারা বেশি ভ্যাকসিন দিয়েছে নাগরিকদের। কিন্তু, সেশেলস-এর ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে নতুন চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। আর এই পরিসংখ্যানে তৈরি হয়েছে নতুন আশঙ্কা, টিকাকরণ কি আদৌ করোনার জোয়ার আটকাতে সফল হবে?
এতদিন ধারণা ছিল, কোনও এলাকার জনসংখ্যার একটা বড় অংশকে টিকা দেওয়া গেলে, করোনা আর আগের গতিতে ছড়াতে পারবে না। জনসংখ্যার সবথেকে বেশি অংশকে টিকা দেওয়ায়, এইদিক থেকে একেবারে আদর্শ মডেল হতে পারত সেশেলস। কিন্তু, সোমবার আফ্রিকার পূর্ব উপকূলে অবস্থিত এই দ্বীপপুঞ্জের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, সেই দেশে বর্তমানে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর সংখ্যা ২,৮৮৬ জন, যা গত সপ্তাহের থেকে প্রায় দ্বিগুণ। সবথেকে বড় কথা চিকিৎসাধীনদের মধ্যে ৩৭ শতাংশই মানুষই ইতিমধ্য়েই করোনা ভ্যাকসিনের দুটি করে ডোজই পেয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ভ্যাকসিনেশন ব্যর্থ হবে কিনা, তা বলার এখনও সময় আসেনি। তারা এই বিষয়ে তথ্যাদির বিশদ মূল্যায়ন করছে।
পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে দারুণ জনপ্রিয় সেশেলস
সেশেলসে, টিকার সম্পূর্ণ ডোজ যারা পেয়েছেন, তাদের মধ্যে ৫৭ শতাংশকেই চিনা সিনোফার্ম-এর করোনা টিকা দেওয়া হয়েছে। আর বাকিদের অ্যাস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ডের বিকশিত এবং ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত কোভিশিল্ড দেওয়া হয়েছিল। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী টিকা পাওয়া কোভিড রোগীদের কারোর এখনও মৃত্যু হয়নি। গত সপ্তাহ থেকেই করোনা ঠেকাতে এই দ্বীপরাষ্ট্রে ফের বিধি-নিষেধ জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন - যুগান্তকারী, আমেরিকায় এবার করোনা টিকা পাবে শিশুরাও - দৌড়ে রয়েছে কোভিশিল্ডও
আরও পড়ুন - কিছুটা কমল করোনার দাপট, স্বস্তিতে মুম্বই'ও - 'ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট' নিয়ে উদ্বেগে WHO
আরও পড়ুন - ভয়াবহ - জল পেলেন না কোভিড আক্রান্ত স্বামী, হাসপাতালেই যৌন হয়রানির শিকার স্ত্রী
তবে করোনার ঠিক কোন ভ্যারিয়েন্ট এই ভয়ঙ্করভাবে ছড়াচ্ছে সেশেলস-এ, তা এখনও জানা যায়নি। কারণ জেনেটিক সিকোয়েন্সিং তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। তবে, সেশেলসে গত ফেব্রুয়ারি মাসে, গত বছরের শেষের দিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার যে রূপটিকে চিহ্নিত করেছিল, সেই বি.৩.৩৫১ বা দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গিয়েছিল। আগের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছিল কোভিশিল্ড দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্যারিয়েন্ট-এর বিরুদ্ধে কম কার্যকর, যে কারণে দক্ষিণ আফ্রিকাও কোভিশিল্ড কেনার পরিকল্পনা বাতিল করেছে। মনে করা হচ্ছে, সেই একই ভ্যারিয়েন্ট বর্তমানে সেশেলস-এ তীব্র গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে।
তবে শুধু সেশেলস নয়, আরেক দ্বীপরাষ্ট্র ও সমৃদ্ধ পর্যটনস্থল মালদ্বীপে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে মোট পরীক্ষার প্রায় ৬০ শতাংশ পজিটিভ ধরা পড়ছে। সেখানেও নানা বিধি নিষেধ জারি করেছে সরকার। এই দ্বীপপুঞ্জে আসতে গেলে হয় টিকা সম্পূর্ণ ডোজ নেওয়া থাকতে হবে, আর নাহলে যাওয়ার চার দিন কোভিড-১৯ পরীক্ষা করিয়ে নেগেটিভ রেজাল্ট দেখাতে হবে।