৫ বছরের মেয়েটিকে বারবার ছুরির কোপ দিয়ে খুন করল তার মা, বাবা বলল করোনাই এর কারণ


 ৫ বছরের মেয়েকে ১৫ বার ছুরির আঘাত

মায়ের হাতেই খুন ৫ বছরের ছোট্ট মেয়ে

কোভিডের আতঙ্কেই এমনটা ঘটল

একইসঙ্গে মর্মান্তিক এবং শিউরে ওঠার মতো এই ঘটনা

amartya lahiri | Published : Jun 25, 2021 2:54 PM IST / Updated: Jul 05 2021, 05:10 PM IST

একইসঙ্গে মর্মান্তিক এবং শিউরে ওঠার মতো ঘটনা। ৫ বছরের ফুটফুটে কন্যা, তাকেই ১৫ বার ছুরি দিয়ে আঘাত করেছিল তার মা। তারপর নিজেকেও ছুরি দিয়ে আঘাত করে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন ওই অনাবাসী ভারতীয় মহিলা। তিনি নিজে প্রাণে বেঁচে গেলেও, মেয়েটি বাঁচেনি। ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২০ সালের ৩০ জুন। বৃহস্পতিবার, লন্ডনের এক ফৌজদারি আদালতে নিজের অপরাধ স্বীকার করে নিলেন সুধা শিবনাথম। তবে, এই ভয়ানক অপরাধের পিছনে রয়েছে এক অদ্ভূত এবং অসহায় কাহিনি।  

২০০৬ সালে সুগন্থন শিবনাথম-এর সঙ্গে বিবাহের পর লন্ডনে এসেছিলেন সুধা। থাকতেন মিচাম এলাকার মনার্ক প্যারেডের এক ফ্ল্যাটে।বেশ সুখেই সংসার করছিলেন দুজনে। কিন্তু, করোনা মহামারি আসার প্রায় এক বছর আগে থেকেই এক রহস্যজনক অসুস্থতায় ভুগছিলেন সুধা। তাঁর খালি মনে হতো, তিনি গুরুতর অসুস্থ এবং শীঘ্রই মারা যাবেন। করোনা মহামারি আসার পর, বিশেষ করে ব্রিটেনে লকডাউন জারির পর, তাঁর সেই সমস্যা আরও বেড়েছিল। আর তারই পরিণতি গত ৩০ জুনের ট্র্যাজেডি।

কী ঘটেছিল ওইদিন? সুগন্থন শিবনাথম জানিয়েছেন, সেদিন তাঁকে কাজে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন সুধা। বলেছিলেন, বন্ধুবান্ধবদের ফোন করে জানিয়ে দিতে যে তিনি গুরুতর অসুস্থ। কিন্তু, তিনি প্রতিদিনের মতো কাজে গিয়েছিলেন। আর সেখানেই ফোন করে তাঁদের প্রতিবেশীরা প্রথম তাঁকে খবর দিয়েছিল যে তাঁর স্ত্রী তাঁদের কন্যাকে হত্যা করেছে। বিকেল চারটে নাগাদ প্রতিবেশীরা তাঁদের ফ্ল্যাটে গিয়ে সুধা শিবনাথমকে, পেটে ছুরিবিদ্ধ অবস্থায় পেয়েছিল। আর, বেজরুমের বিছানায় শুয়ে ছিল তাঁদের কন্যা সায়গী। তার ঘাড়ে, বুকে ও পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল। দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসা চলার পর সুস্থ হন সুধা, কিন্তু সায়গী বাঁচেনি।

আদালতে সুধা জানিয়েছে তাঁর করোনা হয়েছে এবং তিনি মারা যাবেন, তারপর তাঁদের ছোট্ট মেয়েটাকে কে দেখবে - এই উদ্বেগেই তিনি সায়গীকে বারবার ছুরির আঘাত করেছিলেন। তবে হত্য়ার অভিযোগ তিনি মানেননি। সুগন্থন বলেছেন, ওই ঘটনার পর থেকে তাঁর আর স্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়নি। তবে তিনিও মনে করেন এই ঘটনার জন্য তাঁর স্ত্রী দায়ী নন। কারণ, তিনি সুস্থ থাকলে তাঁদের মেয়েকে তিনি কখনই হত্যা করতে পারতেন না। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরাও জানিয়েছেন আগে থেকেই মানসিকভাবে অসুস্থ সুধা শিবনাথমকে কোভিড মহামারি এবং লকডাউনের জন্য সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং মানসিক চাপ তাঁকে গুরুতর সমস্যার দিকে ঠেলে দিয়েছিল।

সুধার  মানসিক অবস্থা বিচার করে তাঁকে কারাগারে নয়, তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Share this article
click me!